আজ শুক্রবার, ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আইনজীবী নেতা নিয়ে হতাশায় বিএনপি

 দলের জন্য শুভ নয়-মামুন মাহমুদ
 সিনিয়রদের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন- রাজীব

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
নারায়ণগঞ্জের আদালত পাড়ায় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের দুই গ্রুপের নেতাদের মধ্য কয়েকদফা মারামারির ঘটনা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। পরপর তিন দফা এই সংঘর্ষকে ভালোর চোখে দেখছেন না স্থানীয় থেকে কেন্দ্রীয় নেতারা। তাদের দাবী, আইনজীবীরা আইনের উর্দ্ধে গিয়ে বেআইনী কাজ করছেন।
গত ৩নভেম্বর রোববার থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত তিনদফার মারামারি ও সংঘর্ষের মতো ঘটনা ঘটেছে অ্যাডভোকেট সাখওয়াত হোসেন খান ও আব্দুল বারী ভূইয়া গ্রুপের মাঝে। শেষদিন গতকাল একা পেয়ে আদালতের মূল ফটকের সামনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়েন কবিবের উপর হামলা চালায় বারী ভূইয়া গ্রুপের কয়েকজন সদস্য যারা বহিরাগত বলে দাবী হুমায়ুনের। এতে আদালত পাড়ায় উত্তেজনা বিরাজ ও সাধারণ বিএনপির কর্মীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে করছে। দুইপক্ষ আগামী সোমবার ১১ নভেম্বর একটেবিলে বসে আলোচনার মধ্যে বিষয়টি সমাধান করবেন বলে আইনজীবীদের সূত্রে জানা যায়।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ জানান, তাদের এমন কর্মকান্ড দলের জন্য শুভ নয়। আইনজীবীদের ফরম বিতরণ নিয়ে ভুল বুঝাবুঝির কারনেই এমন ঘটনা ঘটছে তা অচিরেই মিটে যাবে বলে আশা করি।
সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে সমাধান সম্ভব কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতারা বিষয়টি দেখছেন। তারপরও যদি তারা মনে করেন আমাদের হস্তক্ষেপ দরকার আমরা ব্যবস্থা নিব।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাশুকুল ইসলাম রাজীব বলেন, পরপর চারদিন যাবৎ চলমান এমন সংঘর্ষ বিরক্তিকর। আইনজীবীদের এমন আচারণ ন্যাক্কারজনক। যেখানে এই সময় বিএনপির ঐক্যবদ্ধ ভাবে থাকতে হবে, সেখানে তারা দলকে সংগঠনিকভাবে দূর্বল করে তুলছে। প্রথমদিনের ঘটনার পরই সিনিয়র নেতাদের উচিত ছিলো বিষয়টি বসে সমাধান করার কিন্তু তারাও কোন উদ্যোগ নেয়নি। এ সময়ে দলের ইমেজ রক্ষার্থে সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, গত ৩ নভেম্বর জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে তর্কবির্তক শুরু হয়। এক পর্যায়ে এড. সাখওয়াতকে বিক্ষুব্ধ হয়ে বারী এবং আব্দুল হামিদ ভাষানী একত্রিত ভাবে মারধর করেন। ওই মারধরের জের ধরে এর প্রতিশোধ নিতে সোমবার সকালের আদালত পাড়ায় এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, আনোয়ার প্রধান, এড. কামাল মোল্লা সহ আরও কয়েকজন হামলা করলে আবারও সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সেক্রেটারী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে যার যার কর্মস্থলে ফিরত পাঠান। এর আগে, গত ৩১ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য সংগ্রহের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক র‌্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। রোববার থেকে এই ফরম বিতরণ করার কথা ছিলো। ৪শ ফরম দেওয়া হয়। আর এই ফরম বিতরন ও সদস্য সংগ্রহের জন্য আইনজীবীদের মধ্য থেকে ৮জনকে দ্বায়িত দেওয়া হয়। বারী ভূইয়াপন্থী ৮জনের মধ্য প্রত্যেককে ৫০টি করে ফরম বুঝিয়ে দেবার কথা বললে সাখওয়াত এতে নারাজ হয়ে বলেন, ফরম এক সঙ্গেই থাকবে আমরা একত্রিত্ব হয়ে ফরম বিতরণ করবো। এ নিয়ে নারায়ণগঞ্জে আইনজীবী ফোরামের অন্যান্য নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। রোববার বিকেলে সিনিয়র আইনজীবী আব্দুল বারী ভূঁইয়ার চেম্বারে বসেন সাখাওয়াতসহ ফোরামের অন্যান্য নেতারা। এসময় এ ঘটনায় বারী ও সাখাওয়াত তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ পর্যায়ে আব্দুল বারী ভূইয়ার চেম্বারে বারী ভূঁইয়া ও আব্দুল হামিদ খান ভাষানী সাখাওয়াত হোসেন খানকে মারধর করা হয়। সর্বশেষ গতকাল সকালে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এড. সরকার হুমায়ুন কবিরের উপর আবারও হামলা চালান বারী ভূইয়া গ্রুপের সদস্যরা।