নিজস্ব প্রতিবেদনঃ ফতুল্লা থানার সন্ত্রাস বিরোধী মামলায় গ্রেপ্তার এক জেএমবি সদস্যকে ২ দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছে বিজ্ঞ আদালত।
রিমান্ডপ্রাপ্ত জেএমবি সদস্য হলেন- ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর থানার সাতুরিয়া এলাকার মৃত. খলিলুর রহমানের ছেলে মো. বিন ইয়ামিন (২২)। আসামির বর্তমান ঠিকানা ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থানার আলীনগর খালপাড় এলাকার আহমদুল্লাহ’র বাড়ীর ভাড়াটিয়া।
রোববার (৩ জানুয়ারি) সকালে আসামিকে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে উঠায় পুলিশ। পরে শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুন্নাহার ইয়াসমিন এ রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে, ৩০ ডিসেম্বর রাত ১০ টায় আসামির ভাড়াটিয়া বাড়ী থেকে আসামিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১।
রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে কোর্ট পুলিশের এএসআই মো. শাহিন বলেন, আসামির বিরুদ্ধে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ৩০ ডিসেম্বর ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থানার আলীনগর খালপাড় এলাকার আহমদুল্লাহ’র বাড়ীর ৫ম তলার রুমের ভিতর থেকে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে সময় তল্লাশী করে ২টি মোবাইল ফোন ও অনলাইনে বিভিন্ন অঞ্চলের জিএমবি’র সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করে জিহাদী কার্যক্রম পরিচালনা করার ২৩ পাতা স্ক্রীন শট প্রিন্ট উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায় সে সময় গ্রেপ্তারকৃত আসামী র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) এর সক্রিয় এহসার সদস্য ও দাওয়াতী শাখার সমন্বয়কারী। সে জেএমবির আধ্যাত্নিক নেতা আতিকুল্লাহ’র মাধ্যমে জেএমবি’তে যোগদান করেছে।
সে জেএমবি’র সাংগঠনিক কার্যক্রম বৃদ্ধিসহ ফেসবুক ও টেলিগ্রাম আইডি খুলে অনলাইনে বিভিন্ন অঞ্চলের জেএমবি’র সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের জিহাদী কাযর্ক্রম পরিচালনা করে। তহবিল সংগহ, মহিলা জেএমবি শাখার নতুন কর্ম পরিকল্পনা নির্ধারণ, প্রশিক্ষণ শিবির স্থাপন, আঞ্চলিক কর্মকান্ড পরিচালনা, জেল হাজতে আটককৃত জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) সদস্যদের মুক্ত করা, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তথা তাগুদি বাহিনীর উপর হামলা, নাশকতা কর্মকান্ড করার ষড়যন্ত্রসহ সংঘটনের নিমিত্তে প্রস্তুতিমূলক গোপন বৈঠক করার উদ্দেশ্যে গত ১২ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮ টার সময় নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন মাসদাইর সাকিন জামিয়া সৈয়দ ফজলুল করীম (রহ:) কেরাতুল কোরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসা বাড়ী নং-১৫, ব্লক-এ, ২ নং পশ্চিম মাসদাইর কবরস্থান রোড এর ধৃত আসামী মোঃ আমান উল্লাহ হাওলাদার ওরফে আবু ওসামা বিন আলী এর শয়ন কক্ষে মাদ্রাসার শিক্ষক, অভিভাবক, অনুদান প্রদানকারীর ছদ্মবেশে গ্রেফতারকৃত ও পলাতক আসামিরা মিলিত হয়।
গোপন বৈঠক শেষে পলাতক অন্যান্য জেএমবি’র বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্য উপরে উল্লিখিত পলাতক আসামীসহ আরো অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন বিভিন্ন উদ্দেশ্যে উগ্রবাদী জিহাদী বই, লিফলেট, মোবাইল ও ল্যাপটপসহ নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, ফেনী, গাজীপুর, নরসিংদী, কুমিল্লাসহ অন্যান্য এলাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয় বলে তদন্তে জানা গেছে।
প্রাথমিক তদন্তে আরও জানা যায়, উক্ত মামলার ঘটনায় সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে ও অন্যান্য সহযোগীদের সনাক্তকরণ, সঠিক নাম ঠিকানা সংগ্রহসহ তাদের নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে অপরাপর আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে বিজ্ঞ আদালতের নিদের্শে আসামিকে ২ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে।