সংবাদ বিজ্ঞপ্তি: :
ত্রিভুজ প্রেমের দ্বন্দ্বে আপন হিজড়া ভাইয়ের হাতে খুন হল পাপিয়া।
বাবা ও ভাইয়ের লাশ গুমের ব্যর্থ চেষ্টা।
মহাসড়কে লাশ ফেলে পলায়ন।
গত ২৮ মে আড়াইহাজার থানার শিমুলতলা নামকস্থানে আড়াইহাজার থানা পুলিশ একজন অজ্ঞাতনামা যুবতীর লাশ উদ্ধার করেছে। সেই লাশের পরিচয় পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় আড়াইহাজার থানা পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে আড়াইহাজার থানায় একটি মামলা করেছে। মামলা নং – ১৫ (তারিখ- ২৯/০৫/২০২০) ধারা- ৩০২/২০১/৩৪ দন্ডবিধি । উক্ত সংবাদপ্রাপ্ত হয়ে পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলার ক্রাইমসিন টিম অজ্ঞাতনামা ভিকটিমের আঙ্গুলের ছাপ গ্রহণের মাধ্যমে ভিকটিমের নাম পরিচয় উদঘাটন করে জানতে পারেন যে মৃত ভিকটিমের নাম পাপিয়া বেগম(২০)। সে সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানার হলদিপুর এলাকার জয়নাল মিয়ার মেয়ে। আড়াইহাজার থানায় মামলাটি কিছুদিন তদন্তাধীন থাকলে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার পিবিআই, নারায়ণগঞ্জ জেলার উপর অর্পিত হয়। পুলিশ সুপার, পিবিআই, নারায়ণগঞ্জ জেলার নির্দেশে এসআই(নিঃ) মোঃ তৌহিদুল ইসলাম গত ২৩/০৭/২০২০ খ্রিঃ মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন। পিবিআই, নারায়ণগঞ্জ জেলা কর্তৃক মামলাটি তদন্তাধীন থাকাকালে পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম প্রত্যক্ষ দিক নির্দেশনায় ও সহযোগীতায় গত ১৮ নভেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ তৌহিদুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্সসহ মামলার ঘটনার সাথে জড়িত আসামী মোঃ আরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। আসামী বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারা মোতাবেক জবানবন্দী প্রদান করেছে। জানা যায় আসামী মোঃ আরিফুল ইসলামের সাথে মৃত ভিকটিমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এই সম্পর্ক ভিকটিমের ভাই সাম্মি (তৃতীয় লিঙ্গ মর্মে জনশ্রুতি আছে) মেনে নিতে পারেনি। সাম্মি চাইতো ধৃত আসামী মোঃ আরিফুল ইসলাম তার সাথে প্রেমের মাধ্যমে শারিরিক সম্পর্ক গড়ে তুলুক। কিন্তু এই বিষয় পাপিয়া জানতে পারলে দুই জনের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ শুরু হয়। ঘটনারদিন গত ২৭ মে ধৃত আসামী আরিফুল, ভিকটিম পাপিয়া এবং তার ভাই সাম্মি (তৃতীয় লিঙ্গ মর্মে জনশ্রতি আছে) সবাই পাপিয়ার ভাড়া বাসায় অবস্থান করছিল। দুই জনের ঝগড়ার কারণে আরিফুল বাড়ী থেকে বের হয়ে যেতে চাইলে বৃষ্টির কারণে যেতে না পারায় তার পরিচিত একই বিল্ডিং এর ২য় তলায় জনৈক সামিয়ার বাড়ীতে অবস্থান করে। কিছুক্ষণ পরে পুনরায় আরিফুল পাপিয়ার ঘরে এসে পাপিয়ার লাশ ঘরের বিছানার উপর দেখতে পায়। এসময় ভিকটিমের গলায় ওড়না পেঁচানো ছিল এবং সাম্মি ঘর থেকে বের হয়ে পালানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু আরিফুল ঘরের ভিতরে চলে আসায় সাম্মি আরিফুলকে বলে যে, পাপয়িা বেঁচে আছে। পরে তারা একজন স্থানীয় ডাক্তারকে ডেকে এনে জানতে পারে পাপিয়া মারা গেছে। সাম্মির মাধ্যমে তার বাবা জয়নাল, পাপিয়ার মৃত্যুর খবর জানতে পেরে ঘটনাস্থলে আসে। পরে ভিকটিমের পিতা জয়নালের পরিকল্পনামতে ধৃত আসামী মোঃ আরিফুল ইসলাম, জয়নালের ছেলে মামুন এবং সাম্মি মিলে মৃত পাপিয়ার লাশ ভৈরব ব্রীজ থেকে নদীতে ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনামতে তারা সবাই মিলে একটি এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে মৃত ভিকটিম পাপিয়াকে এ্যাম্বুলেন্সে তুলে নিয়ে রওয়ানা হয়। কিন্তু পথিমধ্যে পুলিশের চেক পোষ্ট থাকায় তারা আড়াইহাজার থানাধীন শিমুলতলা নামকস্থানে রাস্তার পাশে জঙ্গলের ভিতরে মৃত ভিকটিম পাপিয়ার লাশ ফেলে দিয়ে চলে যায়। ধৃত আসামী মোঃ আরিফুল ইসলাম বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃকাঃবিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে যে, সাম্মি (তৃতীয় লিঙ্গ মর্মে জনশ্রুতি আছে) পাপিয়াকে হত্যা করেছে। পরবর্তীতে পূর্বে গ্রেফতারকৃত আসামী ভিকটিম পাপিয়ার পিতা জয়নাল মিয়াকে ২(দুই) দিনের পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার পরিকল্পনামতেই সে সহ তার সহযোগী আসামীরা ভিকটিমের লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে আড়াইহাজার থানাধীন শিমুলতলা নামক স্থানে জঙ্গলের মধ্যে ফেলে গেছে মর্মে গত ২১ নভেম্বর বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃকাঃবিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। আরিফুল, সাম্মি মামুন ও জয়নাল ভিকটিম পাপিয়ার লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে রাস্তার পার্শ্বে ফেলে রেখে চলে যায়। মামলাটি পিবিআই, নারায়ণগঞ্জ জেলা কর্তৃক তদন্তাধীন রয়েছে। রবিবার ( ২২ নভেম্বর) সংবাদচর্চাকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন(পিবিআই) নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।