আজ বৃহস্পতিবার, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সোনারগাঁ-আড়াইহাজারে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার :

দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনের ভোট ২১ মে । নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার ও সোনারগাঁ মিলিয়ে তিনটি উপজেলায় এই ভোটের লড়াই শুরু হবে মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে। সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই ওই তিন উপজেলায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও বলছেন, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য বদ্ধপরিকর তারা।
এদিকে, তিনটি উপজেলার মধ্যে সোনারগাঁ এবং আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাচনের আগেই প্রার্থীদের মাঝে উত্তাপ ছড়িয়েছে। একে অপরের বিরুদ্ধে উস্কানীমূলক বক্তব্য এবং নানা অভিযোগ এনে ভোটের মাঠ উত্তপ্ত করে তুলেছিলেন। ওই দুই উপজেলা নির্বাচনে তাই বাড়তি নজর রয়েছে সকলের।
স্থানীয়রা বলছেন, এবারের দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন জমে উঠবে আড়াইহাজার এবং সোনারগাঁ উপজেলায়। কেননা, ভোটের উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছে ওই দুই উপজেলা থেকেই। বিশেষ করে, স্থানীয় সংসদ সদস্যদের হস্তক্ষেপ এবং সমর্থনের কারণে বরাবরই আলোচনায় ছিলো আড়াইহাজার ও সোনারগাঁ।
জানা গেছে, সোনারগাঁয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করা চারজন প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছেন ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালাম। অন্যদিকে, সমালোচনায় বিদ্ধ হয়েছেন আনারস প্রতীকের প্রার্থী বাবুল ওমর বাবু। যদিও বাবুকেই সমর্থন জানিয়েছিলেন এমপি কায়সার হাসনাত। তবে হাসনাত পরিবারের অধিকাংশ সদস্য এবং বাবুল ওমর বাবুর বোন মাহফুজুর রহমান কালামকে সমর্থন জানিয়ে সোনারগাঁয়ের ভোটের আলোচনাই পাল্টে দিয়েছেন। আর বাকি দুই প্রার্থীর মধ্যে রফিকুল ইসলাম নান্নু এবং আলী হায়দার পর্যায়ক্রমে আলোচনার বাইরে চলে যায়।
এদিকে, আড়াইহাজার উপজেলায় স্থানীয় সংসদ সদস্য হুইপ নজরুল ইসলাম বাবু সমর্থন জানিয়েছেন ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপনকে। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের আরেকটি পক্ষ শাহজালালকে সমর্থন জানানোয় জমে উঠেছে আড়াইহাজার উপজেলার নির্বাচনী আলোচনা। এমপি বাবুর আর্শিবাদ থাকায় স্বপনের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকলেও ভোটের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত ফলাফল কোন দিকে গড়ায়- তা নিয়ে উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে ভোটারদের মাঝে।
অন্যদিকে, রূপগঞ্জ উপজেলায় সর্বজন স্বীকৃত এবং সবচেয়ে সম্ভাবনাময়ী প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রানু নিজেকে আলোচনায় আনতে পারেননি বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
গেল কয়েক দিনের প্রচার-প্রচারণায় দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জের ওই তিনটি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্তাপ ছড়িয়েছে সোনারগাঁ এবং আড়াইহাজারে। এর মধ্যে সোনারগাঁয়ের আনারস প্রতীকের প্রার্থী তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এবং সমর্থকদের নানা হুংকার দিয়েছেন। ভোটের মাঠে বাবুল ওমর বাবু প্রভাব বিস্তার করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অন্যান্য প্রার্থীরাও। সোনারগাঁয়ের ভোটের ভোট কেন্দ্রগুলোর পরিবেশ সুষ্ঠু ও নিরাপদ রাখাটাই এখন বাড়তি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে, প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত হওয়া বন্দর উপজেলার নির্বাচনের মতই একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে ইতিমধ্যেই নিজেদের শক্ত অবস্থানের কথা ব্যক্ত করেছেন নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, নির্বাচন অফিসার, রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা পুলিশ সুপার ও র‌্যাব-১১’র সিইও।
সম্প্রতি নির্বাচনী শৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক বলেছেন, বন্দরে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে যেই সুনাম অর্জন করা হয়েছে তা সোনারগাঁ, আড়াইহাজার ও রূপগঞ্জ উপজেলার নির্বাচনেও ধরে রাখতে চাই। মাঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি পর্যাপ্ত সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেটও নিয়োগ করা হবে।’
জেলা পুলিশ সুপার মো. গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেছেন, ‘কেউ যদি মনে করে থাকে যে, ভোট কেন্দ্রে শাক্তি খাটিয়ে নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে, তাহলে সে ভুল পথে হাঁটছে। কোনো বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করা হলেও এর পরিনতি ভয়াবহ হবে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যা যা করনীয় তা করতে প্রস্তুত রয়েছি আমরা।’