আজ শনিবার, ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

যুবলীগ নেতার তান্ডব সোনারগাঁয়ে বিদ্যালয় মাঠে গরুর হাট

মাজহারুল ইসলাম (সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ): শিশুর শিক্ষার প্রথম শর্ত আনন্দঘন পরিবেশ। কিন্তু যুবলীগের কতিপয় অসাধু নেতা শিক্ষা ব্যবস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গূলী দেখিয়ে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার বৈদ্যের বাজার ইউনিয়নের ১১২ নং দামোদরদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে দীর্ঘদিন যাবত প্রতি শনিবার ক্লাস চলাকালীন গরুর হাট বসিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের চাঁদা। এতে শঙ্কিত কোমলমতি শিক্ষার্থীরা, ভয় ও আতঙ্কে থাকার কারনে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষকদের পাঠদান, বিঘ্নিত হচ্ছে শিশুদের শিক্ষার পরিবেশ।

১৯ আগস্ট শনিবার সকাল এগারোটায় সরেজিমনে বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রধান ফটক থেকে শুরু করে মুল ভবনের বারান্দা পর্যন্ত হাটের বিস্তার। বিক্রির জন্য মাঠজুড়ে দাঁড় করিয়ে রেখেছে শতাধিক গরু। এসব গরুর মলমূত্র ও বর্জ্য বিদ্যালয় মাঠে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। চারিদিকে দূর্গন্ধ। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ভয়ে মাঠে বেরুতে পারছে না। মাঠে চেয়ার টেবিল পেতে যুবলীগের লোকজন টোল আদায় করছেন। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, শহীদুল্লাহ মেম্বারের ছেলে যুবলীগ নেতা নবী হোসেন, আয়ুব আলী মেম্বারের ছেলে সিরাজুল ইসলাম, বাছেদ মেম্বারের ছেলে আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে বসে গরুর হাট। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোমেন খন্দকার জানান, বার বার বারন করা সত্ত্বেও জোড় করে হাট বসাচ্ছে। আমরা ইউএনও এবং শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি জানিয়েছি, তবু হাটটি বন্ধ হচ্ছে না।

এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, মোগরাপাড়া-বারদী সড়কের আনন্দবাজার হাট সংলগ্ন স্থানে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। নানা সমস্যায় জর্জড়িত বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ ও ২৭৫ জন। বিদ্যালয় ভবনটির নানা স্থান থেকে প্রতিদিনই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাথার উপর খসে পড়ছে পলেস্তরা। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য নেই কোন শৌচাগার। ইলেকট্রিক পাখা না থাকায় প্রচন্ড গরম সহ্য করতে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেরিনা ইসলাম ও রওশন-আরা জানান, দখলদারদের কাছে আমরা অসহায়। তাদের বাঁধা দিলে বলে, ইউএনও স্যারের অনুমতি নিয়েই আমরা হাট বসিয়েছি। গরুর হাট বসার কারনে শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ রক্ষাসহ লেখাপড়ায় বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়াও ৫ জন শিক্ষকের স্থানে শিক্ষক মাত্র তিনজন, চেয়ার টেবিল কম, নেই কোন টয়লেট। বিদ্যালয়ের নিজস্ব ফান্ডে কোন অর্থ না থাকায় আমরা নিজের টাকায় একটি টয়লেট তৈরি করলেও পরে তা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। এ ব্যাপারে নবী হোসেন জানান, ‘স্কুল মাঠের গরুর হাটের সাথে আমি জড়িত না।’

উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম আমাদের আলোকিত সময়কে জানান, বিষয়টি আমাদের অজান্তে হয়েছে, আমরা শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে স্কুল মাঠে হাট বন্ধসহ সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করবো।