আজ বুধবার, ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ক্ষতিপূরন ও আন্তর্জাতিক তদন্তে তৈমূরের রিট

স্টাফ রিপোর্টার :

বৈষম্য বিরোধী ও এক দফা দাবীতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ঘরের ভিতর কিংবা আঙ্গিনায় থাকা শিশু হত্যার ঘটনায় দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তদন্ত করতে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করেছেন তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। একই সাথে নিহতদের পরিবারকে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবীও করেন এই বিজ্ঞ আইনজীবী।
জানা গেছে, কোটা ইস্যুতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন তীব্র হতে শুরু করলে গত ১৭ জুলাই থেকে কঠোর অবস্থানে থাকে পুলিশ, র‌্যাব সহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরবর্তীতে গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই রাজধানী ঢাকাসহ গোটা দেশে গুলি চালাতে দেখা যায় পুলিশ সদস্যদের। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনেককেও গুলি চালাতে দেখা গেছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এতে আন্দোলনকারীদের অনেকে রাজপথে প্রাণ হারালেও ঘরে থাকা নারী-শিশুদেরও মৃত্যু হয়েছে। তথ্য মতে, নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশে অন্তত ৬৬ জন শিশু প্রাণ হারিয়েছে।
ঘরে ভিতরে, ছাদে বা আশপাশে থাকা শিশুদের মর্মান্তিক মৃত্যু বা হত্যাকাণ্ড নিয়ে দেশ এবং দেশের বাহিরেও ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। এবার এই ঘটনায় উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেছেন তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার।
গত ৩১ জুলাই তৈমূর আলম খন্দকার হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন। যার নম্বর- ৯৬৮৮/২০২৪। গত ৬ আগস্ট শুনানীর জন্য কোর্টের তালিকায় আসে এবং ৭ ও ৮ আগস্ট শুনানি হয়।
রিটের বিষয়ে তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, আন্দোলন হয় রাস্তায়, স্থাপনা ভাংচুর হয় স্থাপনার জায়গায়, কিন্তু ঘরের ভিতর শিশু খন হয় কেন! আন্দোলন দমাতে হেলিকপ্টার যে মুভমেন্ট করতেছিল, এটাতো আমরা সবাই দেখেছি। ২০ জুলাই থেকে আমি তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ শুরু করি। তারপর গত ৩০ জুলাই সরকারকে একটি লিগ্যাল নোটিশ করি। ৩১ জুলাই হাই কোর্টে রিট দালিখ করি। ১ আগস্ট একজন বিচারক অনুপস্থিত থাকার কারণে কোর্ট বসেনি। ২ ও ৩ আগস্ট ছিলো শুক্র এবং শনিবার। ৪ আগস্টে কোর্টে ম্যানশন করি। সেখানে একথা বলি যে, আন্দোলন হলো রাজপথে, স্থাপনাও ভাঙা হলো রাজপথে বা স্থাপনার জায়গায়। কিন্তু মায়ের কোলে বা ছাদে খেলতে থাকাবস্থায়, বাবার কোলে এমনটি ১১ তলা ভবনের ৮ তলায় ঘরের ভিতরে কিভাবে নারী-শিশু গুলিতে নিহত হলো! শিশুরা তো মিছিল মিটিংয়ে যায়নি।’
তৈমূর বলেন, আমি বিষয়টি ম্যানশন করার পর প্রধান ভবনের ২৩ নম্বর কোর্ট আমার এই রিটটি আমলে নেয়নি। সেদিন বিকেলে আমি এনএক্স ভবনের ৬নং কোর্টে পূনরায় মেনশন করা হলে বিজ্ঞ আদালত বিষয়টি আমলে নেন এবং ৬ ও ৭ তারিখে শুনানি হয়। ৮ তারিখে অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানি করে। পরে কোর্ট রুল দিয়েছে যে, হেলিকপ্টারে গুলির পর বা ঘরে থেকে যে শিশু হত্যা হলো, এই মৃত্যুর কারণ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তদন্ত করা হোক। পাশাপাশি প্রতিটি মৃত্যুর ঘটনায় কেন ১ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না- এটার জন্য সরকারের কাছে ব্যাখা চাওয়া হয়। শুনানি না হওয়া পর্যন্ত আমি প্রতিটি শিশুর জন্য ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছি। অ্যাটর্নি জেনারেল সাহেব বলেছে যে, উনি সরকারের সাথে কথা বলে ৫ তারিখে তাদের সরকারের মতামত জানাবেন।’
আন্দোলনের সময় ৬৬জন শিশু ঘরে বসে প্রাণ হারিয়েছে উল্লেখ করে তৈমূর বলেন বলেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে এটা এক ন্যাক্কার জনক ঘটনা।’