আজ বুধবার, ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ফের ভুল প্রতিবেদন, আদালতে হাজির ‘নিহত’ যুবক

ফতুল্লা থানায় একটি অপহরণ মামলায় ৬ বছর পর মামুন নামের যুবকের আদালতে হাজির হওয়ার ঘটনায় সিআইডি ও পুলিশের ৩ জনকে স্ব-শরীরে তলব করেছে আদালত।

১ নভেম্বর রোববার নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা ফেরদৌসের আদালত ওই আদেশ দেন।

তাঁরা হলেন ফতুল্লা মডেল থানার এসআই মিজানুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ ও এসআই জিয়াউদ্দিন উজ্জল।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১০ মে মামুন অপহরণ হয়েছে অভিযোগ এনে দুই বছর পর ২০১৬ সালের ৯ মে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন বাবা আবুল কালাম। ওই মামলায় ৬ জনকে বিবাদী করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামুনকে অপহরণের পর গুমের অভিযোগ করা হয়েছিল।

বিবাদীরা হলো তাসলিমা, রকমত, রফিক, সাগর, সাত্তার, সোহেল। মামলার পর পুলিশ অভিযুক্ত ৬জনকেই গ্রেপ্তার করে। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। অভিযোগ রয়েছে রিমান্ডে থাকা সময়ে গ্রেপ্তারকৃত ৬ জনকে মারধর করা হয়। এবং ৬জনকেই ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদানের জন্য আদালতে পাঠানো হয়। কিন্তু তাদের কেউ আদালতে জবানবন্দী দেয়নি।

ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন ফতুল্লা মডেল থানার এস আই মিজানুর রহমান। তিনি আদালতে আসামীদের রিমান্ড চাওয়ার সময়ে আর্জিতে উল্লেখ করেন, ‘খালাতো বোন তাসলিমা ২০১৪ সালের ১০ মে মামুনকে ডেকে নিয়ে কৌশলে অপহরণ করে বিষাক্ত শরবত পান করিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যায় ফেলে দিয়ে গুম করেছে।’

পরবর্তীতে মামলাটি পুলিশের অপরাধ বিভাগ সিআইডিকে ন্যস্ত করা হয়। সিআইডি সহকারী পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর মামলার চার্জশীট আদালতে দাখিল করেন। এতে মামলার এজাহারভুক্ত ৬জনকেই অভিযুক্ত করেন। সাক্ষী করা হয়েছিল ২১ জনকে।

চার্জশীটে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৪ সালের ১০ মে খালাতো বোন তাসলিমাকে দিয়ে কৌশলে মামুনকে বাড়ি ডেকে আনা হয়। পরবর্তীতে মামনুকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় তাসলিমা। কিন্তু বিয়েতে রাজী না হওয়াতে বিবাদী ৬ জন মিলে মামুনকে কোমল পানির সঙ্গে চেতনানাশক দ্রব্য খাইয়ে অচেতন করে সিএনজি চালিতা অটো রিকশা করে অপহরণ করে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়। তবে কোথায় কিভাবে কি অবস্থায় রাখা হয়েছে সেটা জানা যায়নি।’

মামুন আদালতকে জানান, তিনি বাবা মায়ের সঙ্গে রাগ করে বাড়ি ছেড়েছিলেন। প্ররোচনায় পরে তার বাবা নিখোঁজের দুই বছর পর অপহরণ করে হত্যার মামলা করেন।

তাসলিমা বলেন, ‘ছয় বছর ধরে হয়রানি করেছে আমার পরিবারকে। মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর রিমান্ডে এনে আত্যাচার করেছেন দারোগা মিজানুর রহমান।

‘মামুনকে হত্যার মিথ্যা কথা স্বীকার করার জন্য মেরেছেন। খুন, অপহরণ না করে মিথ্যা মামলায় সাজা খেটেছি। যারা এই মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করেছে তাদের শাস্তি চাই।’

তাসলিমার ভাই সোহেল মিয়া বলেন, ‘এসআই মিজান রিমান্ডে নিয়ে গাছমা দিয়ে মুখ বাইন্ধা মারছে। সে মিথ্যা বলাতে চেয়েছিল যে, আমরা খুন করেছি। কিন্তু আমরা বলি মিথ্যা বলি নাই। আমরা স্বীকার করি নাই।’