টেন্ডার সম্রাট জিকে শামীমের ১৯৪ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের (অবরুদ্ধ) আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ এ আদেশ দেন।
জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বলেন, জি কে শামীমের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় করা অর্থ পাচার আইনের মামলাটি পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত করছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবু সাঈদ ব্যাংক হিসাবগুলো ফ্রিজের আবেদন করেন।
শুনানি শেষে আদালত এসব ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ দেন। হিসাবগুলোয় কয়েকশ’ কোটি টাকা রক্ষিত আছে। আবেদনে বলা হয়, এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম ও অন্য আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন নিজ নামীয় লাইসেন্স করা অস্ত্র প্রকাশ্য বহন, প্রদর্শন ও ব্যবহার করে আসছে।
তারা লোকজনের মধ্যে ভয়-ভীতি সৃষ্টির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের টেন্ডারবাজি, মাদক ও জুয়ার ব্যবসাসহ স্থানীয় বাস টার্মিনাল, গরুর হাটবাজার নিয়ন্ত্রণসহ চাঁদাবাজি করে স্বনামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ-বৈভবের মালিক হয়।
দীর্ঘদিন টেন্ডারবাজি, মাদক ও জুয়ার ব্যবসাসহ স্থানীয় বাস টার্মিনাল, গরুর হাটবাজারে চাঁদাবাজি করে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। চাঁদাবাজি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে দেশে ও বিদেশে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তরসহ নিজের হিসাবে বিপুল পরিমাণ টাকা গচ্ছিত রাখে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর গুলশানের নিকেতনে নিজ কার্যালয় থেকে আসামি জি কে শামীমসহ সাত দেহরক্ষীকে আটকের সময় নগদ ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা, ৯ হাজার ইউএস ডলার, ৭৫২ সিঙ্গাপুর ডলার, জি কে শামীমের মায়ের নামে ট্রাস্ট ব্যাংক নারায়ণগঞ্জ শাখায় ২৫ কোটি টাকা করে ৪টি এবং ২৭ লাখ ৬০ হাজার টাকার একটি ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক মহাখালী শাখায় ১০ কোটি টাকা করে ৪টি এফডিআর, শামীমের নামে ট্রাস্ট ব্যাংক কেরানীগঞ্জ শাখায় ২৫ কোটি টাকার একটি এফডিআর জব্দ করা হয়। এ ছাড়া ৩৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের চেকবই উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়। মামলায় অভিযোগ করা হয়, জি কে শামীম একজন চিহ্নিত চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, অবৈধ মাদক এবং জুয়ার ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তার সহযোগীরা উচ্চ বেতনভোগী দুষ্কর্মের সহযোগী। তারা অস্ত্রের লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করে প্রকাশ্যে এসব অস্ত্রশস্ত্র বহন ও প্রদর্শন করেছেন।
উল্লেখ্য,সোনারগাঁ উপজেলার সন্মানদী ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত মো. আফসার উদ্দিন মাস্টারের ছেলে শামীম।