আজ শনিবার, ২৫শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নারায়ণগঞ্জ সিটির পৌনে ৫লাখ ভোটার স্মার্ট কার্ড পাচ্ছেন মধ্য নভেম্বরে

নিজস্ব প্রতিনিধি: জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডির উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর স্মার্ট কার্ড বিতরণ নারায়ণগঞ্জেও শুরু হতে যাচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডের পৌনে পাঁচ লাখ ভোটার স্মার্টকার্ড পেতে যাচ্ছেন আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝিতে।

জানা গেছে, জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর স্মার্ট কার্ড। মেশিন-রিডেবল এই কার্ডের মাইক্রোচিপে একজন নাগরিকের ৩২টি মৌলিক তথ্য সংরক্ষিত থাকে। বর্তমানে, পাসপোর্ট, ব্যাংকিং, ট্রেড লাইসেন্স, শেয়ার হস্তান্তরসহ ২২টি সেবা খাতে এ কার্ডের প্রয়োজন হয়। নির্দিষ্ট দিনে স্বশরীরে নির্দিষ্ট স্থানে হাজির হয়ে আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের মণির ছবি দিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করে স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করা যাবে।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের দ্বিতীয় নির্বাচনে ২৭ ওয়ার্ডের মোট ভোটার ছিল ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৩১জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৬২জন ও মহিলা ভোটার ২ লাখ ৩৫ হাজার ২৬৯ জন। সিটির ২৭টি ওয়ার্ডের ভোটাররা পাবেন স্মার্ট কার্ড।

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, আগামী ১৯ নভেম্বর থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১ থেকে ১৮ নং ওয়ার্ডের ভোটারদের মধ্যে স্মার্টকার্ড বিতরণ শুরু হবে।

তবে নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন অফিসার আতাউর রহমান নিউজ নারায়ণগঞ্জকে জানান, নভেম্বরের মাঝামাঝিতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডে স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে। সম্ভাব্য একটা তারিখ শুনেছি ১৯ নভেম্বর তবে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের লিখিত কোন নির্দেশনা এখনো পাইনি।

তিনি আরো জানান, গেল সিটি নির্বাচনে যারা ভোট দিয়েছেন তারা সবাই স্মার্ট কার্ড হাতে পাবে বলে আমি মৌখিকভাবে জানতে পেরেছি। প্রথমদিকে যেসকল ওয়ার্ডে ভোটার কম সেসকল ওয়ার্ডে তারা স্মার্টকার্ড বিতরণ শুরু করবেন। এতে করে যারা স্মার্ট কার্ড বিতরণ কর্মসূচীতে থাকবেন তাদের অভিজ্ঞতা অর্জন হবে যেটা বেশী ভোটারদের ওয়ার্ডে বিতরণের সময় কাজে লাগবে। স্মার্ট কার্ড বিতরণে তাদের ৩টি টিম কাজ করবে বলেও জানান। স্মার্ট কার্ড দেয়ার সময়ে একজন ভোটারের দুই হাতের দশ আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের মণির (আইরিশ) ছবি সংগ্রহ করা হবে। স্মার্ট কার্ড বিতরণে তাদের ৩টি টিম কাজ করবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্মার্ট কার্ড প্রস্তুত ও বিতরণের জন্য ফ্রান্সের অবার্থুর টেকনোলজিসের সঙ্গে ২০১৪ সালে ৮০০ কোটি টাকার চুক্তি করে ইসি। তাদের সঙ্গে চুক্তি ছিল ৯ কোটি কার্ডের। দফায় দফায় পিছিয়ে সেই কার্ড বিতরণ শুরু হয় ২০১৬ সালে। ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের মেয়াদ দেড় বছর বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া এই কার্ড নাগরিকদের মধ্যে বিতরণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৮০ কোটি টাকা। সময়মতো কার্ড বিতরণ না হলে সেগুলো বিতরণের জন্য নতুন করে আরও অর্থ ব্যয় করতে হবে কমিশনকে। সম্প্রতি ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ গণমাধ্যমকে জানান, বর্তমানে ৭ কোটি ৭৫ লাখ ব্ল্যাংক কার্ড রয়েছে। সেগুলো প্রিন্ট করার পাশাপাশি ভোটারের তথ্য সন্নিবেশের (পার্সোনালাইজেশন) কাজ চলছে। নয় কোটি নাগরিকের মধ্যে এ পর্যন্ত এক কোটি ২৪ লাখ ১০ হাজার নাগরিকের জন্য স্মার্ট কার্ড উৎপাদন ও পার্সোনালাইজেশনের কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে ১ কোটি ৯ লাখ ৮০ হাজার কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। লক্ষ্য পূরণ করতে হলে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাকি সাত কোটি ৭৫ লাখ ৯০ হাজার কার্ড উৎপাদন ও বিতরণ করতে হবে। এছাড়া চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে প্রায় এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ভোটার তালিকা প্রস্তুত এবং জাতীয় পরিচিতি সেবা প্রদানে টেকসই অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক এক নতুন প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ ছাড়া প্রকল্পটি অনুমোদন পেলেই বছর শেষে নতুন প্রকল্পের অধীনে স্মার্ট কার্ড বিতরণ চলবে।