আজ সোমবার, ১লা পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সুযোগ ছিলো তাদের

সংবাদচর্চা রিপোর্ট

নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের তিন সাংগঠনিক সম্পাদককে একসঙ্গে কবে দেখা গেছে তা কেউ বলতে পারেনি। তবে সাংগঠনিক কাজে তারা তেমন তৎপর নয় বলে অভিযোগ খোদ দলীয় নেতাকর্মীদের। গোটা জেলার দায়িত্ব কাঁধে পরলেও তারা অনেকটা আঞ্চলিক নেতা বনে গেছেন বলে মনে করেন তারা। যে কারনে ফতুল্লার পশ্চিম তল্লায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনার পরও নেননি কোন উদ্যোগ। বিশ্লেষকরা বলছেন, এখানে সুযোগ ছিলো দলের ব্যাপ্তি ঘটানোর। যা তাদের দায়িত্বে পরে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হলেন সুন্দর আলী, মীর সোহেল আলী ও আবু সুফিয়ান। এরমধ্যে সুন্দর আলী আড়াইহাজার পৌরসভার মেয়র। মীর সোহেল ফতুল্লা থানা যুবলীগের সভাপতি এবং সুফিয়ান নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ঠিকাদার। দলীয় সূত্রে জানা যায়, এ তিনজন সাংগঠনিক একসঙ্গে বসে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখেননি। তাদের তিনজনের মধ্যে পৌর মেয়র সুন্দর আলী পৌরসভার কাজে ব্যস্ত থাকেন বেশী। মীর সোহেলকে তার নেতা শামীম ওসমানের সভা-সমাবেশে বেশী দেখা গেলেও দলের কাজে তেমন দেখা যায়না। অপরদিকে সুফিয়ান ঠিকাদারি কাজেই সময় দেন বেশী। অবশ্য তার পরিবারের সদস্যরাও ঠিকাদারি সহ দোকান ভাড়া তোলার কাজে সহযোগীতা করেন। দলের প্রবীণ নেতারা জানান, সুন্দর আলী দক্ষ সংগঠক ও ঠান্ডা মাথার রাজনীতিক। অপরদিকে মীর সোহেলের অনুগত বেশ নেতাকর্মী রয়েছে। যুবলীগের রাজনীতি করায় দক্ষতা রয়েছে। সুফিয়ানকে আগে কখনও কোন বড় পদে দেখা যায়নি। ছাত্রলীগ-যুবলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন না তিনি। হঠাৎ করেই জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছেন। বন্দর উপজেলা নির্বাচনের সময়ে তিনি যতটা তৎপর ছিলেন এখন আর তা নেই। দলের নেতাকর্মীদের মতে, তিন সাংগঠনিক সম্পাদক থাকেন তিন উপজেলায়। তাই তারা সব কাজে এগিয়ে আসেননা। পশ্চিম তল্লায় বাইতুস সালাত মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায়ও দেখা মেলেনি তাদের।

এ বিষয়ে মীর সোহেল আলী জানান, তল্লা মসজিদের বিষয়ে এখনও কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। আমরা দুই তিনদিনের মধ্যে বসবো। সাংগঠনিক সম্পাদকদের একসঙ্গে বসা নিয়ে তিনি জানান, কখনও কখনও আমরা একসঙ্গে বসি। তবে ব্যক্তি ব্যস্ততার কারনে অনেক সময় তা সম্ভব হয় না। নিজেকে সক্রিয় দাবি করে মীর সোহেল জানান, আমি চেষ্টা করেছি কমিটির সব মিটিংয়ে থাকার।

অভিধানিক মতে, সাংগঠনিক সম্পাদক সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য নিয়োজিত থাকবেন। সংগঠনের শৃঙ্খলা এবং ব্যাপ্তি ঘটানোর জন্য নিবেদিত প্রাণ হিসেবে কাজ করবেন। তবে দলীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ, এমন কোন উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকদের। দলীয় সূত্র মতে, তিনজন তিন ঘরানার নেতা।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে আবু সুফিয়ান জানান, আমাদের তিন সাংগঠনিক সম্পাদকের মধ্যে কোন দূরত্ব নেই তার মতে, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কিছু বিতর্কিত কর্মকান্ডে কমিটির কার্যক্রম কিছুটা ব্যহত হয়েছে।  তল্লা মসজিদের বিষয়ে  বৃহস্পতিবার সভা হবে বলে জানান তিনি। অপর সাংগঠনিক সম্পাদক ও আড়াইহাজার পৌর মেয়র সুন্দর আলীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও শেষতক যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।