আজ মঙ্গলবার, ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বিদ্রোহী ঠেকাতে ব্যর্থ বিএনপি

নবকুমার:
সদ্য সমাপ্ত নারায়ণগঞ্জের চারটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট বর্জন করেছে বিএনপি । ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় সোনারগা বন্দর উপজেলা হাত ছাড়া করছে দলটি। সেখানে বিএনপির উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলো যথাক্রমে আজাহারুল ইসলাম মান্নান , মুকুল । বিএনপি তাদের পূর্বের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে। ইউনিয়ন পরিষদ সহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এখন থেকে প্রার্থী দেবে বিএনপি। কেন্দ্র থেকে শর্ত দেয়া হয়েছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপির নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করতে হবে। দলীয় প্রতীক ধানের শীর্ষ বরাদ্দ দেবে না দলটি। আসন্ন রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন পৌর সভা নিবাচন আগামী ২৫ জুলাই। দলের দুঃসময়েও কাঞ্চন পৌর নির্বাচনে একক প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপি। সেখানে বিএনপির তিন জন প্রার্থী রয়েছে। তারা হলেন , বর্তমান মেয়র কাঞ্চন পৌরসভা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান আবুল বাশার বাদশা, সাবেক মেয়র কাঞ্চন পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মজিবুর রহমান ভূইয়া, জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম ইমন।

জানা গেছে রূপগঞ্জে বিএনপির তিন জন হেভিওয়েট নেতা রয়েছে। তারা হলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এড.তৈমূর আলম খন্দকার, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দীপু ভূইয়া, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির।তারা কাঞ্চন পৌর বিএনপিকে কেন্দ্রের নির্দেশনা মানাতে পারেন নাই। দিতে পারেন নাই একক প্রার্থী। তবে কাঞ্চনে কে দলের প্রার্থী কে বিদ্রোহী প্রার্থী সে বিষয় পরিস্কার করে নি বিএনপি। যারা ওখানে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে রয়েছে তাদের ব্যাপারে জেলা ও উপজেলা বিএনপি কোন ব্যবস্থা নেয় নি। দলের দুঃসময়ে হেভিওয়েট নেতাদের এলাকায় যদি এমন হয় তাহলে বাকী জায়গায় কি হবে? সে দলের আন্দোলনের ফল কি দাঁড়াবে সেই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে জেলা জুড়ে।

কাঞ্চনে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী থাকার দায় কাজী মনির দীপু -তৈমূর এড়াতে পারে না। কারণ তারা তিনজন কাঞ্চন পৌর বিএনপিকে নিয়ন্ত্রণ করেন। কাঞ্চনে বিএনপির দুইটি গ্রুপ রয়েছে একটি কাজী মনিরুজ্জামানের অপরটি এড.তৈমূর আলম ও দীপু ভূইয়ার। তারা কাউ কে ছাড় দিতে নারাজ।

তবে কাজী মনিরুজ্জামান- তৈমূর আলম যদি নিজ এলাকায় কেন্দ্রীয় নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে না পারেন তাহলে জেলার অন্য উপজেলা গুলোতে তাদের নির্দেশনা তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীরা মানবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আর তাদের পদে থাকার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। একদিকে কাঞ্চন পৌর সভা ধরে রাখা অন্য দিকে কোন্দল নিরসন করা জেলা বিএনপির এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্চ। এদিকে কাঞ্চন পৌর সভাকে বিএনপির হাত থেকে উদ্ধার করতে কোমর বেধে মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দল সেখানে রফিকুল ইসলাম কে একক প্রার্থী দিয়েছেন। তাদের মধ্যে কোন বিরোধ দেখা যাচ্ছে না।

গতকাল (১০ জুলাই) প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মেয়র পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী রফিকুল ইসলাম পেয়েছেন নৌকা প্রতীক। বর্তমান মেয়র কাঞ্চন পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান আবুল বাশার বাদশা পেয়েছেন নারিকেল গাছ প্রতীক, সাবেক মেয়র কাঞ্চন পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মজিবুর রহমান ভূইয়া পেয়েছেন জগ প্রতীক, জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম ইমন পেয়েছেন মোবাইল ফোন প্রতীক ।

তবে কাঞ্চনে একাধিক প্রার্থী থাকায় হতাশ তৃণমূল বিএনপি। আর কাঞ্চন পৌর নির্বাচনের প্রভাব জেলা জুড়ে বিএনপিতে পড়ছে। অনেক বিএনপির শুভাকাঙ্খী বলছে একাধিক প্রার্থী থাকায় বিএনপি হারতে পারে। আবার ক্ষমতাসীনরা মনে করছে এ নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেয়া নতুন ষড়যন্ত্রের অংশ।

জানা গেছে গত নির্বাচনে বিএনপি সেখানে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিলো। এবার আওয়ামী লীগের জয়ের পাল্লা ভারী। বিএনপি শেষ পর্যন্ত যদি তাদের দুজন প্রার্থীকে বসিয়ে দিতে পারেন তাহলে অন্য হিসাব। তবে সেটা বিএনপির জন্য বড় কঠিন কাজ। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে তাদের দ্বন্দ্ব তত মাথাচারা দিয়ে উঠছে। নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সহ সভাপতি এড. সাখাওয়াত হোসেন খান ইমনের পক্ষে কাজ করছে। অন্য দিকে কাজী মনির তৈমূর দীপু ঐক্যবদ্ধ হতে পারছে না। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত চালকের আসনে রয়েছে আওয়ামী লীগ প্রার্থী।

প্রসঙ্গত ইভিএম পদ্ধতিতে কাঞ্চনে ভোট গ্রহন করা হবে। সেখানে মোট ভোটার ৩৫ হাজার ৬’শ ৭৫ জন । তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৮ হাজার ১’শ ৮৫ জন। মহিলা ভোটার ১৭ হাজার ৫’শ জন।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ