নবকুমার: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হিমেল হাওয়া বইছে রূপগঞ্জে। নির্বাচনে অংশ নিতে নারায়ণগঞ্জ ১ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে ক্ষমতান আওয়ামীলীগ ও বিএনপি। আওয়ামী লীগের প্রার্থী নারায়ণগঞ্জ ১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। তিনি ২০০৮ ও ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক হ্যাট্রিকের অপেক্ষায় রয়েছে।
জানা গেছে ২০০৮ সালে গোলাম দস্তগীর গাজী এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে রূপগঞ্জে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। তার পদচারণায় পাল্টে গেছে রূপগঞ্জের উন্নয়ন চিত্র।
গোলাম দস্তগীর গাজীর স্ত্রী হাছিনা গাজী তারাব পৌর সভার মেয়র । তিনি পৌর এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। হাছিনা গাজী রূপগঞ্জ উপজেলা মহিলা লীগের সভাপতি । হাছিনা গাজীর নেতৃত্বে রূপগঞ্জে নারী নেতৃত্বে বিপ্লব ঘটেছে। গোলাম দস্তগীর গাজীর সাথে নারী বিশাল একটি অংশ রয়েছে। গোলাম দস্তগীর গাজীর নেতৃত্বে রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। এখানে কোন গ্রুপিং নেই। নির্বাচনে জয় পেতে গোলাম দস্তগীর গাজীর সমর্থকরা মাঠ চষে বেড়াচ্ছে।
এদিকে গতকাল নানা জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নারায়ণগঞ্জ ১ আসনে জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামানকে বিএনপির চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। রূপগঞ্জে বিএনপির তিন জন মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলো। অপর দু জন হলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এড. তৈমূর আলম খন্দকার, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূইয়া।
কাজী মনিরুজ্জামান ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজীর কাছে প্রায় ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরে যান। এবারের নির্বাচনে বিএনপি আসন উদ্ধারের জন্য সেই কাজী মনিরুজ্জামানকেই বেছে নিয়েছেন। কাজী মনিরুজ্জামানের তৃণমূল বিএনপির কাছে রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা।
তবে কাজী মনিরুজ্জামানের নামে রয়েছে ৮০ টি মামলা। তার মধ্যে ৬৪ টি মামলা শ্রমিক সম্পর্কিত। তার নামে রয়েছে শ্রমিকদের হয়রানীর অভিযোগ। রূপগঞ্জে ব্যাপক শ্রমিকদের ভোট রয়েছে।এখানে যে দলের প্রার্থী শ্রমিকদের আস্থা অর্জন করতে পারবে সেই দলের প্রার্থী নির্বাচনে বিজয়ী হবে। জানা গেছে গোলাম দস্তগীর গাজীর নামে কোন শ্রমিক হয়রানীর অভিযোগ নেই।
ভোটের হিসেবে দেখা গেছে বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রূপগঞ্জে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছে।
এবারের নির্বাচনে রূপগঞ্জে মোট ভোটার প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ। তার মধ্যে তারাব পৌর সভায় রয়েছে ৮১ হাজার ভোট। কাজী মনির এবং গোলাম দস্তগীর গাজীর বাড়ি তারাব পৌর সভায়। তারাব পৌরভার মেয়র হাছিনা গাজী । যিনি গোলাম দস্তগীর গাজীর স্ত্রী। এখানে ভোটের দিক দিয়ে কাজী মনিরুজ্জামানের চেয়ে গোলাম দস্তগীর গাজী চালকের আসনে রয়েছে। রূপগঞ্জে মাঠ দখলে রেখেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। বিএনপির কর্মীদের মাঠে তেমন দেখা যাচ্ছে না।
পারিবারিক দিক দিয়ে রাজনীতিতে কাজী মনিরুজ্জামানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে গোলাম দস্তগীর গাজীর পরিবার। এখন পর্যন্ত কাজী মনিরুজ্জামানের পরিবারের কোন সদস্যকে ভোটের মাঠে দেখা যায় নাই। তবে সময় হলে তারা হয়ত নামবে। এদিকে গোলাম দস্তগীর গাজীর ছেলে গোলাম মর্তুজা পাপ্পা ভোটের মাঠে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছে। তিনি তরুণ ভোটারদের নৌকায় ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করছেন।
রূপগঞ্জে ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা বিএনপি সমথিত প্রার্থী কাজী মনিরুজ্জামানের প্রচারণায় দেখা যাচ্ছে না। ছাত্রলীগ যুবলীগ মহিলা লীগ স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকর্মীরা আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজীর পক্ষে কাজ করছে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত রূপগঞ্জে আওয়ামীলীগের প্রার্থী চালকের আসনে রয়েছে। কাজী মনিরুজ্জামান আসন পুন উদ্ধারে সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নামবে।
কাজী মনির দলীয় কোন্দল মিটিয়ে বিএনপির সব নেতাকর্মীদের ভোটের মাঠে নামাতে পারলে এখানে গোলাম দস্তগীর গাজীর সাথে তার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। তবে রাজনীতি শেষ বলে কোন কথা নেই জনগণ যাকে ভোট দেবে সেই জিতবে।