নিজস্ব প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের অনেক নেতাই এখন এমপি হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। রাজনীতি করেন, এমপি হওয়ার স্বপ্ন দেখা দোষের কিছু নয়। কিন্তু স্বপ্ন দেখলেইতো হবেনা। তা বাস্তবায়নের উপায়ও জানা থাকতে হবে। গত দুইবারের টানা ক্ষমতায় আওয়ামীলীগ। আর এই সুযোগে এই দলটির অনেক নেতাই এমপি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। তাদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল পারভেজ অন্যতম। হঠাৎ করেই তিনি এখন নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের মনোনয়নের স্বপ্নে বিভোর রয়েছেন। এরই মধ্যে এমপি পদে মনোনয়ন পাওয়ার জন্যও বিভিন্ন মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছেন। কিন্তু ধীরে ধীরে তার সকল মিশনই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হচ্ছে।
নেতাকর্মীদের সূত্রে জানা যায়, হঠাৎ করেই নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে উদয় হন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগ নেতা ইকবাল পারভেজ। একসময় নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর পক্ষে কাজ করলেও বর্তমানে তিনি তারই প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছেন বলে জানাগেছে।
এরই মধ্যে গত ২৫ জুলাই নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে দুটি পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই পৌরসভার নির্বাচনে অন্যান্য আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা সরব থাকলেও প্রথম থেকেই নিরব ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল পারভেজ ও সমর্থনপুষ্ট আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। কোন সময় আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার প্রচারণায় দেখা যায়নি তাকে। যদিও ইকবাল পারভেজ দাবি করেছেন দলীয় কাজে ব্যস্ত ছিলেন তিনি।
আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থীদের জয় নিশ্চিত দেখে আলোচনায় আসার লক্ষ্যে সর্বশেষ প্রচার-প্রচারণার শেষ দিন ২৩ জুলাই মেয়র প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় নামেন। কারণ তিনি চাচ্ছিলেন কোন এক ঘটনার জন্ম দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের নজরে আসবেন তিনি। কিন্তু তার সেই আশার গুড়িবালি। ঘটনা ঠিকই ঘটেছে কিন্তু আলোচনায় আসতে পারেননি ইকবাল পারভেজ। তিনি নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের বর্তমান এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেনে।
ইকবাল পারভেজ সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, আওয়ামীলীগের প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণা চালাতে গেলে এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর লোকজন তাদের উপড় রামদা, চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এসময় ফায়ার করা হয়, তবে তাদের কেউ গুলিবিদ্ধ হয়নি বলে জানান তিনি। যদিও সেখানকার স্থানীয় সূত্রে দাবী ছিল উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে ইকবাল পারভেজের পক্ষে অতি উৎসাহী নেতারা প্রচারণা চালাতে গেলে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
এর আগেও ইকবাল পারভেজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে স্ট্যান্ডবাজি করেছিলেন। গত ১৬ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল। সে সময় তাদের সাথে ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল পারভেজ। সেই সুবাদে তিনি তার সংসদীয় এলাকায় গিয়ে প্রচার করেন এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন। আর এই সংবাদে তার সমর্থকরা মিছিলও করেছেন। কিন্তু বাস্তবে এর কিছুও হয়নি। জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির মতে, প্রধানমন্ত্রীর সাথে পারভেজের নির্বাচন নিয়ে কোন কথাই হয়নি ইকবাল পারভেজের। পরিশেষে তার এসব বক্তব্য রাজনৈতিক স্ট্যান্ডবাজিতে গিয়ে পরিণত হয়। আর এভাভেই তার একের পর এক মিশন ব্যর্থতায় পর্যবেসিত হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খানের মুহুরি ইকবাল পারভেজ রাজউকে সহকারী পরিচালক (আইন) হিসেবে চাকরি পান। এরপর তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ধীরে ধীরে অবৈধভাবে বিশাল সম্পত্তির মালিক হয়ে যান ইকবাল পারভেজ। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় একবার গ্রেফতার হয়েছিলেনও তিনি।