নবকুমার:
রূপগঞ্জ বিএনপিতে গ্রুপিং আর কোন্দল লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আতাঁত থামছে না দলটির নেতাদের মধ্যে। তলে তলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। থেমে নেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। গেল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ ১ (রূপগঞ্জ) আসনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী কাজী মনিরুজ্জামান তার নিজ ভোট কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজীর কাছে পরাজিত হয় । তারাব পৌরসভার কাজীপাড়ায় কাজী মনিরুজ্জামানের ভোট কেন্দ্র। সেই কেন্দ্র নৌকা প্রতীকে গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক পেয়েছেন ১হাজার ৩৯ ভোট তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কাজী মনিরুজ্জামান ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৬শ ৬৮ ভোট। নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর কাজী মনিরুজ্জামান জেলা বিএনপির সভাপতির পদ থেকে বাদ পড়েন। এলাকায় খুব কম এসেছেন। সুত্রের খবর তিনি আর্থিক সংকটের মধ্যে। আগামী নির্বাচনে রূপগঞ্জ আসন থেকে ধীনের শীষ প্রতীকে কে নির্বাচন করবে তা নিয়ে কথা হচ্ছে । কে হবে বিএনপির প্রার্থী এখন পর্যন্ত পরিস্কার হয়নি। কাকে সামনে নিয়ে এগিয়ে যাবে রূপগঞ্জ থানা বিএনপি তা পরিস্কার করেনি দলটির নেতারা। এক সময় কাজীর নেতৃত্বেই দলটির সবাই থাকত। এখন একের ভিতর অনেক । তারা আলাদা আলাদা দলীয় কর্মসূচি পালন করছেন। কাজীর প্রতিপক্ষরা সক্রিয় হচ্ছে। স্থানীয় বিএনপি এবার প্রার্থী পরিবর্তন করার দাবি তুলছে। কোণঠাসায় তৈমূর সমর্থকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, কাজী মনির সাহেব নির্বাচনের পর এলাকায় খুব কম এসেছে। এবার সে সুযোগের সন্ধানে। দল যদি ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা থাকে তাহলে তিনি প্রার্থী হবেন। তা না হলে ভিন্ন কথা।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামীলীগ নেতাদের দাপটে বিএনপি মাঠে নামতে পারছে না। রূপগঞ্জ থানা বিএনপির আহবায়ক হুমায়ুন ও সদস্য সচিব বাচ্চু তারা দুইজন দিনে দীপু ভুঁইয়ার পক্ষে আর রাতে কাজী মনিরুজ্জামানের পক্ষে থাকে। এতে নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়ছে।
বিএনপির আরেক নেতা বলেন, কাজী মনিরুজ্জামানের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠছে দীপু ভুঁইয়া। তবে কাজীর শীষ্যরাও থেমে নেই। তারা দীপুকে ঠেকাতে কৌশল অবলম্বন করছে। কমিটির জন্য কিছু নেতা আপাতত দিপুর সাথে আছে। পদ পেলে তারা দীপুর সাথে থাকবে না।
অপর দিকে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী ,চেয়ারম্যান বিএনপির আন্দোলন প্রতিরোধ করার ঘোষণা দিয়েছেন।
সম্প্রতি গোলাকান্দাইলে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ শাহ্জাহান ভুঁইয়া বলেন, বিএনপিকে আর ছাড় দেওয়া হবে না।
মুড়াপাড়া ও দাউদপুরে রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি , বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক বলেন, বিএনপি আন্দোলন করে আমাদের সরকার পতন ঘটাতে পারবে না। কারণ শেখ হাসিনার সরকার জনগণের সরকার। আমরা বিএনপির আন্দোলনকে প্রতিরোধ করবো। আমাদের কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ। যে কোনো সমস্যা মোকাবেলার জন্য আপনারা (আওয়ামীলীগ সমর্থক) রেডি থাকেন। শেখ হাসিনাকে আবার প্রধানমন্ত্রী করে ঘরে ফিরবো। আমরা শেখ হাসিনার কর্মী। আল্লাহ ছাড়া কোনো শক্তি আমাদেরকে ঠেকাতে পারবে না।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের সাথে আসবেন না , আসলে পারবেন না। যতই হুঙ্কার দেন আওয়ামী লীগ ভয় পায় না। মনে রাখবেন আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর সংগঠন। বঙ্গবন্ধুর সংগঠনকে কেউ দমাতে পারে নাই। আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ দমানোর ক্ষমতা কারও নাই। আওয়ামী লীগ আন্দোলন করতে জানে। আমরা ক্যান্টরমেন্টের লোক না, আমরা জনগণের লোক। আমরা শোককে আমরা শক্তিতে পরিণত করবো। এছাড়া আড়াইহাজার, সোনারগাঁ,সদর-বন্দর, ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপি নেতাদের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে।