আজ শনিবার, ২৫শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

৪ জনের মৃত্যুতেও আপোষের চেষ্টা ‘ওরা মেহনতি মানুষ না’

নিজস্ব প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় দেয়াল ধসে একই পরিবারের তিন বোন সহ চারজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর পর অনেকেই ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেন সান্তনা দিয়েছেন। গণমাধ্যমে তাদের নামও বেশ ফলাও করে ছাপা হয়েছে। কিন্তু ৪জনের মর্মান্তি মৃত্যুর চেয়েও বড় বেদনায়দায়ক ঘটনা গেছে দাফন নিয়ে। এদিকে ৪জনের মৃত্যুর ঘটনার মামলার পর সেটা আপোষের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে।

নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের ৩জন ছিলেন। তাদের গ্রামে বাড়ি ছিল পটুয়াখালীতে। পাগলায় বস্তিতে বসবাস করতো নিহতরা। বাবা মা স্বল্প আয়ের মানুষ। মৃত্যুর পর লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাবেন সে টাকাটাও যোগাড় করতে পারছিল না। কিন্তু কেউ তাদের পক্ষে দাঁড়ায়নি।

অথচ অনেকেই মেহনতি মানুষের পক্ষে স্লোগান দেন। কিন্তু এ নিহত পরিবারের পাশে কাউকেই দেখা যায়নি। কারণ তারা কোন চাঁদা দিতে পারে না। তারা কোন সংগঠনের অধিভুক্ত না।

বুধবার (২৫ অক্টোবর) রাতে ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) দিদারুল আলম বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়। তবে নিহতদের পরিবারের পক্ষ হতে মামলা দায়ের না করায় পুলিশ মামলাটি দায়ের করে।

মামলায় আসামী করা হয়, ফতুল্লা দেলপাড়ার বাসিন্দা জমির মালিক চাঁন মিয়া, ঠিকাদার ইসমাইল ও হাজী আব্দুল মালেক, রফিক।

এর আগে দেয়াল চাপায় তিন শিশুসহ চারজন মারা যাওয়ার ঘটনায় লাশগুলো গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ির ভাড়ার খরচ যোগাতে পারছিল না তখনই ফতুল্লা মডেল থানার ওসি কামালউদ্দিন নিজ উদ্যোগে নিয়ে কফিনের খরচ সহ সার্বিক খরচ দিয়ে লাশ নিহতদের গ্রামের বাড়িতে পাঠানো ব্যবস্থা করে কাজটি করেন।

প্রসঙ্গত ২৩ অক্টোবর বেলা ১১টায় ফতুল্লার পাগলা শান্তি নিবাস এলাকা সংলগ্ন চাঁন মিয়ার মালিকানাধীন পুরানো একটি ভবন ভাঙ্গার কাজ করার সময় দেয়াল ধসে একই পরিবারের তিন বোনসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

নিহতরা হলো পটুয়াখালী গলাচিপার চিঙ্গুরার ট্রাক হেলপাড় সাইফুল ইসলামের তিন মেয়ে লামিয়া (১২), লাবনী (৮) ও লিমা (৩)। তারা পাগলা শান্তি নিবাস এলাকা সংলগ্ন জসিম উদ্দিনের কলোনীতে বসবাস করে। আর শরিয়তপুরে আব্দুর রশিদ খা’র ছেলে আলমগীর (২৫)। আহত হয়েছে শাহআলম। তারা পাগলা একই কলোনীতে বসবাস করে।

এদিকে এলাকাতে গুঞ্জন রয়েছে প্রভাবশালীরা এ মামলায় আপোষের চেষ্টা করছে। শুরু থেকেই নিহতের পরিবারকে মামলা না করতে চাপ সৃষ্টি করে। তাদেরকে চাঁন মিয়ার সাথে আপোষ করার চেষ্টা করেছে। যার কারনে ভয়ে নিহতের পরিবার চাঁন মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করতে অনিহা প্রকাশ করেন। তার জন্য পুলিশ বাধ্য হয়ে মামলা দায়ের করেন। এমনকি পুলিশের খরচে নিহতদের লাশ কফিনে ভরে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন।