আজ বৃহস্পতিবার, ২১শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ব্যক্তিনির্ভর রাজনীতিতে সদর-বন্দর!

সংবাদচর্চা রিপোর্ট :
নারায়ণগঞ্জের সদর ও বন্দরে চলছে ব্যক্তিনির্ভর রাজনীতি। একক আধিপত্য বিস্তারেই সকল দলের নেতাকর্মীদের নিজের সঙ্গে সামিল করে নিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান। নিজে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হলেও নিজের ভিতরে নেই গণতন্ত্র বা সাংগঠনিক চর্চা। নারায়ণগঞ্জ জাপাকে হ-য-ব-র-ল অবস্থা এনে রাখার জন্য এই সাংসদকেই দায়ী করেছেন তৃনমূল জাপার কর্মীরা।

প্রসঙ্গত , জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য নাসিম ওসমান বেচে থাকা পর্যন্ত দলটির পুরো দায়-দায়িত্ব ছিলো তার উপর। তার উপর ভর করেই সংগঠনটি জেলায় বেশ শক্ত অবস্থানে ছিলো। তার মৃত্যুর পরে নাসিম ওসমানের আরেক ভাই নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের বর্তমান সাংসদ সেলিম ওসমান দলটির হাল ধরেন। কিন্তু দলটির কার্যক্রমে কোন গতি আসেনি। আবারও ব্যক্তিনির্ভর হয়ে পড়ে দলটি। শুধু নিজের দলই নয়, সকল দলের নেতাকর্মীদের নিয়েই কাজ করতে ভালোবাসেন এই নেতা। যা অনেকটাই ভালো চোখে দেখেন না রাজনৈতিক বোদ্ধারা। তাদের মতে, রাজনীতি মানেই প্রতিযোগিতা। যেখানে থাকবে আন্দোলন, সংগ্রাম, নির্বাচন, লড়াই, গণতন্ত্র, সাংগঠনিক কার্যক্রম। কিন্তু তার একক পরিকল্পনায়ই সকল কিছু ভেস্তে দেয়।
সেলিম ওসমানের এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করলেও সমালোচিত হয়েছেন বারংবার। আর সমালোচনার শুরুই হয়েছে, ভালো করতে গিয়ে বিপরীত হয়েছে। সদর ও বন্দরে যত জনপ্রতিনিধি আছে সে যে দলেরই হোক সেলিম ওসমানের চেয়ারের পাশে বসার জন্য একটি চেয়ার পান।

দেখা গেছে, গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নওশেদ আলী বিএনপির একনিষ্ট কর্মী হওয়া স্বত্বেও সেলিম ওসমানের সঙ্গেই বেশ তাল মিলিয়ে চলছেন এই চতুর নেতা। অপরদিকে, বন্দর উপজেলায় দীর্ঘদিন চেয়ারম্যান হিসাবে ছিলেন বিএনপির আতাউর রহমান মুকুল নিজ জোটের প্রার্থী রেখে সেলিম ওসমানের পক্ষে নির্বাচনি প্রচারনায় থাকতে দেখা যায় তাকে। যার জন্য দলের নেতাদের তোপের মুখেও পরেছিলেন মুকুল।

সর্বশেষ, গত ১৮জুন বন্দর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে থেকে নিজের পছন্দসই প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে সকল প্রার্থীদের বসিয়ে সর্মথন দেওয়ান তিনি। প্রতীক বরাদ্দ হবার পর পরই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নির্বাচনি মাঠ থেকে হঠাৎ করেই নিরব ভূমিকায় চলে যান।

বিভিন্ন সভা সমাবেশে, সেলিম ওসমান শুধু জাতীয় পাটি নয়, সকল দলের লোক বলে পরিচয় দিতেই বেশি ভালোবাসেন। কখনো নিজেকে জাপার এমপি, কখনো পাক্কা আওয়ামী লীগার, কখনো বিএনপির লোক বলেন। সেলিম ওসমানের এহেন কর্মকান্ড প্রতিযোগিতা মূলক রাজনীতির বদলে প্রতিহিংসার রাজনীতিতে পরিনত হবে বলেই মনে করছেন বোদ্ধামহল।

তবে বন্দর নাসিক মেয়র আইভীর বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে। সেখানে এম এ রশিদ কে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করার ব্যাপারে আইভীর বিরাট ভূমিকা রয়েছে। আবু সুফিয়ান যে ভাবে ভোটের মাঠে নেমেছিলেন তাতে সবার ধারণা ছিলো দলীয় মনোনয়ন না পেলে তিনি বিদ্রোহী হবেন। কিন্তু না শেষ পর্যন্ত সুফিয়ান বিদ্রোহী প্রার্থী হন নাই। একটি সুত্রের মাধ্যমে জানা গেছে রশীদের সঙ্গে সুফিয়ান আইভীর গভীর রাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে।