রহস্যজনক মৃত্যুর আগে ভারতকে সমুদ্র বন্দর, পানি ও গ্যাস দেয়ার চুক্তির বিরোধিতা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ। শনিবার বিকাল সাড়ে ৫ টায় তিনি তার ফেসবুকে এই স্ট্যাটাসটি দেন। এরপর রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার।
আবরারে সহপাঠীরা জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আবরার সক্রিয় ছিলেন। লেখালেখি করতেন। এ কারণে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন তারা।
আবরার সর্বশেষ ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘‘১.৪৭ এ দেশভাগের পর দেশের পশ্চিমাংশে কোন সমুদ্রবন্দর ছিল না। তৎকালীন সরকার ৬ মাসের জন্য কলকাতা বন্দর ব্যবহারের জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করল। কিন্তু দাদারা নিজেদের রাস্তা নিজেদের মাপার পরামর্শ দিছিলো। বাধ্য হয়ে দুর্ভিক্ষ দমনে উদ্বোধনের আগেই মংলা বন্দর খুলে দেওয়া হয়েছিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজ ইন্ডিয়াকে সে মংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য হাত পাততে হচ্ছে।
২.কাবেরি নদীর পানি ছাড়াছাড়ি নিয়ে কানাড়ি আর তামিলদের কামড়াকামড়ি কয়েকবছর আগে শিরোনাম হয়েছিল। যে দেশের এক রাজ্যই অন্যকে পানি দিতে চাই না সেখানে আমরা বিনিময় ছাড়া দিনে দেড়লাখ কিউবিক মিটার পানি দিব।
৩.কয়েকবছর আগে নিজেদের সম্পদ রক্ষার দোহাই দিয়ে উত্তরভারত কয়লা-পাথর রপ্তানি বন্ধ করেছে অথচ আমরা তাদের গ্যাস দিব। যেখানে গ্যাসের অভাবে নিজেদের কারখানা বন্ধ করা লাগে সেখানে নিজের সম্পদ দিয়ে বন্ধুর বাতি জ্বালাব।
হয়তো এসুখের খোঁজেই কবি লিখেছেন-
“পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি
এ জীবন মন সকলি দাও,
তার মত সুখ কোথাও কি আছে
আপনার কথা ভুলিয়া যাও।”
আবারের মৃত্যু নিয়ে চকবাজার থানার ওসি মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, ভোরে শেরে বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে একজন ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার পায়ের উপরে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
পুলিশের এই কর্মকর্তার ধারণা আবরার ফাহাদকে রাত ২টা থেকে আড়াইটার মধ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হতে পারে। তবে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানান ওসি।