আজ বুধবার, ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

খোরশেদ না লিপি ওসমান !

সংবাদচর্চা রিপোর্ট
কোন লোভ লালসা ছাড়াই ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতিতেও মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দাফন আর মৃতদেহ দাহের মতো কাজ করছেন সহযোদ্ধাদের নিয়ে। এজন্য তিনি যেমন সুনাম কুঁড়িয়েছেন তেমনি তাকে নিয়ে হচ্ছে নানা আলোচনা। একটি মহল বলছে, আগামীতে তিনি মেয়র নির্বাচন করবেন। কেউ কেউ বলছে, ওসমান পরিবার আছে তার পেছনে।
খোরশেদদের পরিবার রাজনৈতিক পরিবার হিসেবে পরিচিত। তার বড় ভাই এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা। তার আরেক ভাই সাব্বির আলম খন্দকার ব্যবসাযী নেতা ছিলেন। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কথা বলায় তাকে সন্ত্রাসীরা হত্যা করে। খোরশেদ নিজেও বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। মহানগর যুবদলের সভাপতি তিনি। খোরশেদরা তিন ভাই নেতা হলেও জনপ্রতিনিধি হয়েছেন শুধুমাত্র খোরশেদই। তাও একবার দুইবার নয় তিনবার একটি ওয়াার্ডের কাউন্সিলর তিনি। ২০০৩ সালে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার নির্বাচিত হন তিনি। এরপর সিটি কর্পোরেশন গঠিত হলে এ ওয়ার্ডই ১৩ নম্বর করা হয়। ২০১১ ও ২০১৬ সালের নির্বাচনে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে এখন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছেন। জনশ্রুতি রয়েছে, বিএনপির রাজনীতি করলেও এ ওয়ার্ডের অনেক আওয়ামীলীগ সমর্থকও খোরশেদকে ভোট দেয়।
হয়তো সেসব সমর্থক অথবা কোন একটি গোষ্ঠি এবার খোরশেদকে মেয়র পদে দেখতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নক করছেন। তারা খোরশেদকে করোনা হিরো উপাধি দিয়ে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর প্রতিদ্বন্দ্বি হিসেবে পরিচিতি পাইয়ে দিতে চেষ্টা করছেন। তবে এ প্রসঙ্গে মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেছেন, কিছু লোক আমাকে ও মেয়রকে নিয়ে তারবেতাল পাকাচ্ছে। করোনা যোদ্ধা হিসেবে সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহনযোগ্যতা পাওয়ার পর মিডিয়া যখন খোরশেদের কর্মকান্ড ফলাও করে প্রচার শুরু করে তখনই তার দিকে নজর পরে অনেকের। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সেলিম ওসমান এমপি তাকে হিরো বলে সম্বোধন করেছেন। সূত্র জানায়, শামীম ওসমান খোরশেদকে ফোন পর্যন্ত করেছেন। এসব কারনে কেউ কেউ হয়তো ভাবছেন আগামী সিটি নির্বাচনে খোরশেদকে মেয়র পদে সমর্থন দিবে ওসমান পরিবার। তবে রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের মতে, নাসিক নির্বাচন নিয়ে ওসমান পরিবারে একটা সুক্ষè ব্যথা রয়েছে। ২০১১ সালের নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়েও আইভীর কাছে পরাজয়ের সেই গ্লানি এখনও ভুলতে পারেনি শামীম ওসমান। তাই পরবর্তী নির্বাচনে তিনি প্রার্থী না হলেও দলের মনোনয়ন অন্য কাউকে এনে দিতে চেষ্টা করেছিলেন। তার পরামর্শে ২০১৬ সালের নির্বাচনে আইভীর নাম বাদ দিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগ থেকে তিনজনের নাম পাঠানো হয়েছিলো। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের প্রতি তার সমর্থনের কথাও অনেকে জানেন। তবে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের হাই কমান্ড মেয়র পদে সেলিনা হায়াৎ আইভীকেই বেছে নেন। ওই নির্বাচনে দলের নির্দেশে শামীম ওসমান ও তার অনুগতরা আইভীর পক্ষে মাঠে কাজ করলেও তা তেমন আমলে নেয়নি আইভীপন্থিরা। তারা মনে প্রাণে বিশ্বাস শামীম ওসমানের অনুগতদের কাজ বিশ্বাসও করেননি। ধারণা করা হয় এজন্যই নিয়ম ভেঙ্গে আইভীকে ভোট দিয়ে তা দেখিয়েছিলেন শামীম ওসমান।
এতসব কিছুর পরও আইভী-শামীম ওসমান দ্বন্দ্ব এখনও রয়ে গেছে বলে মনে করেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, নাসিক মেয়র পদ নিয়ে যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিলো পরবর্তীতে তার ডালপালা আরও বেড়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, আগামী নির্বাচনেও মেয়র পদে আইভীর প্রতিদ্বন্দ্বি কাউকে বেছে নিবে ওসমান পরিবার। সেই হিসেবে প্রথমেই যার নাম আসে তিনি হলেন শামীম ওসমানের স্ত্রী সালমা ওসমান লিপি। তার পক্ষে দলীয় সমর্থন আনতে যারপরনাই চেষ্টা চালাবেন তারা। এ চেষ্টা যদি বিফল হয় তাহলে অন্য কারও পক্ষেও যেতে পারেন তারা। তাই যারা বলছেন খোরশেদকে ওসমান পরিবার সমর্থন দিবে তা কতটা সত্যি তা বুঝতে অপেক্ষা করতে হবে নির্বাচন ঘনিয়ে আসা পর্যন্ত।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ