আজ শনিবার, ২৫শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নারায়ণগঞ্জ সিটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় প্রকল্প একনেকে অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে বড় প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। ৩১ অক্টোবর মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ১১৮তম ও চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের অষ্টম একনেক বৈঠকে এ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।

এজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯১ কোটি ১৮ লাখ টাকা। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এটিও সরকারের নতুন প্রকল্প। ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পও অনুমোদন দিয়েছে একনেক। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এটিও সরকারের নতুন প্রকল্প।

এদিকে জাগো নিউজ জানিয়েছে, রাজধানী ঢাকা থেকে ১৭ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে নারায়ণগঞ্জ শহর অবস্থিত। নারায়ণগঞ্জের সঙ্গে রেল, নৌ ও সড়ক পথে দেশের অন্যান্য স্থানে সংযোগ রয়েছে। ব্রিটিশ সময়কাল থেকে এখানে রেল স্টেশন স্থাপিত, যার জন্য দেশের বৃহৎ ও মাঝারি শিল্প কলকারখানা এখানে গড়ে উঠেছে। নারায়ণগঞ্জ, কদমরসুল ও সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভা নিয়ে ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন গঠিত হয়।

৭২.৪৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনবিশিষ্ট এই মহানগরীতে ২৭টি ওয়ার্ড রয়েছে এবং জনসংখ্যা প্রায় ১৫ মিলিয়ন। এ মহানগর শিল্প কারখানার জন্য বিখ্যাত। এক সময় পাট ব্যবসার জন্য বিখ্যাত নারায়ণগঞ্জকে প্রাচ্যের ডান্ডি বলা হতো। নারায়ণগঞ্জ একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা ও শিল্প কেন্দ্র এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মেরুদ-। কিন্তু এখানে নগরবাসীর বিনোদনমূলক সুবিধাদি প্রদানের জন্য কোনো ইকোপার্ক নেই। এজন্য নগরবাসীর চাহিদা পূরণের জন্য পরিবেশগত দিক বিবেচনায় উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন গুরুত্বপূর্ণ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি এলাকায় কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গুরুতর পরিবেশগত সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ মহানগরীতে প্রতিদিন গড়ে প্রতিজনে প্রায় ০.৪৯ কেজি বর্জ্য ফেলে এবং প্রতিদিন শহরে ৩৫০ টন শিল্প, খাদ্য, শাকসবজি, ফল, পলিথিন কাগজ ও কাপড়ের বর্জ্য তৈরি হয়। এর মধ্যে সিটি কর্পোরেশনের ২৯০ টন বর্জ্য সংগ্রহের সক্ষমতা রয়েছে। অর্থাৎ প্রায় ৮৩ শতাংশ বর্জ্য সিটি কর্পোরেশন সংগ্রহ করে ল্যান্ডফিলে ডিসপোজাল করছে। অবশিষ্ট বর্জ্য স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করছে এবং নদী, খাল, পুকুর জলাশয়ে ফেলছে। স্থানীয়ভাবে বর্জ্য ফেলার ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে এবং জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে।

সিটি কর্পোরেশন অশোধিত ডাম্পিং পদ্ধতি অবলম্বন করে সলিড ওয়েস্ট ব্যবস্থাপনা করছে, যা একদিকে পরিবেশ দূষিত করছে অন্যদিকে জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। এসব বিষয় বিবেচনা করে নির্দিষ্ট জায়গায় বর্জ্য ফেলার মাধ্যমে শহরের পরিবেশ রক্ষার জন্য নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন প্রকল্পটি প্রণয়ন করেছে।

কমিশন সূত্র জানায়, প্রকল্পের মাধ্যমে স্যানিটারি ল্যান্ডফিল নির্মাণ, পরিবেশবান্ধব কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ, অপসারণ এবং প্রক্রিয়াকরণ, সম্পদ পুনরুদ্ধার, সহজ এবং কার্যকর কঠিন বর্জ্য সংড়্রহ এবং অপসারণ ও দূষণ কমিয়ে পরিবেশের উন্নয়ন করা হবে।

এ প্রকল্পের আওতায় জমি ক্রয়-২৩.২৮ একর, ভূমি উন্নয়ন-৫০২১৪.৯৬ ঘন মিটার, গার্বেজ ট্রাক ক্রয়-৫টি, সাকশন ক্লিনার ট্রাক ক্রয়-১টি, যন্ত্রপাতি এবং অন্যান্য সরঞ্জাম-২০০টি, প্রকৌশল সরঞ্জাম ক্রয়-৩টি, অফিস বিল্ডিং নির্মাণ-৩৭১৭.৫০ বর্গমিটার, অন্যান্য বিল্ডিং নির্মাণ-৩৭১৭.৫০ বর্গমিটার, রাস্তা নির্মাণ-২১৮০.৩০ মিটার ও আরসিসি ড্রেন নির্মাণ করা হবে ২.০০৫ কিলোমিটার।