আজ শুক্রবার, ১লা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নারায়ণগঞ্জে গ্রেফতার আতঙ্কে আওয়ামী লীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নারায়ণগঞ্জকে আওয়ামীলীগের জন্ম জেলা বলা হয়। কিন্তু সেই নারায়ণগঞ্জ এখন আওয়ামীলীগ শূণ্য। দাপুটে নেতা থেকে শুরু করে সাধারণ কর্মীরাও এখন নারায়ণগঞ্জে নেই। এতো যারা নিজ এলাকায় আত্মগোপনে ছিল সে সমস্ত নেতারাও অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরু হওয়ার পর থেকে তারাও এলাকা ছেড়ে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলেছে। দলের বর্তমান পরিস্থিতিতে হাল ধরারও কেউ নেই। প্রথম সারির থেকে শুরু করে শেষের সারির কোন নেতাকেও প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না। এসব কারণে বাঝা যাচ্ছে দাপুটে আওয়ামীলীগের জনপ্রিয়তা এখন শূণ্যের কোঠায় অবস্থান করছে। সূত্র জানায়, ‘অপারেশন ডিভিল হান্ট’ শুরু হওয়ার পর যে সমস্ত নেতা নারায়ণগঞ্জের বাইরে ঢাকা কিংবা মুন্সিগঞ্জে আত্মগোপন করেছেন তারাও স্থান বদলে ফেলেছেন। হত্যা মামলায় আসামী হওয়ায় নেতাদের মধ্যে কেউ হামলার শঙ্কা করছে, কেউ গ্রেফতার আতঙ্কে ভুগছে। আত্মগোপনে থেকেই নেতারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছেন। তবে খাদের কিনারায় থাকা আওয়ামীলীগকে কে টেনে তুলবে, কে সামনের সারিতে এসে নতুন করে নেতৃত্ব দিবে? কিংবা আত্মগোপনে থাকা নেতারা আদৌ ফিরে আসবে কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন খোদ আওয়ামীলীগের তৃনমূলের নেতাকর্মীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শুরু হওয়া কোটা আন্দোলন পরবর্তীতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা আন্দোলনে রূপ নিলে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন তিনি। ইতিহাসের বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে লাখ লাখ মানুষ সেদিন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনের দিকে যাত্রা করেন। শেখ হাসিনা ভারতে চলে যাবার পর নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অর্ন্তবতীকালীন সরকার গঠন করা হয়। এরপর শেখ হাসিনার সরকারের মন্ত্রী-এমপিসহ তাদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অনেককেই আটক করা হয়। এ অবস্থায় রাজনীতিতে আওয়ামীলীগ কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের শেখ হাসিনা ছেড়ে চলে যাওয়ায় দলটির অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
তবে দীর্ঘদিন বাংলাদেশের রাজনীতিতে অন্যতম বড় রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে টিকে থাকা আওয়ামী লীগের এখনকার নিস্ক্রিয়তা রাজনীতির অঙ্গনে জায়গা ফাঁকা হয়েছে। এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, কারা এই সুযোগের সবচেয়ে সদ্বব্যবহার করবে? দলের দু:সময়ে কার ভূমিকা কি হয় এ নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ। ক্ষমতাচ্যুৎ শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সিংহভাগ নেতাই এখন লাপাত্তা। দলটির কেন্দ্রীয় ও মহানগর ছাড়াও তৃনমূল পর্যায়ের নেতাদেরও খোঁজ মিলছে না। গ্রেপ্তার আতঙ্কে গা-ঢাকা দিয়েছেন প্রায় সব পর্যায়ের প্রভাবশালী নেতা। পাশাপাশি তাদের ঘনিষ্ঠ অনুসারীরাও বন্ধ রেখেছেন মোবাইল নম্বর। বেশির ভাগ নেতা দেশে পরিচিতজন কিংবা স্বজনের বাসাবাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। আবার অনেকে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। এই অবস্থায় অসহায় হয়ে পড়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ কর্মীরা। দলের নেতাকর্মীদের রাজনীতির মাঠে কে ফিরাবে? এ প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সর্বোত্র।