আজ বৃহস্পতিবার, ২১শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ছাত্রদলের হাত ধরেই আসতে পারে বড় ধরনের পরিবর্তন

  •  ইফতার পার্টির জন্য একদিন না, পরপর তিনদিন বসেছি- সভাপতি
  • খালা অসুস্থ ছিলো তাই যেতে পারি নি- সাধারণ সম্পাদক

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণে বিএনপির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা  চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি ও কঠোর আন্দোলন সংগ্রামের জন্য মূল অস্ত্র ছাত্রদল। যেই সংগঠনটিকে বিএনপির ভ্যানগার্ড বলা হয় সেই সংগঠনের প্রয়োজন ঐক্য। নারায়ণগঞ্জ ছাত্রদলের সবচেয়ে বড় সমস্যা তাদের মধ্যে ঐক্যর অভাব। যার ফলে দলের স্বার্থে তারা কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না। তবে তাদের ঐক্যবদ্ধতাই পারে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সাংগঠনিক দূর্বলতা দূর করে নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামলে ছাত্রদলের হাত ধরেই আসতে বড় ধরনের পরিবর্তন। এমনটাই মনে করেন জেলার রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ।

গত ২৭ মে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৮ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সু-চিকিৎসা ও মুক্তি কামনায় ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদল। সেখানে হাজারো নেতাকর্মীর উপস্থিত থাকলেও জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম রাজিবসহ উপস্থিত ছিলেন না বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। তাদের মধ্যে সিনিয়র সহ সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ, সহ সভাপতি আরিফুর রহমান মানিক, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল মিয়া, যুগ্ম সম্পাদক ইসমাইল মামুন, মেহেদি হাসান, মঈনুল ইসলাম রবিন, নাজমুল হাসান বাবু, রাকিব হাসান রাজন, রফিকুল ইসলাম রফিক সহ আরও বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন না।

জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি সকল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করতে চাইলেও পারছেন না। ইফতার পার্টি নিয়ে তিনি টানা তিন দিন নেতাকর্মীদের সাথে আলোচনা করেছেন। অথচ, ওই পার্টিতে বেশিরভাগ নেতাকর্মীদেরই মুখ দেখা যায় নি।

বিষয়টি জানতে দৈনিক সংবাদচর্চা পত্রিকা অফিস থেকে মুঠেফোন করা হয় মশিউর রহমান রনিকে। তিনি বলেন, আমি বরাবরের মতোই চেষ্টা করেছি নেতাকর্মীদের সুসংগঠিত করার জন্য। আমরা ইফতার পার্টির জন্য একদিন না, পরপর তিনদিন বসেছি। পাশাপাশি কমিটির বিষয়েও অনেক আলোচনা হয়েছে। জেলা ছাত্রদল থেকে কোন কিছু ঘোষণা করার পর যদি তা পালন করা না হয়, তাহলে এর দায়ভার পুরো সভাপতির ঘাড়ে এসেই পরে। আমি সম্পূর্ণ শ্রম দেয়ার চেষ্টা করেছি এবং বলেছি আমরা সকলে মিলে ইফতার পার্টি সফল করি, তোমাদের কমিটি করে দেয়া হবে। আমি আর সজিব প্রক্রিয়াধীনভাবে কমিটির বিষয়ে আলোচনা করেছি। এক পর্যায়ে তারা চলে গেছে, সেই সাথে আমার সাথে আর কোন যোগাযোগ করে নি। আমি আর সজিব কমিটির বিষয়ে একাধিকবার বসেছি, খসড়াও করেছি। ইফতার পার্টি হওয়ার আগের দিন রাত ২টা পর্যন্ত সজিব আমার সাথে ছিলো। আমরা ইফতারের বিষয়ে আলোচনা করেছি।

সজিবের ইফতার পার্টিতে না আসার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, আমি সজিবের মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার ফোন করেছি, ও ফোন ধরে বললো আমি আশেপাশেই আছি। এরপরেও ফোন দিয়েছি, তবে ফোন ধরলো ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি দুলাল এবং বললো ওর খালা অসুস্থ। এ কারণে ও সেখানে চলে গেছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম ও কি তাহলে আসতে পারবে না? বললো সেটা সে জানে না। এরপর ও আর আমার সাথে কোন যোগাযোগ করেনি। এখন সজিব ও অন্যান্য নেতাকর্মীরা কী করলো সেটা আর আমি জানতে পারি নাই। জেলা ছাত্রদলের যাতে কোন সম্মান নষ্ট  না হয় আমি সবসময় সেই চেষ্টাই করি।

ছাত্রদলের ইফতার পার্টিতে না আসার বিষয়ে জানতে মুঠোফোন করা হয় খাইরুল ইসলাম সজিবকে। তিনি বলেন, আমি ইফতার পার্টিতে আসার জন্য রওয়ানা হয়েছিলাম। তবে মাঝপথে আসার পর জানতে পারি আমার খালা অসুস্থ হয়ে এপলো হাসপাতালে আছেন। পরে আমি সেখানে ছুটে যাই। যার ফলে ইফতার পার্টিতে যেতে পারি নাই।

সচেতন মহলের মতে, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে। অথচ নেত্রীর মুক্তির পক্ষে আন্দোলন না করে নিজেদের কোন্দলেই মধ্যেই তারা ব্যস্ত। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় ধ্বংসের দিকে চলে যাবে  নারায়ণগঞ্জ ছাত্রদল। তাই অচিরেই দলের সভাপতি ও সেক্রেটারির নেতৃত্বে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে যেকোন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।