আজ শুক্রবার, ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে না.গঞ্জ জেলা আ.লীগ, নৌকার এমপিদের বিরোধীতায় লিপ্ত হাই-পারভেজ

প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে না.গঞ্জ জেলা আ.লীগ

প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে না.গঞ্জ জেলা আ.লীগ

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাইয়ের নামে কমিটি বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠেছে। হাইয়ের নামে শুধু কমিটি বাণিজ্যের অভিযোগেই শেষ নয়। তার নামে রয়েছে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগ। সম্প্রতি রূপগঞ্জের একটি অনুষ্ঠানে এক সময়ের হাইয়ের ঘনিষ্ট সহযোদ্ধা বিশিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান আকন্দ বলেছেন ,নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই একজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধের সময় হয় হাই সাহেব ভারতে পালিয়ে গিয়ে কলকাতার সুব্রত হোটেলে অবস্থান করেছিলো। এছাড়া রূপগঞ্জে ছাত্রদল ক্যাডার জহিদুলকে ভূলতা পুলিশ ফাড়িতে ছুটাতে গিয়ে বেশ বিতর্কের জন্ম দিয়েছে আব্দুল হাই।

নারায়ণগঞ্জে ৫টি আসন রয়েছে। তার মধ্যে ৩টিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের এমপি রয়েছে। তন্মধ্যে এতদিন দলীয় দুই এমপির সাথে জেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের বিরোধ পরিলক্ষিত হলেও এবার বাকী থাকা নারায়ণগঞ্জ ১ আসনের আরেক এমপি গোলাম দস্তগীর গাজীর সাথেও প্রকাশ্যে বিরোধীতায় লিপ্ত হয়েছেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই।
নির্বাচনের প্রাক্কালে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির এমপিদের এতদিন বিরোধীতা করলেও এখন খোদ নৌকার এমপিদের সাথেও বিরোধে জড়িয়ে পড়ছে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হাই, যুগ্ন্সাধারণ সম্পাদক ইকবাল পারভেজ। তারা দলীয় পদকে পুজি করে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে।

জানাগেছে, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন রাখতে দলীয় এমপিদের বিরোধীতা না করতে সম্প্রতি আওয়ামীলীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। মনোনয়ন ইস্যুতে যদি কেউ এমপিদের বিরোধীতা করেন তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ারও হুঁশিয়ারী দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর সেই নির্দেশ উপেক্ষা করেই উল্টো নারায়ণগঞ্জের নৌকার এমপিদের প্রকাশ্য বিরোধীতায় মত্ত হয়ে উঠেছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দরা।

দলীয় সূত্রে জানাগেছে, একাদশ নির্বাচনে মনোনয়ন ইস্যুতে শুরু থেকেই নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনের দলীয় এমপি আলহাজ¦ নজরুল ইসলাম বাবুর প্রকাশ্য বিরোধীতায় জড়িয়ে পড়েছিলেন আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী কেন্দ্রীয় যুবলীগের তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল পারভজ।

তাঁর সাথে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত আড়াইহাজার পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের প্রচারনা নিয়ে বাঁধার অভিযোগ করে এমপি বাবুর সাথে জেলা আওয়ামীলীগের একাধিক শীর্ষ নেতাও বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। যা এখনো চলমান রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম বাবুর বদনাম করে বেড়াচ্ছে ইকবাল পারভেজ। তিনি তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ¦ সৃষ্টি করে দিচ্ছেন।
এখন নতুন করে বাকী থাকা নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের নৌকার এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের সাথে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই।

গত ১৫ অক্টোবর রূপগঞ্জের তারাব পৌরসভায় বিশ্বরোড বালুরমাঠে উপজেলা আওয়ামীলীগের আয়োজনে আলোচনা সভা ও গণসংযোগ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি গাজীর বিরোধীতা করে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেছেন, নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামীলীগকে বিজয়ী করে শীতলক্ষ্যার নদীর উপর নির্মিত সেতুটির নামকরণ ‘গাজী সেতু’ না করে ‘শেখ রাসেল সেতু’ করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিকট প্রস্তাব করা হবে।

এর আগে সম্প্রতি আরেকটি গণসংযোগে আব্দুল হাই এমপি গাজীকে রূপগঞ্জের বহিরাগত হিসেবে আখ্যায়িত করে একাদশ নির্বাচনে রূপগঞ্জের সন্তানকেই নৌকার প্রার্থী দেয়ার দাবী জানিয়েছিলেন।

আর নির্বাচনের আগে খোদ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতিই নৌকার এমপিদের প্রকাশ্য বিরোধীতায় জড়িয়ে পড়ায় সেই সুযোগে মনোনয়ন ইস্যুতে অন্যান্যরাও দলীয় এমপিদের বিরোধীতায় মত্ত হয়ে উঠেছেন। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও যুগ্নসাধারণ সম্পাদক যদি নৌকার এমপিদের বদনাম করে তাহলে সাধারণ জনগণ করবে না কেন? আর নারায়ণগঞ্জ জেলার নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবে কে? তবে সরেজমিনে দেখা গেছে গোলাম দস্তগীর গাজী এবং নজরুল ইসলাম বাবুর নামে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা এবং বানোয়াট। কিছু কিছু নেতা এমপির হওয়ার খায়েশে কোন্দল সৃষ্টি করছে যা আগামী নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের জয়ের ব্যাপারে বাধার সৃষ্টি হতে পারে।