নবকুমার:
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের প্রস্তাব করা পদ প্রত্যাখান করেছেন বলে জানিয়েছেন রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। তিনি বলেন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ছিলো বঙ্গবন্ধুর । সেই অনুষ্ঠানে আমি যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। ভোরে আমার মা ডাকছে, শুনেছিস তোর শেখ মুজিবকে মেরে ফেলছে। আমি উঠে পরলাম। রেডিওর কাছে গেলাম। মেজর ডালিম বলছে শেখ মুজিবকে হত্যা করা হয়েছে। এই কথা শুনার পরে আমার খুব খারাপ লাগছিলো। তখন সারাদেশে কারফিউ জারি করে খুনিচক্র। প্রতিবাদ করার সুযোগ দেয়নি। তারপরের ইতিহাস আপনাদের জানা। বঙ্গবন্ধু কখনো বিশ^াস করেনি বাঙালিরা তাকে হত্যা করবে। একুশ বছর আমরা বঙ্গবন্ধুর নাম নিতে পারিনি, বঙ্গবন্ধুর পোস্টার লাগাতে পারিনি। আমাদের উপর বহু অত্যাচার,নির্যাতন, চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিলো। খুনিচক্র আওয়ামী লীগ কর্মীদেরকে ঘর থেকে বের হতে দেয়নি। আমাদেরকে কথা বলতে দেয়নি। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পরে একদিন আমি অনেক বড় বিপদে পড়েছিলাম। রেডিও বাংলাদেশে আমাকে ধরে নিয়ে গেছিলো। বঙ্গবন্ধুর খুনিরা সেখানে বসেছিলেন। আমাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিলো। বঙ্গবন্ধুর খুনি মেজর ডালিম রেডিও বাংলাদেশে আমাকে ধরে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সভাপতি পদ দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন। সেদিন আমি বঙ্গবন্ধুর খুনিচক্রের প্রস্তাব করা পদ ঘৃনাভরে প্রত্যাখান করেছিলাম। বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছেন সেই খুনিদের সাথে আমি কখনো আপোস করিনি। আমি বলেছিলাম স্যার আমি সভাপতি হতে পারবো না—।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের শ্রেষ্ঠ নেতা। তিনি আমাদের স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু আমাকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সাথে আমার ছবি আছে।
গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতায় বসলো খুনিদেরকে পুরস্কৃত করলো, বিভিন্ন দেশে দ্রুতাবাসে চাকরি দেওয়া হলো। বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার বিচার বন্ধ করে দেওয়া হলো। ইন্ডিমিটি অধ্যাদেশ আইন পাস করা হলো। কিন্তু বঙ্গবন্ধু দুটি বেটি রেখে গেছেন (শেখ হাসিনা ,শেখ রেহেনা) । শেখ হাসিনা বাপের বেটি। ইন্ডিমিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করেছেন। কয়েকজন খুনির ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে। কয়েকজন বিদেশে পলাতক আছে। তাদের রায়ও কার্যকর করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা তাদেরকে ছাড় দেবে না। তিনি জাতির পিতার কন্যা। বঙ্গবন্ধু না থাকলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। তিনি সমগ্র জাতিকে জাগ্রত করেছিলেন।
গতকাল ১৫ আগস্ট মুড়াপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর ৪৭ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ শাহ্জাহান ভুঁইয়া, তারাব পৌরসভার মেয়র হাছিনা গাজী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল আহমেদ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নীলা, মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ আলমাছ, গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান তুহিন। এসময় কাঞ্চন পৌর মেয়র রফিক, রূপগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান মো: ছালাউদ্দিন, ভুলতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল হক, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির জনশক্তি ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব লায়ন শাহীন মালুম, আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল আজিজ, হাবিবুর রহমান হাবীব, আলীম উদ্দিন, বরকত আলী, মতি আকন্দ, তাবিবুল কাদির তমাল, রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান শাহীন, রূপগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি মাহাবুবুর রহমান মেহের, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাইম ভুঁইয়া, রূপগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এম.এ মোমেন, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মোতাহার হোসেন নাদীম, মেহেদী হাসান বাবেল, রূপগঞ্জ উপজেলা মহিলা লীগ সাধারণ সম্পাদক শীলা রানী পাল, রূপগঞ্জ উপজেলা যুব মহিলা লীগ সভাপতি ফেরদৌসী আক্তার রিয়া, সাধারণ সম্পাদক সেলিনা আক্তার রিতা, ইউপি সদস্য রেহেনা আক্তার, রফিক , লাভলী মানিক, রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়সাল শিকদার, সহ-সভাপতি রিয়াজ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মাছুম, সরকারী মুড়াপাড়া কলেজ শাখা ছাত্র সংসদের ভিপি তুহিন, জিএস সজিব,এজিএস আশিক, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আলমগীর হোসেনসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ,সহযোগী সংগঠন।
পরে অতিথিবৃন্দ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সকল শহীদ সদস্যের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।