আজ বুধবার, ৩রা পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

স্ত্রীকে গায়ে আগুন দিয়ে হত্যা, স্বামীসহ ৫ জনের জামিন নামঞ্জুর

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় নিপা নামের এক গৃহবধুকে আগুন দিয়ে হত্যা মামলায় স্বামী, শশুর-শাশুরী সহ ৫ জনের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। রবিবার সকালে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাওসার আলমের আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন চাইলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন।

এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর ৫দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে দগ্ধ স্ত্রী নিপা আক্তার (২০) মৃত্যু হয়। জানা যায়, ১ সেপ্টেম্বর বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চর-ঘারমোড়া এলাকায় পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করে নিপার স্বামী সজল ও তার পরিবারের সদস্যরা। এতে নিপার শরীরের ৯০ ভাগ দগ্ধ হয়। প্রতিবেশীরা মুমূর্ষু অবস্থায় নিপাকে নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে মারা যান নিপা।

এ ঘটনায় ২ সেপ্টেম্বর নিপার বড় ভাই মোহাম্মদ হোসেন বন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় নিপার স্বামী সজল, শ্বশুর নাসের, শাশুড়ি আক্তারী বেগম, দেবর মুন্না ও অনিককে আসামী করা হয়। এ দিনে সজল ও তার পরিবার আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ৩ বছর আগে বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিন চরঘারমোড়া এলাকার নাসের মিয়ার ছেলে সজলের সঙ্গে নিপা আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে এক বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে স্বামী সজল ও শ্বশুর নাসের ও শাশুড়ি আক্তারী বেগম, দেবর মুন্না ও অনিক যৌতুকের জন্য নিপাকে নানাভাবে নির্যাতন করে আসছিল। যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় সজল অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। সজলের পরকীয়ার বিষয়টি নিপা আক্তার জেনে যাওয়ায় তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। ১ সেপ্টেম্বর স্বামী সজল, শ্বশুর নাসের, শাশুড়ি আক্তারী বেগম, দেবর মুন্না ও অনিক নিপাকে বেদম পিটিয়ে আহত করে। এরপর গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ৬ সেপ্টেম্বর সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সামনে মানববন্ধন করেন নিহত নিপার ভাই মোহাম্মদ হোসেন। তিনি তার বোনের হত্যার বিচারের দাবী করেন।