এম.এ মোমেন
মা আমি খেলনা কিনবো। ঘোড়া কিনবো। ঘোড়ায় চড়বো। ঘোড়া ছাড়া বাড়ি যাবো না। ঘোড়া আমাকে কিনতেই হবে। এরকম দাবি নিয়ে কান্না করছিলেন মাসফিনা জান্নাত মাইমা নামের এক শিশু। তার বোন মানসুরা জান্নাত মনিমা ও মা হাসিনা আক্তার বার বার বারণ করেও কান্না থামাতে পারছিলেন না। উপায়ন্তর না দেখে মাইমাকে ৪হাজার ২’শ টাকায় একটি খেলনার ঘোড়া কিনে দিলেন তিনি। মাইমা মা ও বড় বোনের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের মঙ্গলখালী থেকে মেলায় আসছিল। তাদের সঙ্গে কথা হয় মেলার গাজী গ্রুপের প্যাভিলিয়নে। তার মতো অনেকেই খেলনা কিনার জন্য সঙ্গে থাকা অভিভাবকদের কাছে আবদার করেছেন। কারো আবদার পূরণ হয়েছে। আবার কারো আবদার পূরণ হয়নি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাচ্চাদের খেলনা দোকানগুলোতে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভিড়। বাচ্চারা হাতে খেলনা নিয়ে আরও খেলনা নেওয়ার চেষ্টা করছে। কোন কোন বাবা মা অতিরিক্ত খেলনা নিতে আপত্তি করছেন। বাচ্চাদের কেউ কেউ কান্না করছে। কারো একহাতে খেলনা। আবার কারো দু’হাতেই খেলনা। তারপরও আরো খেলনা চাই। পছন্দের খেলনা কিনতে না পাড়ায় কান্না করছে ৫ বছরের শিশু জিসান। সে ঢাকার কর্মিটোলা থেকে বাবা আব্দুল্লাহ খান আর মা রহিমা বেগমের সঙ্গে মেলায় এসেছে। কোনভাবেই তার বাবা মা পছন্দের খেলনা কিনে দিয়েও বাচ্চার মন ভরকে পারছেন না বলে জানিয়েছেন।
দোকনগুলোতে প্লাস্টিক, মাটির, সিলভার, কাঠের, রাবার সহ বিভিন্ন জিনিসের তৈরি বাচ্চাদের খেলনা রয়েছে। তবে এখানে প্লাস্টিকের খেলনার চাহিদা বেশি। রঙ বেরঙের এসকল খেলনা বাচ্চাদের নজর কাড়ছে। উপায় অন্তর না দেখে অভিভাবকরাও খেলনা ক্রয়ে ঝুঁকছেন। কেউ কেউ বাধ্য হয়েই বাচ্চাদের পচ্ছন্দের খেলনা ক্রয় করছেন।
বাচ্চাদের খেলনার দোকান সুমি এন্টারপ্রাইজের বিক্রয় প্রতিনিধি আব্দুল জব্বার বলেন, মেলায় দর্শনার্থীদের কেনাকাটার চেয়ে ঘুরাঘুরি বেশি। তবে অধিকাংশ অভিভাবকরাই বাচ্চাদের প্রিয় খেলনা ক্রয় করছেন। বাচ্চারাও খুশি মনে বাড়ি ফিরছেন।
গাজী গ্রুপের পরিচালিত বাচ্চাদের খেলনার দায়িত্বে নিয়োজিত বিক্রয় প্রতিনিধি বৃষ্টি আক্তার বলেন, দর্শনার্থীরা দামি জিনিসপত্র না কিনলেও তাদের বাচ্চাদের আবদার রক্ষা করছেন। খেলনা কিনতে কোন কোন অভিভাবকরা বাধ্য হচ্ছেন। সে কারণে খেলনার দোকনগুলোতে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লেগেই থাকে। গাজী গ্রুপের চিলড্রেন সুইং, রকিং ডিয়ার, ডলফিন স্লাইডস, রকিং জিরাফ, রকিং হর্স, রকিং ডাকের চাহিদা বেশি।
সুপ্তা ইন্টারট্রেডের বিক্রয় প্রতিনিধি সাজিদ হোসেন বলেন, প্লাস্টিকের তৈরি পিস্তল, ব্যাটারি চালিত বিভিন্ন ব্রান্ডের গাড়ি, পাযেল, খেলার উপকরণ, যন্ত্র সংগীত, উড়োজাহাজ, বায়নোকুলারের চাহিদা বেশি। বিক্রিও হচ্ছে প্রচুর। তবে শুক্র শনিবারে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের আগমন ছিল বেশি।
আর এফ এল কোম্পানির খেলনা বিভাগের বিক্রয় প্রতিনিধি মাহবুবুর রহমান বলেন, বেবি রেল ইঞ্জিন, রাইডিং বোট, হাম্পটি ডাম্পটির চাহিদা বেশি। শুক্র শনিবার দেদার্সে বিক্রি হয়েছে।
বাণিজ্য মেলার আয়োজক ইপিবির সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, মেলায় অভিভাবকদের সঙ্গে শিশু কিশোরদের আগমন ঘটে বেশি। তাই শিশু কিশোরদের পছন্দের খেলনা বিক্রিও হচ্ছে প্রচুর।