আজ রবিবার, ১৭ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

না.গঞ্জ আ.লীগ কি পারবে আগের মত রাজপথ কাপাতে

সংবাদচর্চা রিপোর্টঃ

আওয়ামীলীগের জন্য নারায়ণগঞ্জ একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা। এখান থেকে আওয়ামীলীগের জন্ম হয়েছে। দেশের যে কোন আন্দোলন সংগ্রামের ক্ষেত্রে সর্বপরি নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ অনন্য ভূমিকা পালন করেছে বিগত সময়ে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের নেতাদের মাঠে তেমন দেখা যায় না। তারা কমিটি গঠন করছে না। তাতে আওয়ামীলীগ বিএনপির চেয়ে দূর্ব হয়ে পড়ছে। এদিকে বিএনপি নতুন কমিটি দিয়ে দলকে সংগঠিত করার চেষ্টা করছে।

গত ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয় লাভ করার পর থেকে অদ্যবধি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে। টানা সরকার পরিচালনা করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাত ধরে বদলে যেতে শুরু করেছে বাংলাদেশ, বদলে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ। এই বদলে যাওয়ার মধ্যেও বদলে যাচ্ছে রাজনীতির মাঠ ময়দান। নারায়ণগঞ্জের বিরোধী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্তদের অভিযোগ বিরোধী পক্ষকে দমিয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন কৌশল উদ্ভাবন করছে ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগ। তবে নারায়ণগঞ্জের একাধিক প্রবীন রাজনীতিবিদদের মতে এই বদলে যাওয়ার মধ্যেও অনেক কিছুরই পরিবর্তন ঘটছে। বিগত সময় ভিন্ন মত থাকলেও কেন্দ্রের নির্দেশনাকে কখনোই কোন রাজনৈতিক দল অপেক্ষা করতো না, কিন্তু এখন আর সেই প্রেক্ষপট নেই। প্রবীনদের মতে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতির প্রেক্ষাপট এখন আর আগের মতো নেই। ব্যক্তি কেন্দ্রিক রাজনীতির কাছে হার মেনেছে মানুষের জন্য করা রাজনীতি। এখন সর্বক্ষেত্রেই দেখা যায় মত পার্থক্য। এই মত পার্থক্য আগেও ছিল তবে সেই সময় ঐক্যবদ্ধও ছিল কিন্তু এখন যেমন মত পার্থক্য দেখা দিয়েছে ঠিক প্রকাশ্যে চলে আসছে বিরোধীতার বিষয়গুলো।

বিশ্লেষকদের মতে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দরা ত্রিমুখী ভূমিকা পালন করছেন। একটি পক্ষ সর্বপরি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান কেন্দ্রিক রাজনীতি করছে, ২য় পক্ষ সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর বলয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে আর তৃতীয় পক্ষটি সকল বিতর্কের উর্ধ্বে থেকে স্বাভাবিক নিয়মে পদ পদবী আকরে ধরে সময়ের কালক্ষেপন করছেন। বিশ্লেষকরা আশংকা প্রকাশ করে বলেন, কোন রাজনৈতিক দল আজীবন ক্ষমতা ধরে রাখতে পারে না ঠিক তেমনি করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগও যুগ যুগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকবে না। যখন দলটি রাষ্ট্র ক্ষমতার বাহিরে চলে যাবে তখন আন্দোলন সংগ্রাম করেই পুনরায় ক্ষমতায় আসতে হবে। কিন্তু বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের যে ভঙ্গুর অবস্থা তাতে এই জেলার নেতৃবৃন্দরা সেই সময় রাজপথ দখলে নিবে কিভাবে? আন্দোলন সংগ্রামে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের যে ঐতিহ্য রয়েছে সেই ঐতিহ্যই বা কিভাবে ধরে রাখবে। কেননা রাজপথ কিংবা আন্দোলন সংগ্রাম করতে হলে মত প্রার্থক্য, ব্যক্তি কোন্দল, রেশারেশি ভুলে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ কী ঐক্যবদ্ধ?

বিগত কয়েক দিনে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ সহ এর অঙ্গসংগঠনের কংকাল বেরিয়ে আসছে! নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে জেলা পুলিশের সন্ত্রাস, ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ ও মাদকের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযানের প্রেক্ষিতে যে সকল আসামীদের আটক কিংবা বিভিন্ন অপকর্মের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ পাচ্ছে তাতে চলে আসছে ক্ষমতাসীন দলের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের নাম। যার অধিকাংশই নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বলয়ের লোকজনই। অপর দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ২য় পক্ষ যেটি সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর বলয়ে রাজনীতি করছে সেই পক্ষটি শামীম ওসমান বলয়ের নেতাকর্মীদের নাম প্রকাশ্যে চলে আসার পর বিদ্রুপ করছে এবং এর পক্ষে বিপক্ষে জন¯্রােত তৈরী করার চেষ্টা করছে। এতে করে জনসম্মুখে চলে আসছে তাঁদের অভ্যন্তরিন কোন্দল সমূহ। কোন্দলের বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসার পর থেকেই নারায়ণগঞ্জের প্রবীন রাজনীতিবিদদের কপালে চিন্তার ভাজ পরেছে। প্রবীনদের মতে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতার বাহিরে থাকবে সেই এই নারায়ণগঞ্জ কি পারবে আগের মতো রাজপথ কাপাতে?

স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রথম আওয়ামী লীগের পূর্ণ মন্ত্রী হয়েছে নারায়ণগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। তিনি নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগ কে সুসংগঠিত করতে কাজ করে যাচ্ছেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগে গোলাম দস্তগীর গাজীর বিরাট প্রভাব রয়েছে।