কথিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে-ডিসি জসিম উদ্দিন
কথিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা নেয়া দরকার- মাসুম
পত্রিকার মালিকদের পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে হবে- আবদুস সালাম
সকল পেশাদার সাংবাদিকদের তালিকা জেলা প্রশাসক কে করতে হবে – মুন্না খান
যারা প্রতারণা করে তারা সাংবাদিক না- কামাল হোসেন
সৈয়দ মোহাম্মদ রিফাত:
সংবাদপত্র রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ আর সাংবাদিক জাতির বিবেক, আয়না। একটি রাষ্ট্রে যদি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা না থাকে তাহলে ওই রাষ্ট্রে অন্ধকার নেমে আসে। সে দেশের গণতন্ত্র হয়ে পরে মূল্যহীন। আর তাই পেশাটিকে অনেক গুরুত্ব ও সম্মানের সহিত দেখা হয়। মূল্যবান এই পেশা বিতর্কিত হচ্ছে স্বঘোষিত ধান্দাবাজদের ‘সাংবাদিক’ হয়ে গড়ে ওঠাকে কেন্দ্র করে। পাড়া মহল্লায় যেকোন নামে অনলাইন খুলে কিংবা এক পাতার কিছু একটা ছাপিয়েই কিছু লোক স্বঘোষিত সাংবাদিক হয়ে পরছে। যেনতেন প্রকারে আন্ডারগ্রাউন্ড একটি পত্রিকা বের করে কিংবা অনলাইন পোর্টাল চালু করে চলছে ব্ল্যাকমেইলিং আর চাঁদাবাজির উৎসব। সর্বোপরি, ভুয়া সাংবাদিকে ছেয়ে গেছে পুরো নারায়ণগঞ্জ। এসব কথিত সাংবাদিকদের দায় নিতে হচ্ছে প্রকৃত সাংবাদিকদেরকে।
গত সোমবার রাতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল¬ায় এক নারীর খারাপ ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে দায়ের করা আইসিটি আইনের মামলায় কথিত সাংবাদিক সাদ্দাম হোসেন শুভকে (৩০) গ্রেফতার করে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। শুভ উজ্জীবিত বাংলাদেশ নামে একটি নামসর্বস্ব পত্রিকা ও অনলাইনের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি করে আসছিলো।
গত ১০ জুন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে গাড়িতে করে ফেন্সিডিল পাচারের অভিযোগে আড়াইহাজারের শামিম মিয়াসহ (২২) চার ভুয়া সাংবাদিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের লোগো সম্বলিত তাদের ব্যবহৃত গাড়ির ভেতর বিশেষভাবে রাখা ১৫০ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয়। আটককৃতরা সবাই নিজেদের চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের সাংবাদিক হিসেবে দাবি করেন। তবে পুলিশ জানায় তারা সকলেই ভুয়া সাংবাদিক।
গত ২৩ মে সোনারগাঁ থানার ফুলবাড়িয়া বড় নগর এলাকায় একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভুয়া আইডি কার্ড, অখ্যাত পত্রিকার আইডি কার্ড, ম্যাজিস্ট্রেট ও অ্যাডভোকেটের নকল সিল, পত্রিকার ভুয়া ঘোষণাপত্রসহ পাঁচ প্রতারককে গ্রেফতার করে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবি পুলিশ। সেসময় নারায়ণগঞ্জের সদর মডেল থানা পুলিশ বলছিলো, চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেফতারকৃত পাঁচজনই ভুয়া সাংবাদিক।
চলতি বছর ২৫ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ভুয়া সাংবাদিক দম্পতি ও তাদের সহযোগীকে গ্রেফতার করে র্যাব-১ এর সদস্যরা। এ ছাড়াও ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী গুজব ছড়ানোর অভিযোগে এম আপডেট নিউজ নামে এক ইউটিউব চ্যানেলের এডমিনকে গ্রেফতার করে র্যাব-১। ওইসময় রূপগঞ্জের কাঞ্চন পূর্বাচলের সিপিসি-৩ র্যাবের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
জানা যায়, অনলাইন পোর্টালে কঠোর কোনো নীতিমালা না থাকায় সহজেই তৈরি করা হচ্ছে অনলাইন সংবাদমাধ্যম। এসব অনলাইন সংবাদমাধ্যমে যোগ দিচ্ছেন চিহ্নিত দলীয় ক্যাডার, অপরাধী থেকে শুরু করে মাদকসেবনকারী ও বিক্রেতা পর্যন্ত। তারা বিভিন্ন মোটরসাইকেলের সামনে-পেছনে সাংবাদিক ও প্রেস লেখে বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছে নানা অপকর্ম।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাসুম বলেন, যারা সাংবাদিকতার ব্যানারে অপসাংবাদিকতা করে বেড়ায় তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। সনদ ছাড়া আগামীতে কেউ সাংবাদিকতা করতে পারবে না। সাংবাদিকতা করতে হলে অবশ্যই সনদ লাগবে। আর এই সনদের দাবিটি সরকারের নয়, বরং প্রকৃত সাংবাদিকরাই তুলছেন। অপসাংবাদিকতার কারণে প্রকৃত সাংবাদিকরা এখন চরম উদ্বিগ্ন। আমরা চাই অপসাংবাদিকতা বন্ধে সনদের ব্যবস্থা করতে। তা হলেই কেবল ভুয়া সাংবাদিক রোধ করা সম্ভব।
নারায়ণগঞ্জ অনলাইন পোর্টালের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, সাংবাদিকরা কখনোই কারও সাথে প্রতারণা করতে পারে না, যারা করে তারা সাংবাদিক না। নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়ন ও প্রেস ক্লাব এসকল বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ নিলে হয়তো এরকম সমস্যার সৃষ্টি হবে না কিংবা অপসাংবাদিকতা রোধ করা সম্ভব হবে।
অপসাংবাদিকতা বিষয়ে সোচ্চার হওয়ার ক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জে দায়িত্ববান সাংবাদিক নেতাদের তেমন কোন হস্তক্ষেপ নিতে দেখা যায়না। আর তাই ইচ্ছে খুশি অনুযায়ী যে যার মতো করে অনলাইন পোর্টাল খুলে হয়ে যাচ্ছেন প্রকাশক ও সম্পাদক। যাদের মধ্যে অনেকেরই নেই শিক্ষাগত যোগ্যতা কিংবা সাংবাদিকতা বিষয়ক কোন জ্ঞান। এমনটাই মনে করেন জেলার পেশাদার সাংবাদিক মহল।
এ বিষয়ে সমাধান ও প্রতিক্রিয়া জানতে দৈনিক সংবাদচর্চা পত্রিকা অফিস থেকে মুঠোফোন করা হয় নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুস সালামকে। তিনি বলেন, প্রথমত পত্রিকার মালিকদের পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে হবে। যে পত্রিকার মালিকই হোক না কেনো তাদেরকে পেশাদারিত্ব এবং সংবাদপত্রের যে নিয়ম-কানুন আছে এটা মেনে চলতে হবে। যেহুতু আমরা সাংবাদিক ইউনিয়ন করি আমাদের একটা নৈতিক দায়িত্ব আছে পত্রিকার বিষয়গুলোতে।
তথাকথিত সাংবাদিকদের বিষয়ে তিনি আরো বলেন, গতকাল দেখলাম শুভ নামে একজন কথিত সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইউনিয়নের কাছে এরকম মৌখিক কিংবা লিখিত অভিযোগ যদি আসে সেক্ষেত্রে ওই পত্রিকার বিরুদ্ধে আমরা স্ট্যান্ড নিবো এবং আলোচনা করে ওই পত্রিকার তথাকথিত সাংবাদিকদের দিয়ে যারা বাণিজ্য করছে, তাদের তালিকা যদি আমরা পাই তাহলে প্রশাসনকে আমরা সেই তালিকা দিবো। যাতে সাংবাদিকতায় বর্তমানে যে একটা অবস্থা সেখান থেকে পূর্বের অবস্থানে আমরা সহজেই ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারি।
সাংবাদিকতা একটি স্পর্শকাতর পেশা। যে কারও হাতে যেভাবে ছুরিকাঁচি তুলে দিয়ে অপারেশনের সার্জন বানিয়ে দেওয়া যেমন গ্রহণযোগ্য হয় না, একইভাবে যে কারও হাতে কলম-ক্যামেরা তুলে দিয়ে তাকে সংবাদ সংগ্রহ ও প্রচারের দায়িত্ব দেওয়াও গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত নয় বলে মনে করেন দৈনিক সংবাদচর্চা পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মুন্না খান।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে সকল পেশাদার সাংবাদিকদের তালিকা করা হোক আর এই তালিকার প্রাথমিক দায়িত্ব সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ এবং জেলা প্রশাসক কে নিতে হবে। কারণ তারাই একমাত্র জেলা আইন শৃঙ্খলা মিটিং সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সাংবাদিকদের দুঃখ-দুর্দশা ও দাবির কথা তুলে ধরতে পারেন। সেক্ষেত্রে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বা দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা যদি আমাদের কাছে সহয়তা চান তাহলে আমরা তথ্য দিয়ে তাদেরকে সহযোগিতা করবো এবং আমি আশা করি নারায়ণগঞ্জে দায়িত্বরত কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের জন্য আচরণবিধি তৈরি ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে এবং তাদেরকে সেগুলো মেনে চলতে উৎসাহিত ও ক্ষেত্রবিশেষে বাধ্যও করবে।
জানা গেছে, নামসর্বস্ব পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালের ভুয়া সাংবাদিকদের অনেকেই নিজেদের নাম পর্যন্ত লিখতে পারে না। তারা নানা অপকর্ম নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাওয়ার জন্য পত্রিকা ও পোর্টালের পরিচয়পত্র গলায় ও কোমরে ঝুলিয়ে চোষে বেড়াচ্ছেন গোটা এলাকা।
অভিযোগ রয়েছে, শহরে ‘প্রাইভেট’ নাম দিয়ে যে সিএনজি-চালিত ধূষর অটোরিক্সাগুলো চলছে, এগুলোর অনুমোদন নেওয়া হয়েছে এসব ভূইফোঁড় পত্রিকা আর সংবাদ সংস্থার নামে। শহরে যতগুলো ‘সাংবাদিক’ স্টিকার লাগানো মাইক্রোবাস চলাচল করে, এর অধিকাংশই আসলে রেন্ট-এ-কারের গাড়ি, এর সঙ্গে প্রকৃত সাংবাদিকদের কোনো সম্পর্ক নেই বলেও জানা যায়।
এখন কথা হচ্ছে এসব সামলাবে কে?
উদ্বেগজনকহারে ভুয়া সাংবাদিক ও নম্বরবিহীন মোটরসাইকেলের সংখ্যাও দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব ভুয়া সাংবাদিকেরা নম্বরবিহীন মোটরসাইকেল দিয়ে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। এদের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে পরেছে প্রশাসনসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার লোকজন। অনেকে এসব সাংবাদিকের ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে মুখ খুলতে নারাজ। নামসর্বস্ব পত্রিকা, অনলাইন, স্যাটেলাইটের সাংবাদিকেরা চাঁদাবাজিসহ নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পরছে; যে কারণে মূল ধারার সাংবাদিকেরা প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন।
এ জটিলতার সমাধানের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় নবাগত জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিনের কাছে। তিনি বলেন, অপ সাংবাদিকতার বিষয়ে কোন অভিযোগ আসলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে । তবে সেই অভিযোগ লিখিত হলে ভালো হয়। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, ওইসকল কথিত সাংবাদিকদের বিষয়ে আপনারা আমাদের জানাবেন, আমি এসপি সাহেবের সাথে কথা বলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করবো।
অপসাংবাদিকতা রোধ এবং জেলায় চলমানরত এ সমস্যা থেকে উত্তোরনের জন্য বিভিন্ন সংগঠনের সাংবাদিক নেতা ও নারায়ণগঞ্জ প্রবীন সাংবাদিকরা একাধিক প্রস্তাব জানিয়েছেন। তার মধ্যে, স্থানীয় হোক আর জাতীয় কিংবা ঢাকা থেকে প্রকাশিত হোক, প্রত্যেকটি পত্রিকার কোনো না কোনো ডিক্লারেশন কপি রয়েছে। ওই কপি গুলো যাদের রয়েছে সে সকল পত্রিকার সকল সাংবাদিক তাদের পত্রিকা সম্পর্কে জেলা প্রশাসককে অবহিত করবে। তাদের কতো জন সাংবাদিক রয়েছে এবং কারা কি কাজ করে। পাশাপাশি নামে বেনামে যে অনলাইন পোর্টালগুলো রয়েছে, যারা আদৌ সরকারি নীতিমালা না মেনে মন্ত্রণালয়ে কোন আবেদন করেনি তাদেরকে চিহ্নিত করা সেই সাথে যারা করেছে তাদের কাছ থেকে আবেদনের কপি সহ সকল তথ্য নেওয়া যে, তাদের কতজন সাংবাদিক রয়েছে এবং তাদের যোগ্যতা কি এবং তারা কোথায় কি কাজ করে।
তারা আরও প্রস্তাব রাখেন, স্থানীয় বা জাতীয় হোক কিংবা অনলাইন পোর্টাল সর্বোপরি যে কোনো গণমাধ্যমই হোক না কেনো তারা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জেলা প্রশাসকের কাছে তথ্য প্রদান করবে। ইচ্ছে করলেই জেলা প্রশাসক পারেন, নারায়ণগঞ্জে যারা অবস্থান করছে তাদের তথ্য নিয়ে তথ্য ডেস্কে এ সকল ডাটা গুলো সংরক্ষন করে রাখতে। তাদের দাবি, অনলাইন পোর্টালগুলোর মধ্যে যারা সরকারি নীতিমালা মেনে আবেদন করেছে তাদেরকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হোক। নারায়ণগঞ্জে কর্মরত প্রত্যেকটি পত্রিকা প্রতিষ্ঠানের তথ্য জেলা প্রশাসককে দিতে হবে। যারা করবে না, তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পত্রিকা ও সাংবাদিকদের নিবন্ধিত করা হবে। এতে করে যে সকল পত্রিকার ডিক্লারেশন রয়েছে তারা অবশ্যই নিবন্ধন করবে এবং যাদের আন্ডারগ্রাউন্ডের পত্রিকা তারা হয়তো নিবন্ধন করবে না। আর তাতেই কারা পেশাদার সাংবাদিক ও প্রতিষ্ঠান আর কারা অপেশাদার প্রতিষ্ঠানের ভুয়া সাংবাদিক তা বেরিয়ে আসবে।
তাদের মতে, প্রকৃত সাংবাদিকদের সুরক্ষা এবং অপসাংবাদিকতা প্রতিরোধ করতে অল্প সময়ের মধ্যে সরকারের আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। অপসাংবাদিকতা ঠেকাতে প্রেস কাউন্সিল ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে নানা পরিকল্পনা হাতে নেওয়া প্রয়োজন এবং তা বাস্তবায়ন করা জরুরী। মূলত সাংবাদিকতার জন্য এক ধরনের নীতিমালা ঠিক করে তা প্রয়োগ করাটাই শ্রেয়। হলুদ সাংবাদিকতা ও ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে এবং প্রকৃত সাংবাদিকরা যাতে হয়রানির শিকার না হন তা নিশ্চিত করতে এ উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন বলে তারা মনে করছেন ।
এদিকে জেলার সচেতন মহলের লোকজন অপসাংবাদিকতা রোধে একটি নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান এবং বিধিমালা তৈরির পক্ষে। তাদের মতে, সব পেশারই লাইসেন্স প্রদানকারী একটি প্রতিষ্ঠান থাকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের সব বই পড়ে ঝালাপালা হয়ে গেলেও চিকিৎসা শুরু করার আগে যে কাউকে সনদ নিতে হবে। এই সনদ গ্রহণের মাধ্যমে ন্যূনতম নিয়মনীতি ও পেশাগত সততার প্রতি অঙ্গীকার করতে হয়। চাইলেই আইন পাশ করে সরাসরি বিচারকার্যে অংশ নেয়া যায় না। এ জন্য যে কাউকে তালিকাভুক্ত ও সনদধারী আইনজীবী হতে হবে। একাউন্টেন্ট হতে হলেও শুধু হিসাববিজ্ঞান জানলে চলবে না, সংশ্লিষ্ট পেশাগত প্রতিষ্ঠানের সনদ নিতে হয়।
‘অপসাংবাদিকতা বন্ধে সরকারের এ উদ্যোগ ইতিবাচক। এটা বাস্তবায়ন করা হলে অপসাংবাদিকতা অনেক কমে আসবে। যে কেউ ইচ্ছা করলেই এ পেশায় প্রবেশ করতে পারবে না। তবে এ আইন করার আগে গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনার দরকার আছে। সনদ দেওয়ার প্রক্রিয়া ও মাপকাঠি সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে। তাহলেই হয়তো উদ্যোগটি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত করা সম্ভব হবে।