আজ রবিবার, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বইয়ের বিতর্কিত অংশের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাই: এ কে খন্দকার

নবকুমার:

মুক্তিযুদ্ধের উপ প্রধান ও সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব) এ কে খন্দকার (বীরউত্তম)নিজের লেখা বই ‘১৯৭১: ভেতরে-বাইরে’র বিতর্কিত অংশের জন্য সংবাদ সম্মেলন করে জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন । পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ উঠায় বইয়ের সেই বিতর্কিত অংশটুকু প্রত্যাহার করে নিয়েছেন এই লেখক।

শনিবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন ডাকেন এ কে খন্দকার। সেখানে তার লেখা ‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে’ বই নিয়ে কথা বলেন। বইয়ের বিতর্কিত অংশটুকু প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। সেই সঙ্গে বইয়ে উল্লেখিত অসত্য তথ্যের জন্য জাতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিদেহি আত্মার কাছেও ক্ষমা চান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে এ কে খন্দকার বলেন, আমার লেখা ‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে’ বইটি ২০১৪ সালের আগস্টে প্রথমা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়।বইটি প্রকাশের পর সেটির ৩২ নম্বর পৃষ্ঠায় উল্লেখিত বিশেষ অংশ ও বইয়ের আরও কিছু শব্দ ও বাক্যচয়নের প্রতি সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এই লেখার জন্য দেশপ্রেমিক জনগণের অনেকেই কষ্ট পেয়েছেন।

তিনি বলেন, এই তথ্যটুকু যেভাবেই আমার বইতে আসুক না কেন এই অসত্য তথ্যের দায়ভার আমার। বঙ্গবন্ধু তার ৭ মার্চের ভাষণে কখনোই ‘জয় পাকিস্তান’ শব্দটি বলেননি। তাই আমি আমার বইয়ের ৩২ নম্বর পৃষ্ঠার উল্লেখিত বিশেষ অংশযুক্ত পুরো অনুচ্ছেদটুকু প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। একইসঙ্গ আমি জাতির কাছে ও বঙ্গবন্ধুর বিদেহি আত্মার কাছে ক্ষমতা চাইছি।’

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে প্রকাশিত এই বইটি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। বইটির একটি অংশে এ কে খন্দকার লিখেন যে, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানের ঐতিহাসিক সমাবেশে নিজের ভাষণ শেষ করে ‘জয় পাকিস্তান’ বলে স্লোগান দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সে সময় বইটি নিষিদ্ধ করারও দাবি ওঠে। আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক এই পরিকল্পনামন্ত্রীর বিচারও দাবি করেন অনেকে।

সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ কে খন্দকার জানান যে, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে চান। তিনি বইয়ের বিতর্কিত অংশের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে চান। আজ প্রকাশ্যে সেই ক্ষমা চাইলেন।

এদিকে একে খন্দকার জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সবাই তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। অনেকেই বলছে দেড়ি হলেও একে খন্দকারের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছে এটা একে খন্দকারের ষড়যন্ত্রের অংশ।

এছাড়া, বইয়ের বিতর্কিত অংশের সঙ্গে  ঐক্যফ্রন্টের নেতা জাফরউল্লাহ, মইদুল হাসানসহ অজ্ঞাত কয়েকজন জড়িত । ‌‘বইটি প্রকাশের পরের দিনই ও ( এ কে খন্দকার) এবং আমি সংশোধন করার কথা ভাবি। কিন্তু উনারাই আমাদের তা করতে দেয়নি। বরং তারা বলেছেন, বন্ধুকের গুলি একবার ছোড়লে আর তার পিছনে ছুটে লাভ কী!’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এ কে খন্দকারের  স্ত্রী ফরিদা খন্দকার।