আজ মঙ্গলবার, ১৯শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

অপহৃত শিমুল মাসদাইর থেকে উদ্ধার

সংবাদচর্চা রিপোর্টঃ
ফতুল্ল জালকুঁড়ি এলাকার উজ্জল বেপারী ও ফরিদা বেগম এর ছেলে মো. শিমুল (১৮) কে অপহরণ করে ২ লক্ষ টাকার মুক্তিপনের অভিযোগ উঠেছে মাসদাইর কবরস্থান এলাকার এজাজ ওরফে আলতাফের ছেলে রাজ (২৪) সহ অজ্ঞাতানামা ১০ থেকে ১২ জন যুবকের বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে অহৃত শিমুলের মা ফরিদা বেগম নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৪ মে (শনিবার) বিকাল অনুমান ৪.৫০ টার সময় নগরীর চাষাড়া শহীদ মিনার থেকে মো. শিমুল (১৮) কে মারধর করে জোর পূর্বক রিক্সা যোগে অহরণ করে নিয়ে অভিযুক্তরা। প্রথমে শহরের বালুরমাঠে নিয়ে যাওয়া হয়। বালুরমাঠে নিয়ে গিয়ে রাজ সহ তার অন্যান্য বন্ধুরা শিমুলকে আবারও মারধর করে। নির্যাতনের পরে অহরণকারী দল আহত শিমুলকে অজ্ঞাতনামা একটি বাসায় নিয়ে যায়। সেই বাসায় নিয়ে যাওয়ার পর আবার তৃতীয় দফায় শিমুলকে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের এক পর্যায়ে সংঘবদ্ধ অপহরণকারী দল শিমুলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তোকে ছেড়ে দিবো, তুই তোর পরিবারকে ফোন করে ২ লক্ষ টাকা নিয়ে আসতে বল।

অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, অপহরণকারী রাজ ও তাঁর অন্যান্য বন্ধুরা অপহৃত যুবক শিমুলের কাছে থাকা তাঁর ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনটি কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সংঘবদ্ধ অপহরণকারী দল শিমুলের শিমুলের মা ফরিদা বেগমের কাছে ফোন করে মুক্তিপণ বাবদ ২ লক্ষ টাকা দাবি করে। দাবীকৃত মুক্তিপনের টাকা না পেলে শিমুলকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়।

এই বিষয়ে ফরিদা বেগম দৈনিক সংবাদচর্চাকে বলেন, আমার ছেলে শিমুলকে গত ৪ মে চাষাড়া থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় রাজ ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীরা। অপহরণকারীরা আমার ছেলের মুক্তির জন্য ২ লক্ষ টাকা দাবী করে। শিমুলের অপহরণের পর থেকে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের শান্তি হাওয়া হয়ে গেছে। অপহরণকারীদের লাগাতার হুমকি কারনে আমরা আতংকিত। তিনি বলেন, এখন যে অবস্থা তাতে অপহৃত মানুষ সচরাচর ফিরে আসেনা। বিভিন্ন স্থানে অনেক খোজাখুজি শুরু করি আমরা। এক পর্যায়ে অমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা জানতে পারি আমার ছেলে শিমুলকে অপহরণ করে মাসদাইর এলাকায় বন্দি করে রাখ হয়েছে। পুলিশকে বিষয়টি জানিয়ে এবং তাঁদের সাথে নিয়ে মাসদাইর এলাকা থেকে আমার ছেলে শিমুলকে উদ্ধার করি।

উদ্ধার হওয়ার পর শিমুল বলেন, রাজ ও তাঁর অন্যন্য বন্ধুরা আমার এক বান্ধবীকে বিরক্ত করতো। এর প্রতিবাদ করলে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়। এর জের ধরেই গত ৪ মে রাজ ও তার অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন আমাকে অপহরণ করে মাসদাইর কবরস্থান এলাকার একটি বাসার ছাঁদে নিয়ে যায়। সেই স্থানে নিয়ে যাওয়ার পর রাজ ও তার বন্ধুরা আমাকে বিভিন্ন ভাবে শারীরিক নির্যাতন করে এবং তারা বার বার আমাকে হুমকি প্রদান করে যে তারা আমাকে প্রাণে মেরে ফেলবে।
অপহরণ অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই সাইফুল ইসলামের অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এটা অপহরণ নয়, এটা বাদীদের বানোয়াট গল্প। তিনি বলেন, যাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ এঠেছে সেই শিমুলের সাথে কথা বললে তিনি প্রথমে বলেন নারায়ণগঞ্জ খাজা মার্কেটের সামনে থেকে তাকে অপহরণ করা হয়েছে, আরেকবার বলেন চাষাড়া শহীদ মিনারের সামনে থেকে অপহরণ করা হয়েছে। শিমুলের পরিবার সহ পুলিশ যখন শিমুলকে মাসদাইর কবরস্থানে সামনে পাওয়া যায়। তবে বাদীর অভিযোগটি ভিত্তিহীন বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

অপহরণের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমরুল ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে নেটওয়ার্ক জনিত সমস্যার কারনে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নাই।