আজ শনিবার, ১৬ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শামীম ওসমানের সমর্থকরা কালী দিয়ে অপরাধ মোছার চেষ্টা!

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের ছত্রছায়ায় থাকা নেতাকর্মীরা ক্রমসই সন্ত্রাসী রুপ ধারণ করছে। সেই সাথে দিনদিন তারা ভয়ঙ্কর রুপ নিচ্ছে। তাদের ভয়ে বিনা অপরাধে সাধারণ মানুষ রাতে ঘুমাতে পারে না।

গত ২২ মার্চ ফতুল্লার রামারবাগ এলাকার নামধারী আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াসউদ্দিন ওরফে কাইল্লা গেসু, আজমত ওরফে ফেন্সি আজমত ও ফতুল্লা শাখা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ সভাপতি মোস্তফা গ্রুপের সংঘর্ষে ওই এলাকার নিরীহ মানুষসহ অন্তত অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। সেই সূত্রে কাইল্লা গেসু ও ফেন্সি আজমত বাহিনীর সেদিনের আক্রমনের কিছু দৃশ্য দিয়ে পোষ্টার বানিয়ে শহরের বিভিন্ন অলি-গলিতে, দেয়ালে দেয়ালে লাগিয়ে দিয়েছে মোস্তফা গ্রুপ। সেই সাথে প্রশাসন ও শামীম ওসমানের কাছে তারা বিচার দাবী করেছেন।

অন্যদিকে আরেকদল আবার সেই পোষ্টারের ওপর কালি লেপন করে দিয়ে তাদের চেহারাগুলোকে ঢেকে রাখার চেষ্টা করছেন। এমনটাই মনে করেন জেলার সাধারণ মানুষ। তাদের মতে, কালী লেপন করে কী আর অপরাধ মোছা যায়!

সচেতন মহলের মতে, আইন সবার জন্য সমান নয়! যদি সমানই হতো তাহলে ফতুল্লার রামারবাগ এলাকায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অপরাধীদের বের করে বিচারের আওতায় আনা হতো। তারা ক্ষমতাসীন ও প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় থাকে বলে তাদের বিচার হয়না। আদৌ কী তাদের বিচার হবে? তা না হলে সেদিন যেকোন পক্ষে বর্বর হামলায় এতগুলো মানুষ আহত হলো কিন্তু এখনো পর্যন্ত কী কার্যকর ভূমিকা পালন করা হয়েছে। কারও মাথা ফাটাঁনো হয়েছে, কারও জিহ্বা কেঁেট ফেলা হয়েছিলো। কিন্তু এখনো পর্যন্ত বিচার হয়নি। তাহলে প্রশাসন আর সাংসদের কাছে বিচার দিয়ে লাভ কী হলো? যেখানে অপরাধী নিজেই সাংসদের লোক সেখানে কীভাবে তিনি বিচার করবেন। আর যদি তাই করতেন তাহলে অনেক আগেই এই বর্বর হামলার বিচারের ব্যাপারে প্রশাসনকে অনুরোধ করতেন। তা না করে তিনি চুপচাপ শুধু সমসাময়িক বিষয়গুলো দেখে যাচ্ছেন।

রাজনৈতিক বোদ্ধাদের মতে, ওই সংঘর্ষের ঘটনায় দুইটি গ্রুপই ছিলো শামীম ওসমানের কর্মী। সেক্ষেত্রে যেই পক্ষই দোষ করুক না কেন বিচার না হওয়াটাই স্বাভাবিক। আর এতে কোন সন্দেহ নেই। পূর্বেও এর চেয়ে আরও অনেক বড় অপরাধ করে পার পেয়ে গেছে শামীম ওসমান বলয়ে থাকা বহু নেতাকর্মী। আর সে হিসেবে ওই সংঘর্ষ কোন ইস্যুই না। শামীম ওসমানের হাত মাথায় থাকলে যেকোন ঘটনায় ঘটানো সম্ভব। আর তা না হলে কোনো শুধু শামীম ওসমানের লোকজনই বারবার খবরের শিরোনাম হন। আরও তো সংসদ সদস্য আছে আরও তো জনপ্রতিনিধি আছে। তাদের লোকজনের নামে থানায় কয়টি মামলা তাদের লোকজনদের তো কেউ খারাপ বলে না। শুধু শামীম ওসমানের নেতাকর্মীদেরই যত সমস্যা। তার কারণ একটাই শামীম ওসমান জেলার প্রভাবশালী সংসদ সদস্য। আর তার কারণেই তার বলয়ে থাকা নেতকর্মীরা ভুলে যান যে দেশে আইন-আদালত আছে, সংবিধান বলে কিছু আছে। আইনের উর্দ্ধে তো আর কেউ নয়। তাই অবিলম্বে ওই সংঘর্ষের ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি দেয়া প্রয়োজন।