আজ সোমবার, ২০শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

জিডির টাকারও ভাগ নেন ওসি সাত্তার!

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : জিডি করতে সাধারণ মানুষ আসুক আর নাই আসুক প্রতিদিন ওসি’র দেওয়া নাম্বারে বিকাশ করতে হবে ১ হাজার টাকা। প্রতিদিন সন্ধ্যার পরই ওসি’র বডিগার্ডকে দিয়ে একটি স্লিপের মধ্যে লেখা মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়, ডিউটি অফিসারকে। রাত ৮টার মধ্যেই ওসি’র দেওয়া নাম্বারে পাঠিয়ে দিতে হয় ১ হাজার টাকা।

গত নভেম্বর মাস থেকে এ নিয়ম চালু করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ ওসি আব্দুর সাত্তার। তবে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ওসি আব্দুর সাত্তার।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) সরেজমিনে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় গিয়ে দেখা গেল এএসআই মলিন মোল্লা ডিউটি অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এসময় মোঃ আনিছুর রহমান নামে এক যুবক আসছেন তার ন্যাশনাল আইডি কার্ড হারিয়ে গেছে, তাই জিডি করতে হবে। ডিউটি অফিসার এএসআই মলিন মোল্লা বললেন, ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি সাথে এনেছেন। এসময় ভূক্তভোগী আনিছুর রহমান বলেন, জি স্যার এনেছি। তখন জিডি লেখা শুরু করলেন ডিউটি অফিসার এএসআই মলিন মোল্লা। ৪/৫ মিনিট পর জিডি লেখা শেষ হওয়ার সাথে সাথে ওই যুবকের কাছ থেকে প্রথমে ১ হাজার টাকা দাবি করলেন ডিউটি অফিসার। পরে বহু অনুয় বিনয় করে ওই যুবক তাকে ৫ শত টাকা দিয়ে জিডিটি নথিভূক্ত করান তিনি। এছাড়াও থানায় জিডি করতে আসা একাধিক ভূক্তভোগীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, টাকা ছাড়াও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় জিডি নথিভূক্ত করা সম্ভব না। অনেক সময় পুলিশের চাহিদা মতো টাকা না দিলে নাজেহাল হতে হয়। উল্টো পাল্টা কথা শুনান পুলিশ সদস্যরা। এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকার লোকজনকে।

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের প্রবীণ সাংবাদিক খলিলুর রহমান বলেন, আমার কাছেও একাধিক ভূক্তভোগী অভিযোগ করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা টাকা ছাড়া জিডি নেওয়া হয় না। আমি এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ ওসি আব্দুর সাত্তারকে কয়েক দিন বলেছিলাম জিডি করতে আসলে ডিউটি অফিসার লোকজনের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ ওসি আব্দুর সাত্তার কোন ব্যবস্থাই নেয়নি।

এ বিষয়ে কথা হলে ডিউটি অফিসার এএসআই মলিন মোল্লা বলেন, ভাই আপনাকে আমি চিনি, জিডি করতে আসলে আমরা কেন টাকা নেই সন্ধ্যার পর আইসেন দেখিয়ে দিবো। সব কথা সব সময় বলা যায় না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার কয়েক নারী ও পুরুষ এএসআই জানায়, একদিন ডিউটি অফিসারের দায়িত্ব পেতে হলে ওসি স্যারকে ১ হাজার টাকা বিকাশ করতে হয়। লোকজন জিডি করতে আসুক আর নাই আসুক প্রতিদিন সন্ধ্যার পরই ১ হাজার টাকা বিকাশ করতে হয়। এখনও সাধারণ লোকজনের কাছ থেকে যদি টাকা না নেই, তাহলে ওসি স্যারকে কিভাবে টাকা বিকাশ করবো?।

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ ওসি আব্দুর সাত্তার টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, যার কাছ থেকে জিডি করতে টাকা নিয়েছে তাকে থানায় পাঠান আমি ব্যবস্থা নিব।