স্টাফ রিপোর্টার
মেয়াদ ফুড়িয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের বর্তমান কমিটির। জেলা যুবদলের নতুন কমিটি গঠনের আলোচনা চলছে সর্বত্র। বিশেষ সূত্রের দাবি, যুবদলের নতুন কমিটি। তবে আসন্ন কমিটির নেতৃত্ব বর্তাবে কার কাঁধে, তা নিয়েই নানামুখি বিচার বিশ্লেষণ চলছে তৃণমূলে।
জানা গেছে, যুবদলের নেতৃত্বে আসতে চাওয়া একাধিক নেতা ইতিমধ্যেই কেন্দ্রে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। চালিয়ে যাচ্ছেন লবিং। তবে আন্দোলন সংগ্রামে শত গুরুত্ব বহন করা নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলে যোগ্য নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে পারবেতো কেন্দ্রীয় যুবদল? সেই প্রশ্ন দলটির কর্মী সমর্থকদের।
তৃণমূল কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জেলা যুবদলের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে তাদের আলোচনায় আছেন জেলা ছাত্রদলের দুই নেতা। তারা হলেন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি এবং সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম সজিব। এর মধ্যে রনিকে জেলা যুবদলের আহবায়ক এবং সজিবকে জেলা যুবদলের সদস্য সচিব হিসেবে আলোচনায় এনেছে তৃণমূল এবং প্রবীন নেতারাও।
নারায়ণগঞ্জের প্রবীণ নেতারা বলছেন, দীর্ঘদিন ছাত্রদলের নেতৃত্ব দেয়া ওই দুই নেতার এখন সময় হয়েছে ছাত্রদলের নেতৃত্ব নবীনদের হাতে তুলে দেয়ার। বয়সে যুবক, সক্রিয়তা এবং সক্ষমতা বিবেচনায় তাদের যুবদলের হাল ধরার সময় হয়েছে বলে মনে করছেন বোদ্ধা মহল।
তথ্য বলছে, জেলা ছাত্রদলে দীর্ঘদিন নেতৃত্ব দেয়ায় প্রতিটি থানা ও এলাকায় তাদের বিশাল কর্মী সমর্থক তৈরী হয়েছে। জেলা যুবদলের নেতৃত্ব পেলে ছাত্রদলের মতো যুবদলকেও চাঙ্গা করে তোলার সক্ষমতা রয়েছে রনি ও সজিবের। বিগত সময়ে ছাত্রদলের বিভিন্ন কর্মসূচিকেই উদাহরণ হিসেবে টানছেন তাদের কর্মী সমর্থকরা। ছাত্রদলের সংগঠক হিসেবে নিজেদের যোগ্যতার প্রমান রেখেছেন উভয়ে। দীর্ঘ ১৫ থেকে ২২ বছরেও না হওয়া বিভিন্ন থানা ছাত্রদলের কমিটি গঠন করে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, জেলা যুবদলের আহবায়ক বা সভাপতি পদে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় থাকা দুজন হলেন বর্তমান জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন এবং জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি। অন্যদিকে, সদস্য সচিব বা সাধারণ সম্পাদক পদে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আছেন জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম সজিব। সজিব সোনারগাঁও থানা বিএনপির আহ্বায়ক আজহারুল ইসলাম মান্নানের ছেলে। দলের যে কোন কর্মসূচিতেই তার সরব উপস্থিতি দেখা যায়। রনি যেমন বিগত সময়ে একাধিকবার কারাবন্ধি ছিলেন, তেমনই কর্মসূচী পালন করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়ে জেল খেটেছেন সজিবও।
এদিকে, যুবদলের কমিটিতে জিয়াউল হক চয়ন বিগত সময়ে কিছুটা নিষ্ক্রীয় থাকলেও বর্তমানে তিনি কেন্দ্রে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে সোনারগাঁও থানা যুবদলের সভাপতি শাহিদুর রহমান স্বপনও চাইছেন জেলা যুবদলের নেতৃত্ব। তবে, সোনারগাঁও যুবদলে কোন্দল সৃষ্টির অন্যতম কারণ ভাবা হয় স্বপনকে। যিনি অযোগ্য ব্যক্তিদের সোনারগাঁ যুবদলে পদায়ন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে, জেলা যুবদলের বর্তমান যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ভূইয়াও আলোচনায় আছেন। আরো আলোচনায় আছেন জেলা যুবদলের বর্তমান সহ সভাপতি আমিরুল ইসলাম ইমন, যুবদল নেতা সাদেকুর রহমান সাদেক, প্রমূখ।
এদিকে যুবদলে আসার বিষয়ে মশিউর রহমান রনি সংবাদচর্চাকে বলেন, ‘ছাত্রদল করার বয়স আমাদের নেই। ২০০১ সাল থেকে ছাত্রদল করে যাচ্ছি। ছাত্রদলের পর যুবদলে আসা উচিৎ। আমি সর্বদা প্রথম সাড়িতে নেতৃত্ব দিয়েছি। আমাকে নিয়ে যদি যুবদল চিন্তা করে তাহলে আমি অবশ্যই আহবায়ক প্রত্যাশি। আমাকে যদি আহবায়ক করা হয়, তাহলে যেভাবে ছাত্রদলে কাজ করেছি, তার চাইতেও বেষ্ট কিছু করার চেষ্টা করবো যুবদলে। সংগঠনের স্বার্থে যেকোন সিদ্ধান্ত মেনে নিতে প্রস্তুত আছি।’
সদস্য সচিব প্রার্থী খাইরুল ইসলাম সজিব দৈনিক সংবাদচর্চাকে বলেন, ‘যুবদলে আসার বিষয়ে কেন্দ্র থেকে আমাদের আহবান করা হয়েছে। আমরা এতে সারা দিয়েছি। আমি জেলা যুবদলের সদস্য সচিব বা সেক্রেটারী প্রার্থী। আমি এবং আমার ছাত্রদলের সভাপতি রনি দুজনেই সফলতার সাথে কাজ করেছি। কারণ ২২ বছর পর থানা ছাত্রদলের কমিটিগুলো আমরা করতে পেরেছি। যেটা পূর্বের কোন কমিটিগুলোর নেতৃবৃন্দ বিগত ২২ বছরেও পারেনি। তাই যুবদলের নেতৃত্বে আসলে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলকেও ভালো প্লাটফর্মে নিয়ে যেতে পারবো ইনশাআল্লাহ। দলের জন্য যেকোন ত্যাগ আগেও করেছি ভবিষ্যতেও করবো। আশা করছি দলের নেতারা মূল্যায়ন করবেন।’