সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
এতদিন নিয়মতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কথা বললেও হঠাৎ করেই সুর বদলে গেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের। দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার কারাবাস নিয়ে মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবেই কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি পালন করে আসছিলো বিএনপির নেতাকর্মীরা। হঠাৎ করেই তারা কঠোর হওয়ার হুঙ্কার ছাড়লেন।
গত৭ মে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার কারা মুক্তির দাবিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে শীর্ষ নেতাদের হুঙ্কার রাজপথ গরম করার আন্দোলনের। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে যদি তাদের দাবি আদায় না হয় তাহলে রক্তপাতের হুমকি দিয়েছেন জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা।
গত ৭ মে সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে সরকারের বিরুদ্ধে আঙ্গুল বাকা করার হুশিয়ারি দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা। তারা বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। নতুবা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে প্রয়োজনে সরকারের বিরুদ্ধে আঙ্গুল বাকা করবে বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা এও বলেছেন, কিভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হয় এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হয় তাও বিএনপি নেতাকর্মীরা জানেন।
অন্যদিকে, একই দিন মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এড. আবুল কালাম বলেন, জনগন জানে সরকারের প্রতিহিংসার শিকার হয়ে ৩ বারের প্রধানমন্ত্রী ও দেশের বৃহত্তম দল বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া আজ কারাগারে বন্দী।
কারণ তারা জনগণ থেকে বিছিন্ন হয়ে গেছে সুষ্ঠ নির্বাচন হলে তাদের অস্তিত্ব থাকবে না। এ দেশে বর্তমান বিচার ব্যবস্থায় স্বাধীনতা নাই, মানুষের ভোটাধিকার, মৌলিক চাহিদা ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে স্বাধীন জাতির অধিকার আদায়ে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছি। ঠিক সেই সময়ে নেত্রীর জন-সমর্থনে ইর্ষানিত হয়ে এই অবৈধ সরকার মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে। এখন তিনি গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে কারাগারে আছেন, আমরা সরকারের কাছে আহবান করবো তার জন্য সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হউক। সেই সাথে দেশে সুষ্ঠ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে তাকে মুক্তি দিতে হবে।
জেলা বিএনপির সহ সভাপতি এড. আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ওই সভায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, ‘সোজা আঙ্গুল ঘী না উঠলে আঙ্গুল বাকা করতে আমরা জানি। কি ভাবে আন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হয়, তা বিএনপি নেতাকর্মীরা জানে। যদি বিবেচনায় সরকারের নির্দেশে বেগম জিয়ার মুক্তি না হয়। তবে আমরা আরো তীব্র আন্দোলনে সোচ্চার হবো। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে যদি আমাদের দাবি আদায় না হয়, তবে রক্তপাতের মধ্য দিয়ে হলেও বেগম জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করে এ দেশের গনতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনবো।’
এড. আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস বলেন, ‘এ দেশে অতীতে অনে স্বৈরাচার এসেছে। শেখ মুজিবরের বাকসাল টিকতে পারে নাই, ৯ বছর অবৈধ শাষণের এরশাদ টিকতে পারে নাই। স্বৈরাচার শেখ হাসিনাও টিকতে পারবে না।’
জেলা বিএনপির সহ সভাপতি মনিরুল ইসলাম রবি বলেন, ‘কাউয়া কাদের চট্টগ্রামে গিয়ে তারেক জিয়া সম্পর্কে কত কথাই বলছেন। স্বাধিনতা যুদ্ধে কলকাতা গিয়ে ছাই পাস খাইছেন। সবই আমাদের জানা আছে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও তিন বারের প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক জিয়া এদেশে আসবেন না তো আপনারা আসবেন। তারেকের আশ্রয় এদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তবে পরিস্থিতি যাই হোক, বিএনপি নেতাদের এমন গরম বক্তব্যে রাজপথ গরম করার ইঙ্গিত থাকলেও তারা কতটা সফল হবে সেটা সময়ই বলে দিবে। তবে সাধারন মানুষ জ্বালাও পোড়াও পরিহার করে সকল দলের সহাবস্থানের রাজনীতিতে দেখতে চায়।