আজ মঙ্গলবার, ১৫ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৩০শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

জাতীয় পার্টি এখন চাঙ্গা, বেড়েছে সাংগঠনিক তৎপরতা,ফকরুল আহসান শাহজাদা

জাতীয় পার্টি এখন চাঙ্গা

জাতীয় পার্টি এখন চাঙ্গা, বেড়েছে সাংগঠনিক তৎপরতা,ফকরুল আহসান শাহজাদাজাতীয় পার্টি এখন চাঙ্গা

রিপোর্ট:

জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা এখন বেশ চাঙ্গা। ১৯৮৭ সালের সোনালী অতীত যেন ফিরে পেয়েছে দলটি। তন্দ্রার রেস নেই তাদের মাঝে, আছে আগামীতে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন। আর সেই স্বপ্নকে লালন করে ক্ষমতার অংশীদার না হয়ে এককভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। গেল বছরের ২১ ডিসেম্বর রংপুর সিটি নির্বাচনে বিজয়ের পর সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে চান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। আর আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্তও জয় নিজেদের করে রাখতে চাচ্ছেন দলটির চেয়ারম্যান ও মহাসচিব।
আমাদের প্রতিবেদক এম নজরুল ইসলামের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে সত্যিই স্বপ্ন ধারণের কথা জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় যুব সংহতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফকরুল আহসান (শাহ্জাদা মুন্সী)।
প্রতিবেদক: জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক তৎপরতা এবং তৃনমূলের কার্যক্রম কেমন ?
ফকরুল আহসান শাহ্জাদা: রসিক সিটি নির্বাচনের ফল জাপার ঘরে আসায় উজ্জীবিত হয়েছেন নেতাকর্মীরা। রংপুরের এই জয়ের প্রতিক্রিয়া এখন সারাদেশেই। তৃনমূলের নেতাকর্মীরা বর্তমানে বেশ সক্রিয়। আগামী নির্বাচন পর্যন্ত এই সুযোগ কাজে লাগাতে বাড়ানো হয়েছে সাংগঠনিক তৎপরতা। আগামী ২৪ মার্চে মহাসমাবেশে চূড়ান্ত সাংগঠনিক রূপরেখা ঘোষণা দেবেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ স্যার।
প্রতিবেদক: জাতীয় পার্টির বর্তমান মহাসচিব কেমন সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন ?
ফকরুল আহসান শাহ্জাদা: পরীক্ষিত মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার স্যার। সাংগঠনিক কার্যক্রমে তিনি সফল। রুহুল আমিন হাওলাদার স্যার না থাকলে আজ দল এতটুকু অগ্রসর হতো না। তার সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণে একের পর এক বিজয়ের হাতছানি দেখেছে দলটির হাজার হাজার তৃণমূল নেতাকর্মী। সঠিক নেতৃত্বের কারণে জাপা এখনো মাঠে বিরোধী দল হিসেবে অবস্থান করছে।
প্রতিবেদক: রংপুরের মতো কি জাতীয় নির্বাচনেও লাঙ্গলের পক্ষেই আসবে ?
ফকরুল আহসান শাহ্জাদা: নির্বাচনী হাওয়া বইছে জাতীয় পার্টিতে। মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি চাঙ্গা। জাতীয় পার্টি অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন বেশি শক্তিশালী। এককভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিয়েছেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ স্যার। ইতিমধ্যে পার্টির চেয়ারম্যান বিভিন্ন সংসদীয় আসনে অনেক মনোনয়ন প্রত্যাশীদের প্রার্থী হিসেবে নিজ নিজ এলাকার সাংগঠনিক দায়িত্ব দিয়ে চিঠিও দিয়েছেন। তৃনমূলে লাঙ্গল প্রতীকের নির্বাচনী মাঠ চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। রংপুর সিটি নির্বাচনে বিজয়ের পর থেকেই সারাদেশই জাতীয় পার্টি চাঙ্গা। হতাশা কেটে গেছে, সামনে আমাদের সুদিন। জাতীয় পার্টির প্রতি মানুষের আস্থা ফিরেছে। অনেকেই জাতীয় পার্টিতে যোগ দিচ্ছেন, সামনে আরো অনেকে যোগ দিবেন। জাতীয় পার্টি মানুষের সুখ ও সুশাসন ফিরিয়ে আনতে চয়। নিজেদের অধিকার ফিরে পেতে দেশের মানুষও পরিবর্তন চায়। এজন্য জাতীয় পার্টিকেই ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনবে দেশের মানুষ।
প্রতিবেদক: রাজনীতির মাঠে জাতীয় পার্টির কদর কেমন ?
ফকরুল আহসান শাহ্জাদা: রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি এখন বড় ফ্যাক্টর। সব দলই এখন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়। আমরা রংপুরবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ। পল্লীবন্ধু এরশাদকে যেদিন বিনা দোষে বন্দি করা হয়েছিল সেদিন এই রংপুরবাসীই নিজেদের জীবন বাজি রেখে তাদের ছাওয়াল এরশাদকে মুক্ত করার জন্য আন্দোলন করেছিল। পল্লীবন্ধু এরশাদকে উন্নয়নের সিংহপুরুষ বলা হয়। তিনি রংপুরের সন্তান। সন্তান বিপদগ্রস্ত হলে মা ঘরে বসে থাকতে পারে না। তেমনি পল্লীবন্ধুর প্রতিটি দুঃসময়ে রংপুরবাসী মায়ের মতো সন্তানের পাশে এসে দাঁড়ায়। আমাদের দলে সবাই ঐক্যবদ্ধ, তার প্রমাণ রসিক নির্বাচন। আসন্ন গাইবান্ধা-১ আসনের উপনির্বাচনেও দলের প্রার্থীকে জয়ী করার জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাব।
প্রতিবেদক: তৃনমূল নেতাকর্মীর মনোবল কেমন দেখছেন ?
ফকরুল আহসান শাহ্জাদা: রাজনীতিতে একতাই বল। তার ওপর আমাদের পুঁজি আছে, সে পুঁজি বা মূলধন হচ্ছেন পল্লীবন্ধু এরশাদ। উন্নয়নের কথা ভাবলে, শান্তির কথা ভাবলে, নিরাপত্তার কথা ভাবলে দেশের মানুষ অবশ্যই সব নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীককেই জয়ী করবে। রসিক নির্বাচনের মাধ্যমে এ জয়ের ধারা শুরু হয়েছে। দলের এ বিজয় ঘুমিয়ে থাকা কর্মীদের আবারও জাগিয়ে তুলেছে। নেতাকর্মীদের মনোবল বেড়েছে। মানুষ এখন অনেক সচেতন। ভোটারদের মাঝে উপলব্ধি হয়েছে, দেশ কার শাসনামলে ভালো চলেছে। আমি বিশ্বাস করি, রংপুরবাসীর এ ভোট জাতির জন্য মেসেজ। দেশবাসী পরিবর্তন চায়, হিংসা বা প্রতিহিংসার রাজনীতি দেখতে চায় না। তারা উন্নয়ন ও সহনশীল রাষ্ট্র কামনা করে, এর জন্য পল্লীবন্ধ এরশাদের জাতীয় পার্টি ছাড়া বিকল্প নেই। লাঙ্গলের এ বড় বিজয় নেতাকর্মীদের উৎসাহ বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা এ ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।
আমাদের প্রতিবেদক এম নজরুল ইসলামের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে ফকরুল আহসান শাহ্জাদা মুন্সী বলেন, রসিক নির্বাচনের মতো গাইবান্ধা-১ আসনের উপনির্বাচনেও যদি অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়, তাহলে অবশ্যই জাতীয় পার্টি সেখানেও জয়লাভ করবে। দেশবাসী পল্লীবন্ধু এরশাদকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। সারাদেশে দলীয় নেতাদের মাঝে ব্যাপক উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। আমরা আশাবাদী জাপা আরো এগিয়ে যাবে। মানুষ এখন জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। সামনের প্রতিটি নির্বাচনে মানুষ জাপার প্রার্থীর পক্ষেই রায় দেবেন বলেও আশাবাদী বরিশাল-৩ (মুলাদী-বাবুগঞ্জ) সংসদীয় আসনের জাতীয় পার্টির এই মনোনয়ন প্রত্যাশী।