নবকুমার:
সার্বিয়াকে ২-০ গোলে গুড়িয়ে দিয়েছে ব্রাজিল। পুরো ছন্দে ফিরেছে তিতের শিষ্যরা। গ্রুপ ই এর সেরা হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে চলে গেছে হলুদ জার্সির দলটি। আগামী ২ জুলাই রাত ৮ টায় রাশিয়ার সামারায় ব্রাজিল-মেক্সিকোর মুখোমুখি হবে।
তবে সার্বিয়ার বিপক্ষে ব্রাজিলের শুরুটা দুঃস্বপ্নের মতো বলা যায়। দলের অন্যতম সেরা তারকা মার্সেলো প্রথমার্ধের মাত্র ১০ মিনিটে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন। আর স্বস্তির মুহূর্ত ৩৬ মিনিটে পাউলিনগোর গোল।
ব্রাজিল পাউলিনহোর ওই গোলে ১-০ গোলের লিড নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করেছে। এরপর ম্যাচের ৬৮ মিনিটে থিয়াগো সিলভার হেড থেকে ২-০ গোলের জয় নিশ্চিত করে ব্রাজিল। তবে ব্রাজিল-সার্বিয়া দুর্দান্ত ফুটবল খেলেছে এ ম্যাচে। দারুণ আক্রমণে ব্রাজিল যেমন সার্বিয়াকে কাঁপন ধরিয়েছে। তেমনি সার্বিয়া বেশ কিছু গোছালো পাসে আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করেছে।
দ্বিতীয়ার্ধে ভালো কিছু আক্রমণও করেছে সার্বিয়া কিন্তু ব্রাজিল এ ম্যাচে বুঝিয়ে দিয়েছে কত শক্ত আক্রমণ নিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপে এসেছে তারা। ব্রাজিল অবশ্য গোল ব্যবধান বাড়ানোর আরও কিছু দারুণ সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু নেইমার সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারেননি। ম্যাচের ২৫ মিনিটে নেইমার গোল করে দলকে এগিয়ে নেওয়ার দারুণ এক সুযোগ পান। কিন্তু সার্বিয়া গোলরক্ষক এক হাত দিয়ে ফিরিয়ে দেন নেইমারের শট।
প্রথমার্ধের শেষে ৪৭ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক বাঁকানো শট নেন নেইমার। কিন্তু গোলের ওপর দিয়ে যায় তা। এরপর পাউলিনগোর গোলে ১-০ গোলের লিড নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে ব্রাজিল।দ্বিতীয়ার্ধের ৫৫ থেকে ৭০ মিনিট টানা আক্রমণ করে গেছে সার্বিয়া। বেশ ঘাম ঝরিয়েছে ব্রাজিলের। তবে রাশিয়া বিশ্বকাপে উচ্চতায় সবচেয়ে লম্বা দলের বিপক্ষে ৬৮ মিনিটে নেইমারের নেওয়া কর্ণার থেকে হেডে গোল করে ব্যবধান বাড়ায় ব্রাজিল।
তার আগে ৫৬ মিনিটে দারুণ এক ক্রস দেন লেজিক। ৫৭ মিনিটে আবার কর্ণার থেকে গোল করার সুযোগ পায় সার্বিয়া। ৬১ মিনিটে ম্যাচের সেরা সুযোগটি পায় সার্বিয়া। কিন্তু ব্রাজিল গোলরক্ষক অ্যালিসন দারুণ সেভ করেন। ম্যাচের ৬৩ এবং ৬৫ মিনিটে আরও দুটি সুযোগ তৈরি করে তারা।
এরপর ম্যাচের ৭১ মিনিটে ফিলিপে লুইজের বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া জোরালো শটটি ঠেকান সার্বিয়া গোলরক্ষক। ৮২ মিনিটে নেইমার আবার গোল করার সুযোগ পান। কিন্তু গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল দিতে পারেননি তিনি। ৮৮ মিনিটে নেইমারকে ভালো একটা বল দেন ফার্নান্দিনহো। কিন্তু এবারও ফাঁকায় পেয়ে গোলরক্ষকের গায়ে মেরে বসেন নেইমার। ম্যাচের ৯৩ মিনিটে নেইমার শেষ বাঁশি বাজার আগে জেসুসের পাস ধরে গোল করার শেষ সুযোগটি পান। কিন্তু ব্যবধান বাড়াতে পারেননি তিনি। দলের জয়েই খুশি হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।
ব্রাজিল কোচ অবশ্য এ ম্যাচে তার রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলার জন্য সমালোচিত হতে পারেন। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে সার্বিয়ার আক্রমণ ঠেকাতে রক্ষণেই বেশি সময় কাটিয়েছে ব্রাজিল। ব্রাজিলের ক্লাবে কোচিং করানোর সময় কোচ রক্ষণাত্মক কৌশলের জন্য সমালোচিত হন। কিন্তু ব্রাজিলের দায়িত্ব নিয়ে দলকে আক্রমণ করেই খেলিয়েছেন তিনি। আর দ্বিতীয় গোলের লিড নেওয়ার পর তো ব্রাজিলে আক্রমণ করা থেকে মনোযোগই সরিয়ে নেয়। ছোট পাসে বেশ কিছু প্রতি আক্রমণ অবশ্য করেছে ব্রাজিল। কিন্তু অন্য খেলোয়াড়দের মন্থর গতি এবং নেইমারের ভুলে তা থেকে গোল পায়নি সেলেকাওরা।
‘ই’ গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ায় ব্রাজিল মুখোমুখি হবে ‘এফ’ গ্রুপের রার্নাসআপ মেক্সিকোর। এছাড়া ব্রাজিল গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় সেরা হয়ে নকআউট পর্বে যাওয়া সুইজারল্যান্ড খেলবে ‘এফ’ গ্রুফ সেরা সুইডেনের।