আজ শনিবার, ১৬ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আতাতেই ব্যর্থ না.গঞ্জ বিএনপি

# যাদের ওপর দায়িত্ব তারা সরকারি দলের হয়ে কাজ করে- তৈমূর

# আন্দোলন সংগ্রাম করার জন্য আমরা সর্বদাই প্রস্তুত- সাখাওয়াত

# ছাত্রদল ছাড়া বিএনপির সংগ্রাম কখনোই সফল হয়নি- রনি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

হঠাৎ করে রাজপথের আন্দোলনে উদয় হওয়া নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের নেতাকর্মীরা ছাড়া জেলা ও মহানগর জাতীয়তাবাদী দল সেই সাথে বাকী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের রাজপথ তো দূরে থাক দলীয় নেত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবীতে কোন মন্তব্যও করতে দেখা যায়না। কারণ দীর্ঘ এক যুগেরও বেশী ক্ষমতার বাইরে থাকার ফলে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির বেশ কিছু নেতাকর্মীরা সরকার দলের নেতাকর্মীদের সাথে আতাত করেই চলছে।

মামলা-হামলার ভয়ে এখন আর আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় নয় তারা। পূর্বে রাজপথে নামার কারণে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির প্রায় সকল নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়েছে। আর ঠিক সেকারনেই তাদের এখন আর রাজপথে দেখা যায়না। কিন্তু রাজপথে না আসলে আন্দোলন সংগ্রাম না করলে তাদের দলীয় নেত্রীর মুক্তি তো দূরে থাক অধিকার আদায় করাও সম্ভব হবে না। রাজপথে শুধু নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আন্দোলন বিএনপির অধিকায় আদায় কিংবা নেত্রীর মুক্তির জন্য যথেষ্ট না। নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সব নেতাকর্মীরা যতি একত্রে দাবী আদায়ের লক্ষ্যে মাঠে নামে তাহলেই কেবল অধিকার আদায় করা সম্ভব হতে পারে। এমনটাই মনে করছেন জেলার রাজনৈতিক বোদ্ধামহল।

না’গঞ্জের তৃণমূল বিএনপির সাথে জেলার আপামর জনসাধারণের কোন সম্পৃক্ততা নেই। তার কারন নারায়ণগঞ্জ বিএনপি সংবাদের শিরোনাম হতে কেন্দ্রীয় বিএনপির কিছু রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে শহরের অলি-গলিতে মানববন্ধন করে। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির কমিটি গঠন করার পরে গত কয়েকদিন আগে টানা দুইদিন তারা রাস্তায় নেমে নেত্রীর মুক্তির দাবীতে আন্দোলন করেছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ বিএনপি অন্য সব সংগঠন তথা জেলা ও মহানগর বিএনপি, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল ও শ্রমিক দল সহ অন্যান্য সংগঠনগুলো শেষ কবে জেলার সাধারণ মানুষের নৈতিক কোন দাবী নিয়ে মানববন্ধন কিংবা সমাবেশ করেছে তা কারোরই জানা নেই। একটি রাজনৈতিক দলের সাথে যদি সাধারন মানুষের ক্রমসই দুরুত্ব বেড়ে যায় সেই রাজনৈতিক দলটিকে প্রকৃত রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে মনে হয়না। কারণ রাজনীতি হতে হবে জনবান্ধব, রাজনীতি হতে হবে মানুষের কল্যানের জন্য। যা বর্তমানে বিএনপির মন মানষিকতা নেই বললেই চলে। তাছাড়া বিএনপির আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, আতাউর রহমান মুকুল ও মোহাম্মদ আলী ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ বিএনপির বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা কেউ প্রকাশ্যে কেউ চুপে চাপে সরকার দলীয় লোকেদের সাথে আতাত করেই চলেছে। এভাবেই চলতে থাকলে নারায়ণগঞ্জ থেকে একদিন বিএনপি নামক দলটি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এমনটাই মনে করেন সচেতন মহলের লোকজন।

নেত্রীর মুক্তির দাবীতে শুধুমাত্র কিছুদিন আগে জেলা ও মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীদের দেখা গিয়েছে এছাড়া বাকী অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী কেনো আন্দোলন সংগ্রামে আসে না? এমন প্রশ্ন জানতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এড. তৈমূর আলম খন্দকার দৈনিক সংবাদচর্চার নিজস্ব প্রতিবেদককে মুঠোফোনে বলেন, কেন্দ্র থেকে যাদের ওপর জেলা কমিটি ও মহানগর কমিটির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সেই কমিটিই তো সরকারি দলের হয়ে কাজ করছে। প্রথমেই তাদের বিরুদ্ধে একটি অ্যাকশন নেয়া দরকার। সেই সাথে দলটিকে পরিষ্কার করতে হবে। যাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তারা সরকারি দলের হয়ে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

জেলা ও মহানগর যুবদল তো রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করছে, মহানগর বিএনপি কী নেত্রীর দাবীতে রাজপথে নামবে এমন প্রশ্ন করা হলে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ব্যাক্তিগতভাবে কর্মসূচী থাকে না। কর্মসূচী দেওয়া হয় কেন্দ্র থেকে। কেন্দ্র থেকে যখন যেভাবে মেসেজ দেয়া হয় আমরা সেই অনুসারে কাজ করি। নারায়নগঞ্জবাসী জানে যে আমরা সবসময় নেত্রীর মুক্তির দাবী জানিয়ে আসছি। কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেয়া হলেই আমরা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করবো। আন্দোলন সংগ্রাম করার জন্য আমরা সর্বদাই প্রস্তুত আছি।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান রোজেল বলেন, বিএনপির কর্মসূচী গুলো বর্তমানে কেন্দ্র থেকে পরিচালিত হচ্ছে। কেন্দ্র থেকে যুবদলের কর্মসূচী দেওয়া হয়েছিলো তারা করেছে সেই সাথে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মসূচী দেয়া হয়েছিলো তারা করেছে। আমাদের যখন নির্দেশনা দেয়া হবে তখন আমরাও নির্দেশনা মোতাবেক কর্মসূচী পালন করবো।

নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সভাপতির সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার নম্বর বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সহ ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক আলামিন প্রধানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল নাম্বার ও বন্ধ পাওয়া যায়।

টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতাহীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। যার ফলে, তারা আগের যেকোন সময়ের চেয়ে বেশ নাজুক অবস্থানে পড়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। তবে নতুন কর্মকৌশল ঠিক করা নিয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে দলটি। দল পরিচালনার পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিএনপিতে। এমতঅবস্থায় তাদের আগামী দিনের করণীয় নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দের সৃষ্টি হয়েছিলো নেতাকর্মীদের মধ্যে। বিশেষ করে ঘুরে দাড়ানোর জন্য কী করতে হবে বা এই মূহুর্তে তাদের করণীয় কী এ বিষয়ে তাদের দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ বললেই চলে। কেন্দ্র থেকে কমিটি গঠন করার পর শুধুমাত্র নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীদের টানা দুইদিন নেত্রীর মুক্তির দাবীতে শুধু আন্দোলন করতে দেখা গেছে। এছাড়া আর কোন নেতাকর্মীদের রাজপথে দেখা যায় না। সাধারণ নাগরিকদের মতে, নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে ঘুরে দাড়াতে হবে। এবং তাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে হলে ঐক্যবদ্ধ ছাড়া দ্বিতীয় কোন উপায় নেই