আজ মঙ্গলবার, ১৯শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

না’গঞ্জে কামায়, ঢাকায় ঘুমায় !

সংবাদচর্চা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জকে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে নানা স্বপ্নের কথা বলেন সাংসদ শামীম ওসমান। কখনও নতুন বউ, কখনও স্কাই সিটি করার কথা শোনা গেছে তার মুখে। তার বলয়ের অনেকেই এই শহরকে প্রাণের শহর, নিজের শহর, স্মৃতিমাখা শহর উল্লেখ করেন। তবে বাস্তবে তার ঘনিষ্ঠ ৪ জন এখানে বাস করেন না। তারা রাজধানীতে বসবাস করতেই স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করেন। এই চাঁর জন হলেন শাহ নিজাম, জাকিরুল আলম হেলাল, শাহাদাৎ হোসেন সাজনু ও মোক্তার হোসেন। যদিও কামাই-রুজির জন্য তারা প্রায় প্রতিদিনই নারায়ণগঞ্জে আসেন।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলালের রাজনীতি শুরু হয় তোলারাম কলেজ দিয়ে। তিনি ও তার পরিবারও ওসমান পরিবারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। বর্তমানে চাষাঢ়ায় শোয়েব মার্কেটে তার অফিস রয়েছে। এখানে প্রায় প্রতিদিন আসেন তিনি। ভূমি ব্যবসা সহ নানা তদারকি করেন এখানে বসেই। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, তার অফিসে রোজ বিচার শালিশ লেগেই থাকে। তার আরেক ভাই মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এলজিইডি, গণপূর্তসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রন করেন তিনি। সূত্র মতে, প্রতিদ্বন্দ্বি বলয়ের হলেও জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মেয়র আইভির ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত আবু সুফিয়ানের সাথেও ঠিকাদারি ব্যবসা রয়েছে তার। হেলাল ও সাজনুর কামাই রুজি নারায়ণগঞ্জে হলেও বাস করেন ঢাকায়। যদিও চাষাঢ়ায় তাদের পৈত্রিক বাড়ি রয়েছে। সূত্র জানায়, দুই সন্তানের জনক হেলাল ইতিমধ্যে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন আর ছেলে পড়াশুনা করে ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অপরদিকে সাজনুর একমাত্র ছেলে লেখাপড়া করতে জার্মানিতে আছেন। এই দুই ভাই ঢাকার উত্তরায় আলাদা আলাদা ফ্ল্যাটে থাকেন।
মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ মো. নিজামের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ সদরে। শামীম ওসমানের ডান হাত হিসেবে পরিচিত নিজাম নারায়ণগঞ্জে কোন বাড়িঘর করেননি। আগে থেকেই তিনি ঢাকায় বাস করেন। তবে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে তার মালিকানা একটি পার্ক রয়েছে। চাষাঢ়ার সায়াম প্লাজার তিন তলায় তার বিরাট অফিস রয়েছে। যেখানে দিনভর লোকজনের আসা যাওয়া আছে। অভিযোগ রয়েছে, এ অফিসে বসে বিভিন্ন এলাকা নিয়ন্ত্রন করেন তিনি।
মোক্তার হোসেন। এক সময় ফুটবল খেলোয়ার পরে ভাগ্য অন্বেষনে জাপান যান। মাসদাইর তালা ফ্যাক্টরী এলাকায় বাড়ি হলেও তার বাবা ছিলেন বিহারী। ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এলে তিনি শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ হন। এরপর পরিবহন সেক্টরে তার প্রভাব দিন দিন বাড়তে থাকে। পরিবার নিয়ে তিনিও ঢাকায় বাস করেন।
আওয়ামীলীগ,যুবলীগ, পরিবহন ব্যবসায়ী হলেও তারা পরিচিত সাংসদ শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে। এ সুবাদেই নারায়ণগঞ্জে দাবড়ে বেড়ান তারা। কামাই রুজিও এখানে। কেউ কেউ দিনভর এখানে অবস্থান করে বেলা শেষে চলে যান রাজধানী ঢাকায়। ঘুমান সেখানেই। যা দেখে দলীয় নেতাকর্মীরাই বলেন, মুখে নারায়ণগঞ্জ প্রীতি দেখালেও অন্তরে তা নেই। সূত্র মতে, এই পাঁচজনের কেউ কেউ এখন শত কোটি টাকার মালিক।