আজ শুক্রবার, ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রবীর ঘোষ হত্যাকান্ড- শুধুই কি লেনদেন নাকি অন্য কারণ?

প্রবীর ঘোষ হত্যাকান্ড

প্রবীর ঘোষ হত্যাকান্ড

 

এ্যানি চন্দ্র:
নারায়ণগঞ্জ শহরের কালিরবাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর চন্দ্র ঘোষ হত্যাকান্ড শুধু মাত্র ব্যবসায়ীক লেনদেনের কারণেই ঘটেছে নাকি হত্যাকারীর অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল? হত্যাকান্ডে কি ধরনের অস্ত্র ব্যবহার হয়েছে, হত্যার ঘটনাস্থল কোথায়, কেন এই হত্যাকান্ড এবং আরও কারা জড়িত এমন নানা প্রশ্নের খোঁজে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এরই মধ্যে আটককৃত ঘাতক পিন্টু ও বাপনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। এদের কাছ থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী হত্যা রহস্য উম্মোচন করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জবাসীর সকলেরই জিজ্ঞাসা বন্ধু হয়ে বন্ধুকে এমন নৃসংশ ভাবে হত্যার পেছনে কি কারণ থাকতে পারে। কেনই বা প্রাণের প্রিয় বন্ধু হয়ে উঠলো প্রাণ সংহারি ঘাতক। যেই বন্ধুকে প্রবীর ঘোষ নিজ অর্থায়নে ভারতে নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছেন। বন্ধুর সুখে, দু:খে পাশে থেকেছেন। সেই বন্ধু কিভাবে এমন নির্মম নৃসংশভাবে আরেক বন্ধুকে হত্যা করতে পারে! ঘনিষ্ঠ বন্ধু পিন্টু দেবনাথের এই আচরনে বিস্মিত জেলাবাসী। কালিরবাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা এই ঘটনায় এতটায় আশ্চর্য হয়েছেন কিছুতেই তারা মিলাতে পারছেন কি হতে কি হয়ে গেল। কেনইবা বন্ধু হয়ে বন্ধুর সাথে এমন নির্মমতা। বাকরুদ্ধ, শোকে স্তব্ধ নিহতের স্বজনরা।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রবীর ঘোষের হত্যাকান্ড আর্থিক লেনদেনের কারণে হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তারা ধারনা করছেন। এবং ঘাতক তারই বন্ধু পিন্ট দেবনাথ ও পিন্টুর কর্মচারী বাপন ভৌমিক ওরফে বাবু। তারা দুইজন ৫ দিনের রিমান্ডে রয়েছে। জিজ্ঞাসবাদ চলছে ডিবি কার্যালয়ে। তাদের কাছ থেকে উদঘাটন করা হবে, হত্যাকান্ডে কি ধরনের অস্ত্র ব্যবহার হয়েছে, হত্যার ঘটনাস্থল কোথায়, কেন এই হত্যাকান্ড এবং আরও কারা জড়িত।
প্রসঙ্গত, ১৮ জুন আনুমানিক রাত সাড়ে ৯টার সময় একটি ফোন পেয়ে প্রবীর ঘোষ নিজ বাসস্থান থেকে বের হন। এরপর থেকে তাকে আর খুজে পাওয়া যায়নি। ১৯ জুন সকাল ১০টা থেকে তার ফোন বন্ধ পাওয়ায় প্রবীর ঘোষের বাবা ভোলানাথ ঘোষ নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় জিডি করেন। পরে মুক্তিপন দাবি করায় নারায়ণগঞ্জ মডেল থানায় অপহরণ মামলা হয়। ওই মামলার তদন্তভার জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে দেওয়া হয়। ডিবি পুলিশ প্রবীর ঘোষের মোবাইল ট্র্যাকিং করে প্রথমে প্রবীরের মোবাইলসহ বাপন ভৌমিককে আটক করে। পরে তার তথ্য মতে আটক করে পিন্টু দেবনাথকে। এক পর্যায়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাদের পর পিন্টুর দেয়া তথ্য মতে, সোমবার (৯ জুলাই) রাত ১১ টার দিকে শহরের আমলাপাড়া কেসিনাগ রোডের রাসেদুল ইসলাম ওরফে ঠান্ডু মিয়ার ৪তলা ভবনের সেফটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে তিনটি ব্যাগে ভর্তি প্রবীর ঘোষের ৫ টুকরো লাশ উদ্ধার করা হয়। কিন্তু পা দুটি পাওয়া যায়নি। পরে মঙ্গলবার (১০ জুলাই) রাতে ঠান্ডু মিয়ার বাড়ির দুই বাড়ি পর একটি ড্রেন থেকে প্রবীর ঘোষের পা দুটি উদ্ধার করে ডিবি। গ্রেপ্তারকৃত পিন্টু দেবনাথ (৪৭) কুমিল্লার মেঘনা থানার চন্দনপুর এলাকার মৃত সতীশ দেবনাথের ছেলে। নারায়ণগঞ্জ শহরের ১৫ আমলাপাড়া কেসি নাগ রোডের ঠান্ডা মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকে। আর বাপন ভৌমিক ওরফে বাবু (২৭) কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার ঠেটালিয়ার কুমদ ভৌমিকের ছেলে। সে কালিরবাজার কাজী ভবনে মা স্বর্ণ শিল্পালয়ে কাজ করে।

সর্বশেষ সংবাদ