সংবাদচর্চা রির্পোট:
গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা নামটা বিসিবির একজন ক্যারিশমাটিক নেতার নাম। যিনি আসেন আর দলকে রাঙিয়ে দেন জয়ের আনন্দে। হাজারো হতাশার মাঝেও তার উপস্থিতিতেই বদলে যায় বাংলাদেশ। তিনি খেলেন না কিন্তু খেলোয়াড়দের খেলাতে উৎসাহ উদ্দীপনা দেন এবং দল জেতান।
টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশের কঠিন স্মৃতি ভুলে রঙিন পোশাকে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোটা ছিলো অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশের সেই চ্যালেঞ্জে আশার আলো দেখালেন বিসিবির পরিচালক গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা। হতাশার পরাজয়ে ডুবে থাকা দলটিকে আবারও টেনে তুললেন পরামর্শে এবং দক্ষ নেতৃত্বে। তার উপস্থিতির ফ্যাক্টরটাই উজ্জ্বীবিত করে রাখলো পুরো টাইগার শিবিরকে।
এই সিরিজে তাকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড অবজার্ভার হিসেবে পাঠায়। কিন্তু টেস্ট সিরিজে বাজে পারফরমেন্সে নেতিয়ে পড়া দলকে মনোবল ফেরানোর তাগিদকেই বেশি অগ্রাধিকার দেন বিসিবির পরিচালক। দলে এসেই বদলে দেন খেলোয়াড়দের পারফমেন্স।
রঙিন পোশাকে জয়ে ফেরার দিন মাঠে নামার আগে খেলোয়াড়দের বলেন, তোমাদের দিকে ১৮ কোটি বাঙালি তাকিয়ে আছে । তোমাদের হতাশ হওয়া যাবে না । দেশের জন্য তোমাদের সর্বোচ্চ খেলাটা উপহার দিতে হবে। পরিচালকের কথারই প্রতিফলন দেখান ক্রিকেটাররা।
গোলাম মর্তুজা পাপ্পা ব্যাটিং বোলিং ফিল্ডিং কোচের সাথে পরামর্শ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এর বিপক্ষে প্রথম ওয়ান্ডেতে প্রথম একাদশ ঘোষণা করে।
ব্যাট-বলে পুরো দলের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স । তামিমের বড় সেঞ্চুরি, সাকিবের ৯৭ রান, মুশফিকের ১১ বলে ৩০ রান। তামিম ও সাকিব দ্বিতীয় উইকেটে যোগ করেন ২০৭ রান। এটা বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি। বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে এটা দ্বিতীয়বারের মতো দুই শ পার হওয়া জুটি। এর আগে সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ ২২৪ রান করেছিলেন পঞ্চম উইকেট জুটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। গায়েনার মাঠে ২০৭ রানের জুটি এটিই প্রথম সর্বোচ্চ রানের জুটি।
আর বোলিংয়ে অধিনায়ক মাশরাফি ১০ ওভারে ১ মেডেনসহ মাত্র ৩৭ রানে নেন ৪ উইকেট। সবকিছু মিলিয়ে প্রথম ওয়ানডেতে স্বাগতিকদের ৪৮ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।
কিন্তু দুঃস্বপ্নের মতো কাটানো টেস্ট সিরিজে হারের পর হতাশার সাগরে ডুবে ছিল টাইগার শিবির। সব মিলিয়ে অনেকটা ছন্নছাড়া অবস্থাতেই সফরে ছিল সাকিবের বাংলাদেশ। সেই দলটিকে আলোর পথে আনাটা সহজ ছিলো না।
কিন্তু এই কঠিন কাজটা করার সাহস একমাত্র গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পার ছাড়া কার আছে। তিনি অবজারভার হিসেবে এসে তা বাস্তবে প্রমাণ করলেন। তার দায়িত্বই যেন পুরো দলকে উজ্জ্বীবিত করে রাখা। দল বদলে যাওয়ার দিনে গোলাম মর্তুজার উৎসাহ উদ্দীপনা নজড় কেড়েছে সবার।
গোলাম মর্তুজা পাপ্পার উৎসাহ উদ্দীপনায় মাশরাফি ছয় মাস পর বল হাতে এসেই প্রথম শিকারে এভিন লুইসকে আউট করেন। তারপর জ্যাসন হোল্ডার এবং আন্দ্রো রাসেল, অ্যাসলে নার্সের উইকেট নেন। তাইতো ম্যাচ শেষে ধারাভাষ্যকারও বলেন বিসিবি পরিচালক গোলাম মর্তুজা পাপ্পার প্রবল উৎসাহ দলকে উজ্জ্বীবিত করে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে গেছে।
ম্যাচ শেষে গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা দৈনিক সংবাদচর্চাকে বলেন,বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড আমাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে অবজার্ভার হিসেবে পাঠিয়েছে। আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজে এসে ব্যাটিং ফিল্ডিং বোলিং কোচ এবং খেলোয়ারদের সাথে মিটিং করেছি। যার ফলে টাইগার বাহিনী ভালো খেলা উপহার দিয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এর বিপক্ষে বাংলাদেশ প্রথম ওয়ান্ডে জয়ী হওয়ায় সকল ক্রিকেটারদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। এ জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
উল্লেখ্য যে নারায়ণগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য রণাঙ্গণের খেতাব প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা বিশিষ্ট শিল্পপতি গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক এর পুত্র বিসিবির পরিচালক গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা। তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছে। গত কাল প্রথম ওয়ান্ডেতে ম্যাচ সেরা তামিম ইকবালের হাতে পুরস্কার তুলে দেন গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা। তিনি ১০ দিন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অবস্থান করবেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। দক্ষ এবং মেধাবী খেলোয়াড় বাছায়ে গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।