আজ বৃহস্পতিবার, ২৭শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আ’লীগ থেকে লাল মামুনের বিএনপি বনার গল্প

এক সময় স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের সাথে সখ্যতা রাখা ফতুল্লার মামুন ওরফে লাল মামুন এখন ভোল পাল্টে বিএনপি সেজেছে।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নাম ব্যবহার করে ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে তুলেছেন অপরাধ সাম্রাজ্য। মামুন ওরফে লাল মামুনের অপরাধ সাম্রাজ্যে মাদক থেকে শুরু করে, কিশোর গ্যাং এর পৃষ্ঠপোষকতা, ছিনতাই ও চাঁদাবাজীরমত ফৌজদারি অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা নিজস্ব স্বার্থ হাসিলের জন্য মামুনেরমত এক অপরাধীকে অবাধে রাজনৈতিক ক্ষমতা দিয়েছে। এতে করে মামুন এখন ত্যাগি বিএনপি নেতাকর্মীদের উপেক্ষা করে নিজেরমত করেই সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠায় মনোনিবেশ শুরু করেছে। অভিযুক্ত মামুন ওরফে লাল মামুন ফতুল্লার পিলকুনি এলাকার সৈকত ও মেরী দম্পতীর বড় ছেলে।

তথ্য অনুসন্ধান ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মামুন ওরফে লাল মামুন এক সময় ফতুল্লার থানা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদের ব্যক্তিদের সাথে সখ্যতা রেখেছিলো। একই সাথে গত ৫ আগস্টের পুর্বে মামুন আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে ফতুল্লার পাগলা, রেল স্টেশনসহ আরও বেশ কিছু জায়গায় মাদকের স্বর্গ রাজ্য গড়ে তুলেছিলো।

জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার আন্দোলনে গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা সরকারের পত হলে মামুন রাতারাতি ভোল পাল্টে বনে যায় বিএনপিরকর্মী। এখানেই সে থেমে যায় নি। বিএনপি পরিচয়ে ফতুল্লাসহ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঝুট সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণ, ছিনতাই-চাঁদাবাজীসহ বিগত সময় যেসকল বিএনপির কর্মীরা আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে সক্রিয় ছিলো তাঁদের সাথেও ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার শুরু করেছে।

ফতুল্লা রেল স্টেশন এলাকার গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মামুন ওরফে লাল মামুনের ছোট ভাই তপু। সে এখন ফতুল্লা রেল স্টেশন এলাকার অন্যতম শীর্ষ মাদকের গডফাদার। ওই এলাকার সকল অবৈধ ব্যবসায়ীরা তপুর কাছ থেকে পাইকারীদরে মাদক সংগ্রহ করে এলাকাগুলোতে বেচা বিক্রি করে থাকে। কোন মাদক ব্যবসায়ী তপুকে ছাড়া অন্য কারো কাছ থেকে মাদক সংগ্রহ করলে মাদক ব্যবসাতো দূরের কথা ওই এলাকায় তাদের থাকায় দুস্কর হয়ে পড়ে।

স্থানীয়দের দাবী রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল ও প্রতিপক্ষ দমনে মামুন ও তার ভাই তপুকে ব্যবহার করে কতিপয় বিএনপি নেতা। পত্যক্ষভাবে তারা এই দুই ভাইকে সমর্থন না করলেও অনেকটা গোপনে তাদের দিয়ে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কাজগুলো আদায় করা হয়। এরফলে মামুন ও তার ভাই তপু নিজেদের বিএনপির বড় নেতা ভাবতে শুরু করেছে এবং এলাকাগুলোতে অনাচার-বেবিচার চালাচ্ছে তারা। কেউ প্রতিবাদ করতে গেলেই জনৈক প্রভাবশালী বিএনপি নেতার ভয় দেখানো হয়।

বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রা (ওসি) মো. শরিফুল ইসলাম বলে, অভিযোগ পেলে এ সকল অপরাধীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও যারা সমাজে ভয়ংকর মাদক বিক্রির সাথে সম্পৃক্ত তাদের বিষয়ে আমরা বরাবরই জিরো ট্রলারেন্স নীতি গ্রহণ করে থাকি।

অপর দিকে ফতুল্লা মডেল থানার পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, মামুন ওরফে লাল মামুন ও তার ভাই তপুর বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় মারামারী ও মাদক আইনে মামলা রয়েছে। বিশেষ করে মামুনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে ৭ ফেব্রুয়ারী এ বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক আইনে মামলা পাওয়া গেছে। এ মামলায় মামুন ওররে লাল মামুন এজাহারভূক্ত আসামী।

সর্বশেষ সংবাদ