বিশেষ প্রতিবেদক
নারায়ণগঞ্জে চলমান করোনা পরিস্থিতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের মত বন্ধ রয়েছে আদালতের কার্যক্রম। দিনে দিনে বিভিন্ন মামলার জট কেবল বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন মামলা ও অপরাধের সাথে জড়িত হওয়া আসামীদের সংখ্যাও বেড়েছে কারাগারে। কিন্তু আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় জামিনযোগ্য আসামীরা বের হতে পারছে না কারাগার থেকে। একই ভাবে মামলা জটে বিচারপ্রার্থীদেরও সময় গড়াচ্ছে।
গত ২৬ মার্চ করোনার প্রকোপ ঠেকাতে সাধারন ছুটি ঘোষণার পর থেকেই বন্ধ হয়ে যায় আদালতের কার্যক্রম। সবশেষ ৫ মে সে ছুটি শেষ হবার কথা থাকলেও নতুন করে ছুটি বাড়ানোয় আগামী ১৬ই মে পর্যন্ত আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে এমনটাই ভাবছেন সাধারন আইনজীবীরা। তবে কোন কারনে ছুটি আবারও বাড়ানো হলে সেক্ষেত্রে ঈদের আগে সীমিত আকারে আদালতের কার্যক্রম চালু করে জরুরী মামলা পরিচালনার কথা উঠছে আইনজীবীদের মাঝে। তাদের মতে দীর্ঘ বন্ধে কিছু কিছু মামলার কার্যক্রম আটকে থাকলে বড় ধরনের বিপাকে পড়তে হবে বিচারপ্রার্থীদের।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, সরকারি ছুটির আগে অনেকেই গ্রেফতার হয়েছে। তাদের সকলেই যে খুব বড় আসামী এমন নয়। অনেকেই জামিনযোগ্য আসামী রয়েছেন। সেদিক বিবেচনায় তারা লঘু পাপে গুরুদ- পাচ্ছে। যেহেতু গার্মেন্টস, মার্কেট, মসজিদ সহ সকল কিছুই খুলে দেয়া হয়েছে সেদিক বিবেচনায় আদালতের কার্যক্রম বন্ধ রাখা ঠিক হচ্ছে না। আদালত সীমিত আকারে খুলে দিয়ে মানুষকে সঠিক বিচার পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া প্রয়োজন। কোন কারনে যদি ছুটি আরও বাড়ানো হয় তাহলে বিচারপ্রার্থীদের আরও ভোগান্তি পোহাতে হবে।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা দায়রা ও জজ কোর্টের প্রসিকিউটর এডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন বলেন, সহসাই আদালত খোলার কোন সিদ্ধান্ত আমরা বলতে পারছি না। এসকল ক্ষেত্রে প্রজ্ঞাপন যেহেতু হাইকোর্ট থেকে আসে সেহেতু ১৭ তারিখের আগে আদালত খোলার সম্ভাবনা নেই। ১৭ তারিখ আদালত খুললেও ২১ তারিখ আবার বন্ধ হয়ে যাবে সরকারি ছুটির কারনে।
তবে দীর্ঘ বন্ধের কারনে বিচারপ্রার্থীদের সমস্যা হবে কিনা জানতে চাইলে বলেন, সাধারন জামিনের ক্ষেত্রে খুব একটা সমস্যা হবে না। তবে বড় বড় মামলা গুলোর শিডিউল নতুন করে সাজাতে হবে। একসাথে অনেক মামলার চাপ পড়বে। তখন বেশ বেগ পেতে হবে আমাদের। করোনার কারনে বৃহৎ স্বার্থে এটুকু কষ্ট আমাদের স্বীকার করতেই হবে। তবে মাঝখানে সপ্তাহে ২/৩ দিনের জন্য সীমিত আকারে আদালত পরিচালনার কথা উঠলেও কিছু আইনজীবীদের নিরাপত্তাজনিত কারন তুলে ধরে বিরোধীতা করায় সেই প্রস্তাবটি কার্যকর করা হয়নি।