আজ শনিবার, ২৫শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

জোড়া খুনে ফেঁসে যাচ্ছেন বিএনপির মজিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক: নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার কাশীপুরে ডাবল মার্ডারের ঘটনায় ফেঁসে যাচ্ছেন মহানগর বিএনপির উপদেষ্টা বিএনপি নেতা এম এ মজিদ।

জোড়া খুনের ঘটনায় তাঁর নির্দেশনা ছিল স্বীকার করেছেন মামলার এজাহারভুক্ত একজন আসামী। আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে ওই ঘটনারও বর্ণনা করেন তিনি।

সোমবার সকালে জোড়া খুনের ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করা হয় যাদের মধ্যে এজাহারভুক্ত মাহবুব (২৪) ওই জবানবন্দী প্রদান করে। একই সঙ্গে সন্দেহভাজন হিসেবে নিজামউদ্দিন রুবেল (৩৫) নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয় যিনি এজাহারভুক্ত না।

মামলার তদন্তকারী অফিসার ডিবির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ রানা জানান, এর আগে আবুলকে গ্রেফতারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুইজনকে বাবুরাইল এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মাহবুব (৩৪) এজাহারভুক্ত ও নিজামুদ্দিন রুবেল (৩৫) সন্দেহভাজন। তাদের মধ্যে একজন মাহবুব বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। এতে সে স্বীকার করেছে বিএনপি নেতা এম এ মজিদের নির্দেশেই তারা হত্যা ও পরে লুটপাট করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান, জবানবন্দীতে মাহবুব স্বীকার করেছে, এলাকার প্রভাব বিস্তার নিয়ে দুটি গ্রুপ হয়েছিল। নিহত মিল্টনের গ্রুপটি আর আগের মত মজিদের কথা শুনতো না। এসব কারণে তিনি মিমাংসা করতে ব্যর্থ হয়েই মিল্টনকে হত্যার নির্দেশনা দেন। ১২ অক্টোবর রাতে শালিসী বৈঠকে উভয় পক্ষকে শান্ত করতে ব্যর্থ হন মজিদ। পরে তিনিই হত্যার নির্দেশ দেন। হত্যা শেষে যেন লাশ পুড়ে ফেলা হয় সেজন্য আগুন দেওয়ার কথাও বলেন। কথামত হামলাকারীরা ওই কাজটিও সারেন। মিল্টন ও পারভেজ সেখানে রাসেলের গ্যারেজে বসা ছিল। দুইজনকে কুপিয়ে হত্যার পর সেখানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু আগুন মিল্টন ও তার সহযোগি পারভেজ পর্যন্ত পৌছানোর আগেই এলাকাবাসী সে আগুন নিভিয়ে ফেলে।

নিহত পরিবারগুলোর পক্ষে মামলা না হওয়ায় ১৪ অক্টোবর দুপুরে ফতুল্লা মডেল থানার এস আই মোজাহারুল ইসলাম বাদী হয়ে ২২জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১২৫জনকে আসামী মামলাটি দায়ের করেন। এখন পর্যন্ত মামলায় ৫জনকে গ্রেপ্তার হয়েছেন।

মামলায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির উপদেষ্টা ও বিলুপ্ত শহর কমিটির সহ সভাপতি এম এ মজিদ ও তার ভাই বিলুপ্ত শহর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান আহমেদের নাম উল্লেখ করে বলা হয়, হত্যাকান্ডের ঘটনায় তাদের ইন্ধন থাকতে পারে।

১২ অক্টোবর রাতে কাশীপুরের হোসাইনি নগর এলাকাতে একটি রিকশার গ্যারেজে সশস্ত্র হামলাকারীরা কুপিয়ে তুহিন হাওলাদার মিল্টন (৪০) ও পারভেজ আহমেদ (৩৫) নামে দুইজনকে হত্যা করা হয়।

আসামীরা হলো এক নং বাবুরাইলের শুক্কুর মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া জয়নাল আবেদীনের ছেলে জাহাঙ্গীর বেপারী (৪০), ১নং বাবুরাইল তারা মসজিদ এলাকার কাজল মিয়ার ছেলে বাপ্পী (২৮), রবিন (৩০), রকি (২৮), ভূইয়াপাড়া এলাকার মজনু মিয়ার ছেলে আমান (৩২), বাবুরাইল শেষমাথা এলাকার খোকা মিয়ার ছেলে শহিদ (৩০), বাবুরাইল তারা মসজিদ এলাকার আসলাম (৫০), বাবুরাইল ঋষিপাড়া এলাকার মৃত জাকিরের ছেলে মাহাবুব (৩০), বিএনপি নেতা হাসান আহমেদের ভাতিজা শিপলু (৩০) ও রাসেল (৩৩), বাবুরাইল এলাকার মুক্তা (২৮), পাইকপাড়া জিমখানা ডিমের দোকান এলাকার শরীফ (৩৩), বাবুরাইলের রানা (২৮), বাবুরাইলের কিরণ (৩০), মানিক (৩০), বাবুরাইলের আবদুল মান্নানের ছেলে ফয়সাল (২৬), বন্দর এলাকার রাব্বি (৩০), ১নং বাবুরাইলের নিলু সরদারের ছেলে সোহাগ (৩২), বাবুরাইল শেষমাথা এলাকার রাকিব (২৭), বাবুরাইল ঋষিপাড়া এলাকার সিরাজ মিয়ার ছেলে রাজন (৩০), বাবুরাইল এলাকার রিক্সা আবুল (৩৫), একই এলাকার ফরহাদ (৫২) সহ অজ্ঞাত আরো ১শ থেকে ১২৫ জন।