সৈয়দ মোহাম্মদ রিফাত
‘কাদিয়ানী কাদিয়ানী কাফের কাফের’, ‘নবীর পরে নবী নাই সংসদে আইন চাই’, ‘নবী বিরোধী বললে কথা থাকবে না আর গলায় মাথা’ এমন স্লোগানে মুখরিত পুরো নারায়ণগঞ্জের রাজপথ। লাখো জনতার পদচারণায় মুখর নারায়ণগঞ্জের প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়া। চাষাঢ়া থেকে শুরু করে পঞ্চবটি পর্যন্ত রাস্তায় তৌহিদি জনতার ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এদিকে ফতুল্লার ইসদাইর, বুড়ির দোকান, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় অবস্থান করেছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। তাদের একটাই দাবি, কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা করা হোক। অন্যথায় তারা ঘরে ফিরে যাবে না।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) যোহরের নামাজের পর থেকেই নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচী অনুযায়ী চারদিক থেকে মিছিল নিয়ে আসেন মুসল্লীরা। তাদের প্রত্যেকের মুখে ছিল কাদিয়ানী বিরোধি মিছিল। হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন আর ব্যানার। মাথায় ছিল স্লোগান সম্বলিত কাপড়। যুবক থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত অংশ নিয়েছে কাদিয়ানী বিরোধী এই মহাসমাবেশে। চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে চাটাই বিছিয়ে বসে বক্তাদের বক্তব্য শোনেন তারা। এদিকে ফতুল্লা ইসদাইরের সামসুজ্জোহা স্টেডিয়াম, ওসমানী পৌর স্টেডিয়াম ও এর আশপাশের এলাকা গুলোতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ ছিল মানুষের উপস্থিতি।
পৃথিবীর শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর ইজ্জত রক্ষার এই মহাসমাবেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপি সহ সকল রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
তাদের সকলের দাবি, যারা নবীকে মানবে না, ইসলামকে মানবে না তারা নিজেদের মুসলমান বলে দাবি করতে পারবে না। যারা বলে বেড়ায় নবীর পরে নবী আসবে তারা নিজেদের মুসলমান দাবি করতে পারবে না। কাদিয়ানীরা ইসলামের দুশমন, এরা অমুসলিম। সুতরাং কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। আগামী তিন মাসের মধ্যে সংসদের আইন পাশ করতে হবে যে নবীর পরে আর কোন নবী নাই, কাদিয়ানীরা অমুসলিম।
তৌহিদা জনতারা জানান, যে যার নিজেদের ধর্ম পালন করবে। এতে আমাদের কোন সমস্যা নাই। হিন্দুরা হিন্দু ধর্ম, খ্রিষ্টানরা খ্রীষ্ট ধর্ম যার যা ধর্ম, যার যা বিশ্বাস তারা তাই পালন করবে। আমরা কাএক বাধা দিবো না বরং তাদের নিরাপত্তা দিবো। কিন্তু যারা দাবি করে আমাদের নবীর পরে আবার নবী আসবে। যারা কালেমার বিরোধিতা করে তারা নিজেরা মুসিলম দাবি করতে পারবে না। তারা অন্য কোন নাম দিয়ে নিজেদের কাজ পরিচালনা করবে। কিন্তু নিজেকে মুসলিম দাবি করে ইসলামের বিরোধীতা করবে তা মেনে নেয়া হবে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জোর দাবি জানিয়ে তারা বলেন, অবিলম্বে সংসদে আইন পাশ করার ব্যবস্থা করুন। আমরা নিজেরাই পারি কাদিয়ানীদের অস্তিত্ব বাংলার জমিন থেকে বিলিন করে দিতে। কিন্তু আমরা আইন নিজের হাতে তুলে নিতে চাই না। তাই সরকারের কাছে আমাদের একটাই দাবি। আর সেটা হলো কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা করে দিন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা আহমদ শফী, জেলা হেফাজত ইসলামের সভাপতি মাও. আবদুল আওয়াল,সাধারণ সম্পাদক মাও.ফেরদাউসুর রহমান, কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের শ্রম কল্যান ও উন্নয়ন সম্পাদক কাওছার আহমেদ পলাশ, খতমে নবুয়তের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ আলী কাসেমী, নাসিক কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খোরশেদ, খেলাফত আন্দোলনের আমির মাও, মজিবুর রহমান, হাজী শরীত উল্লাহর উত্তর শরী মাও.হানজালা,নারায়ণগঞ্জ মহানগর ইসলামি আন্দোলনের সভাপতি মুফতী মাসুম বিল্লাহ, মাও. ওবায়দুর রহমান প্রমূখ।
এসএমআর/এসএমআর