আজ বৃহস্পতিবার, ২১শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

চাঁনমারীতে রমরমা মাদক ব্যবসা

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

নারায়ণঞ্জ সদর উপজেলাধীন ফতুল্লা থানা এলাকার চাঁনমারী মাউরাপট্টি এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসয়ীদের মাদক বিক্রির দৌরাত্ম যেন কিছুতে কমানো যাচ্ছে না। চলমান মাদক বিরোধী অভিযানকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অত্র এলাকার বেশ কিছু মাদক কারবারী দিনে দুপুরে অবাধে অবৈধ মাদক বিক্রি করছে।

স্থানীয়রা জানান, যেখানে মাদক ব্যবসার কারনে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে একের পর এক ক্রসফায়ের মতো ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে এবং চলমান এ সকল অভিযানের কারনে অনেক এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারিরা প্রশাসনের ভয়ে আত্মগোপনে রয়েছে সেখান চানমারী মাউরাপট্টি এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা চলমান অভিযানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

দৈনিক সংবাদচর্চার বিশেষ অনুসন্ধানে চাঁনমারী মাউরাপট্টি এলাকার মাদক বিক্রির চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। জানা যায়, চাঁনমারী মাউরাপট্টি এলাকার রমরমা মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করছে একাধিক ব্যক্তি। তার মধ্যে অন্যতম মো. মনসুর আলী ও পারুলী আক্তারের দুই ছেলে মো. আল-আমিন (২৬), মো. আলম (১৬)। মো. আল-আমিন চাঁনমারী মাউরাপট্টি এলাকার বড় ইয়াবা ডিলার হিসেবে পরিচিত। মাউরাপট্টি রমরমা ইয়াবা ব্যবসায় একাধিক ব্যক্তি জড়িত রয়েছে। সেখান কর মাদক ব্যবসায়ীরা শহরের বিভিন্ন স্থানে মাদক সরবরাহ করছে।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় চাঁনমারী মাউরাপট্টি এলাকায় একাধিক ডিলারের বসবাস রয়েছে। এরা সকলে চিহ্নিত বিক্রিতা না হলেও বর্তমানে এরাই অত্র এলাকা সহ সমগ্র নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে মাদকের সেল্টার দাতা হিসেবে চিহ্নিত এমনটাই অভিযোগ এলাকাবাসীর। অত্র এলাকার অপর এক ইয়াবা ট্যাবলেটের ডিলার মতি (২৮)। চাঁনমারী মাউরাপট্টি এলাকার নবাব মিয়ার ছেলে মতি।

মতি এক সময় গার্মেন্টসের কাজ করলেও মাদকের রমরমা টাকার নেশায় মতি এই অবৈধ মাদক ব্যবসার সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করে। স্থানীয়রা জানায় মতির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে ফতুল্লা মডেল থানায়। বিভিন্ন সময় মারামারি, চুরি, ছিনতাই ধর্ষন সহ একাধিক মামলা আসামী মতি এমনটাই অভিমত এলাকাবাসীর।

মাউরাপট্টি এলাকার আল-আমিন মো. আরমান, (১) পলডি শমীম (৩২), (২), মো. ডাব্বা সেলিম (৩৫), মো. মগা সোহেল (৩৮), মৃত হাসেম এর তিন ছেলে (১) মো. ফালান (২৬), (২) টুকাই বাবু (১৮), (৩) মো. শান্ত (১৪), লাল মিয়ার ছেলে মো. কুরবান (২৮), হক বাবুর্চির ছেলে মো. রুবেল, মো. হাবিব, মো. সালাউদ্দিন, চুদ্দু সোহেল, কমর ভাঙ্গা রিয়াজ, মো. সালাউদ্দিনের ছেলে মো. ছোলেমান, মো. রবি, সোহান, বিজয়, সাধু, মো. কাশেম, জয়, সালাম, জহির, সুমন চোর, খানপুর এলকার কানু মিয়ার ছেলে মাছ ব্যবসায়ী সোহেল (৩৫) অত্র এলাকার দিনে দুপুরে মরণ নেশা ইয়াবা ট্যাবলেটের রমরমা ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।

চাঁনমারী মাউরাপট্টি এলাকার রমরমা মাদক বিক্রি বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি দৈনিক সংবাদচর্চাকে বলেন, গত দু’মাস পূর্বে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে আমি দায়িত্ব বুঝে নিয়েছি। যোগদানের পরপরই পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ স্যারের সহযোগিতা নিয়ে রিজার্ব পুলিশ ফোর্স সহ ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের সমন্বয়ে চাঁনমারী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বেশ কয়েকজন চিহ্নিত মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করি।

আসলে মাদক এই রাষ্ট্র ও সমাজের মারাত্ম একটি ব্যাধি। বর্তমান যুবসমাজকে রক্ষা করার জন্য পুলিশ সুপার মহোদয়ের নেতৃত্বে আমাদের মাদক বিরোধী অভিযান চলমান রয়েছে। চাঁনমারী মাউরাপট্টি এলাকার যে সকল মাদক ব্যবসায়ীরা রয়েছে তাদের তথ্য উপত্যের বিস্তর পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মাউরাপট্টি এলাকার মাদকের বিষয়ে অত্র এলাকার বাসিন্দা মো. দাউদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আপনারা যেটা জানতে পেরেছেন ঘটনা সত্য। আসলে এই বিষয়ে ফোনের কথা বলা সম্ভব নয়। আপনি আসেন সরাসরি কথা বলি। অত্র এলাকার মাদক এখন চরম আকার ধারণ করেছে।

একজন স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে এই মাদক বন্ধে আপনারা কোন ভূমিকা পালন করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এলাকায় পঞ্চায়েত কমিটি রয়েছে। তারা এ সকল বিষয় নিয়ে কাজ করছেন।

মাউরাপট্টি পঞ্চায়েত কমিটির একজন সদস্য নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, এই মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে প্রতিনিয়ত আমাদের হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। অত্র এলাকার চিহ্নিত সকল মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এসপি অফিস, ডিসি অফিস সহ ফতুল্লা মডেল থানায় একাধিকবার জানানো হলোও তারা অজ্ঞাত কারণ বশত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করে নি। আমরা সাধারণ অসহায় মানুষ ভাই। যারা মাদক ব্যবসা করছে তারা অনেক শক্তিশালী ।

মাউরাপট্টি এলাকার পঞ্চায়েত কমিটির সদস্য মো. বারেক বলেন, এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একাধিকবার প্রশাসন কে বলা হয়েছে কিন্তু কোন কাজ হয়নি। তবে হ্যা আমরা কোন লিখিত অভিযোগ দায়ে করি নি। তবে এই ভাবে আর মাদক ব্যবসা চলতে দেওয়া যাবে না। পুলিশ ও সাংবাদিক যদি এই বিষয়ে সহযোগিতা করে তাহলে হয়তো অতি দ্রুত অত্র এলাকার মাদক নির্মূল করা সম্ভব হবে ।