নিজস্ব প্রতিনিধি: নব্বইর দশকের মাঝামাঝিতে অর্থাৎ ১৯৯৬ সালে শামীম ওসমান যখন নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তখন শামীম ওসমানের ভরসার পাত্র ছিলেন সারোয়ার, মাকসুদ, লাল, নিয়াজুল, এস এম সায়েম মিঠুরা। তবে শামীম ওসমানের সেই ভরসার পাত্ররা হারিয়ে গেছেন কালের আবর্তে। যে কারণে বিগত দিনে যারা রাজনৈতিকভাবে উপেক্ষিত ছিলেন সেই সারোয়ার পরিবারই বর্তমানে শেষ ভরসা হয়ে দেখা দিয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামীলীগের শাসনামলে শামীম ওসমানের ভরসার পাত্র ছিলেন সারোয়ার, মাকসুদ, লাল, নিয়াজুল, মিঠুরা। এর মধ্যে তৎকালেই ওসমান পরিবারের পাশাপাশি সারোয়ার পরিবারও ছিল রাজনীতিতে সক্রিয়। কারণ সারোয়ার ছাড়াও তার ছোট ভাই জাকিরুল আলম হেলাল ওইসময়ে সরকারী তোলারাম কলেজের জিএস ছিলেন। তিনি ছাড়াও তার ছোট ভাই শাহাদাৎ হোসেন সাজনু এবং ভাগ্নে মোঃ জুয়েল হোসেনও ছিলেন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তবে আওয়ামীলীগের শাসনামলের শেষ লগ্নে যুবলীগের নেতা গোলাম সারোয়ার ও তার পরিবারের সঙ্গে শামীম ওসমানের বৈরী সম্পর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। ওই সময় তরুণলীগ নেতা মাকসুদের সঙ্গে গোলাম সারোয়ারের বিরোধীতায় গোলাগুলির ঘটনায় খানপুরের যুবলীগ কর্মী লিটন নিহত হয়েছিল। আর ওই ঘটনা নিয়ে তৎকালে যুবলীগের নেতা গোলাম সারোয়ার, তার ছোট দুই ভাই সরকারী তোলারাম কলেজের তৎকালীন জিএস জাকিরুল আলম হেলাল ও শাহাদাৎ হোসেন সাজনু এবং ভাগ্নে মোঃ জুয়েল হোসেনকে নারায়ণগঞ্জ থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছিল।
বিএনপি সরকারের আমলে রাজধানীতে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে হেলাল প্রথম শামীম ওসমানের পক্ষে স্লোগান তুলেন মিছিল করেন।
তবে পরবর্তীতে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে আন্দোলনে ব্যাপক ভূমিকা রাখার কারণে গোলাম সারোয়ারের দুই সহোদর জাকিরুল আলম হেলাল ও শাহাদাৎ হোসেন সাজনু এবং ভাগ্নে মোঃ জুয়েল হোসেন যুবলীগ ও সেচ্ছাসেবকলীগের কমিটিতে পুনর্বহাল হন।
বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে জেলা যুবলীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে শামীম ওসমান ভিপি বাদলের পক্ষ নিয়েছিলেন। তবে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে তাদের মধ্যে দূরত্ব অনেকটাই কমে আসে।
বর্তমানে জাকিরুল আলম হেলাল মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রয়েছেন। শাহাদাৎ হোসেন সাজনু নগর যুবলীগের সভাপতি পদে রয়েছেন। তার নেতৃত্বে মহানগর যুবলীগের কমিটি আসছে বলেই মনে করছেন সকলে। আর সর্বশেষ ভাগ্নে মোঃ জুয়েল হোসেন মহানগর সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি পদে আসীন হয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, নব্বইর দশকে যারা শামীম ওসমানের ভরসার পাত্র ছিলেন সেই সারোয়ার, মাকসুদ, লাল, নিয়াজুল, অগা মিঠুর মধ্যে সারোয়ার, মাকসুদ ও লাল না ফেরার দেশে চলে গেছেন। নিয়াজুল রাজনীতিতে নিস্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। অগা মিঠু আর প্রবাস থেকে দেশে ফিরেননি।
সম্প্রতি মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে সারোয়ারের ভাগ্নে জুয়েলের নাম সভাপতি পদে প্রস্তাবনায় ছিল শামীম ওসমানের। স্বেচ্ছাসেবকলীগের কমিটি গঠনের পরে শামীম ওসমানের পক্ষে ব্যাপক শোডাউনও দেখিয়েছেন জুয়েল হোসেন। আর ওই শোডাউনের নেপথ্যে ছিল প্রয়াত সারোয়ারের দুই সহোদর হেলাল ও সাজনু। তার তাদের শোডাউনের কারণে ওসমান পরিবারের বলয়ে উচ্ছাস ফিরে এসেছে।