আজ বৃহস্পতিবার, ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

‘এখন রাজনৈতিক যুদ্ধ করতে হবে’


টি.আই.আরিফ:
রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আবার প্রধানমন্ত্রী হলে দেশ মৌলবাদীদের হাত থেকে রক্ষা পাবে, সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা পাবে, স্বাধীনতা বিরোধীদের হাত থেকে রক্ষা পাবে।

শুক্রবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

‘চাকরিতে কোটা পূনর্বহাল ও দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে সরকার গঠনে মুক্তিযুদ্ধের ধারা অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয়ে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ সুরক্ষায় নতুন প্রজন্মের করনীয়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা ও জেলা কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভা ও জেলা কনভেনশন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় সভাপতি মেহেদী হাসান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী গোলাম দস্তগীর বীর প্রতীক, এমপি।

তিনি বলেন, আজকে স্বাধীনতা বিরোধী যারা আছেন তারা আবার সংঘটিত হচ্ছে- কীভাবে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে সরিয়ে দেওয়া যায়। দেশি-বিদেশি চক্ররা আবার সংগঠিত হচ্ছে। যারা স্বাধীনতা বিরোধী ছিল, যে সমস্ত বিদেশিরা মুক্তিযুদ্ধে আমাদের দেশকে সমর্থন করে নাই, তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আবার সেই স্বাধীনতা বিরোধী চক্ররা আবার বঙ্গবন্ধু কন্যাকে কীভাবে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা যায় সে বিষয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

মুক্তিযুদ্ধ সন্তান কমান্ডের সদস্যদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, আমরা ১৯৭১ সালে অস্ত্রের যুদ্ধ করেছি, এখন আপনাদের রাজনৈতিক যুদ্ধ করতে হবে। আর এই রাজনৈতিক যুদ্ধে যদি আপনারা সফল না হন, তাহলে মুক্তিযুদ্ধ সন্তান কমান্ড কোন ধরনের দাবি আদায়তো দূরের কথা কোন কিছুই পাবে না। রাজনৈতিক যুদ্ধ করতে হলে মুক্তিযুদ্ধ সন্তান কমান্ডের সদস্যদের সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে। সমস্ত জেলায় আরও বড় করে এ ধরনের প্রোগ্রাম করতে হবে।

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, আমরা ১৯৭৪ সালের রেসকোর্স ময়দানে মুক্তিযুদ্ধ সংসদের যে সম্মেলন করেছিলাম- সেখানে মুক্তিযোদ্ধাসহ তিন থেকে চার লাখ লোক হয়েছিল। সেই ধরনের একটি শক্তিশালী সম্মেলন রেসকোর্স ময়দানে আপনাদের আবার করতে হবে। কারণ এই ধরনের শক্তি প্রদর্শন ছাড়া কোন ধরনের রাজনৈতিক অধিকার আদায় করা যাব না।

তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী একটি চক্র বঙ্গবন্ধু কন্যাকে হটাতে চেষ্টা করছে। আর বঙ্গবন্ধু কন্যা যদি না থাকে তাহলে আপনারাও নাই হয়ে যাবেন। আমরাও নাই হয়ে যাবো। কেউ থাকতে পারবো না। তাই বঙ্গবন্ধু কন্যাকে আবার আগামী নির্বাচনে জয়ী করতে হবে, আমাদের সবাই মিলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির যারা আছেন তারা সবাই সংগঠিত হয়ে রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শন করে আগামী দিনে এগিয়ে যেতে হবে। তাহলেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আবার প্রধানমন্ত্রী হবেন। তিনি আবার প্রধানমন্ত্রী হলে আপনাদের যে সকল দাবি দেওয়া আছে সেগুলো পূরণ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। সুতরাং এখন কাজ হল সংগঠিত হয়ে সামনে নির্বাচনে আমাদের বিরুদ্ধে দূরভিসন্ধিমূলক চক্রান্তে যারা আছেন, তাদের উৎখাত করতে হলে আমাদের রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শনীর মাধ্যমে তাদের প্রতিহত করে এগিয়ে যেতে হবে।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী, বীরপ্রতীক, বলেন, আমরা যেভাবে বঙ্গবন্ধুর ডাকে স্বাধীনতা যুদ্ধে গিয়েছিলাম, আজকে আমাদের ছেলেমেয়েরাও সেভাবে আবার বঙ্গবন্ধু কন্যাকে সমর্থন দিয়ে যেতে হবে। আর তাকে আবার যদি প্রধানমন্ত্রী করে নিয়ে আসতে পারি; তাহলে এই দেশ মৌলবাদীদের হাত থেকে রক্ষা পাবে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা পাবে এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের হাত থেকে রক্ষা পাবে বলে আমি মনে করি। সুতরাং ঘরে বসে থাকলে হবে না, আপনাদের লড়তে হবে, তবে অস্ত্রের লড়াই নয়, রাজনৈতিকভাবে লড়াই করতে হবে। তাহলেই আমাদের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধু ইতিহাস, আগামীতে আওয়ামী লীগ এবং স্বাধীনতা পক্ষের সমস্ত কিছু আমাদের সঙ্গে টিকে থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

মন্ত্রী বলেন, আজকে দেশি ও আন্তর্জাতিক সব ষড়যন্ত্র আর নানা প্রতিকূলতাকে মোকাবিলা করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। দেশ উন্নত ও সমৃদ্ধি পথে এগিয়ে যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম রেজার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সংবিধান প্রণেতাদের মধ্যে অন্যতম ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী সিকদার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শরফুদ্দিন আহমেদ, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দ সৈনিক ড. মনোরঞ্জন ঘোষাল প্রমুখ।