আজ শুক্রবার, ২২শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

দুই মেরুতেই এসপির অ্যাকশন

সংবাদচর্চা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ। প্রথম থেকেই একের পর এক অ্যাকশনে নগরীর সাধারণ মানুষের মধ্যে যেমন দিয়েছেন স্বস্তি তেমন নিজেও হয়েছেন আলোচিত। তবে, তার সবচেয়ে বেশি অ্যাকশন ছিলো উত্তর মেরু অর্থ্যাৎ নারায়ণগঞ্জ- ৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের নির্বাচনী এলাকা তথা ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ, সেই সাথে শামীম অনুসারীদের দিকে। এমন অনেক গুঞ্জন শোনা যেতো নগরড়জুড়ে। সেই গুঞ্জনের ধোয়াশা কাটিয়ে দক্ষিণ মেরু অর্থ্যাৎ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী অনুসারীদের অপরাধের বিপরীতে ঈদানিং পুলিশ সুপারের অ্যাকশন পরিলক্ষিত হচ্ছে। পুরোপুরি অপরাধের বিপরীতে এসপি, তার হাত থেকে ছাড় পায়নি কেউ। দুই মেরুতেই এসপির অ্যাকশন চলছে সমানতালে। এমনটাই মনে করছেন নগরীর সাধারণ মানুষ।

নগরীর মীর জুমলা সড়কটি দখল করে অবৈধ বাজার বসানোর অভিযোগ উঠেছিলো আইভীর বেয়াই ও প্রয়াত শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলামের ছেলে ফয়জুল ইসলাম রুবেলের বিরুদ্ধে। সেই প্রেক্ষিতে এসপির নির্দেশে গত ২৭ জুন রাতে দিগু বাবুর বাজার অর্থ্যাৎ মীর জুমলা সড়ক জনসাধারণের স্বার্থে ফাকাঁ করে দেয় সদর থানা পুলিশ। অভিযোগ উঠে, শুধু দখলই নয় মীর জুমলা সড়কে বাজার তৈরী করে প্রায় পাচঁশ চৌকি বসিয়ে প্রতিটি সেই চৌকি থেকে ৩০০ করে টাকা উঠিয়ে, প্রতিদিন প্রায় ১ থেকে দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নিতো মেয়রের ভাই রিপনের শ্যালক রুবেল। এ নিয়ে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় একাধিক সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। আর ঠিক তখনই এসপির নির্দেশে পুরো বাজার ফাঁকা করে দিয়েছে পুলিশ।

এই অ্যাকশনের পূর্বে এসপির নির্দেশে নগরীর সবচেয়ে আলোচিত ফুটপাতের হকার উচ্ছেদ করে পুলিশ। যেই ফুটপাত নিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন মেয়র আইভী ও সাংসদ শামীম ওসমান। দুই পক্ষের নানা অভিযোগে সেই সময় শহর হয়েছিলো উত্তপ্ত। তারপরেও কোন স্থায়ী সমাধান পাওয়া যায়নি হকার ইস্যুতে। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন কৃর্তক উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করলেও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় ফের দু’একদিন পর আবার ফুটপাতে হকাররা যে যার জায়গাতে ঠিকই বসে পরতো। যে ফুটপাত সমস্যা নিয়ে মেয়র, সাংসদ ও নারায়ণগঞ্জের অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা সমাধান করতে পারে নি। সেই সমস্যা চুটকিতেই সমাধান করে দিয়েছেন এসপি হারুন।

ফুটপাতে পুলিশের উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত ফুটপাতে কোন হকার দেখা যায়নি। কেউ প্রভাব খাটিয়ে সেখানে বসতেও সাহসও পায়নি। যার ফলে ফুটপাত দিয়ে নগরবাসী স্বস্তিতে হাটঁতে, চলতে পারছে। ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদের পর মীর জুমলা সড়কেও ওপর অবৈধভাবে বসানো বাজার উঠিয়ে দিয়েছে প্রশাসন।

সবমিলিয়ে নগরবাসীর ভাষ্য, স্বজনপ্রীতি না দেখনো এসপি হারুনের প্রত্যেকটা অ্যাকশনই বাহবা পাওয়ার যোগ্য। মেরুভেদে যেখানে অপরাধ দেখছেন সেখানেই হানা দিচ্ছেন প্রশাসন। উত্তর মেরুর নেতাকর্মীদের অপরাধে জবাব দেয়ায় এক শ্রেণীর মানুষ প্রশ্ন তুলেছিলেন যে এসপি শুধু শামীম ওসমান অনুসারীদের পিছনেই পড়ে থাকেন। আবার অনেকেই বলেছিলেন আইভীর বেয়াই বলেই দেখার কেউ নেই। তাদের অপরাধ এসপি দেখেনা। তবে সেই সকল মানুষদের দাত ভাঙা জবাব দিয়ে এসপি হারুন। সর্বোপরি অপরাধের বিপরীতে এসপি হারুন, তার কাছ থেকে ছাড় পায়নি কেউ।