সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ মেলার উদ্বোধন করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কে এম খালিদ বলেছেন, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প যাদুঘরকে আর্ন্তজাতিক মানের প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হবে। জাতির জনক ইতিহাস ঐতিহ্য ধরে রাখা, সংরক্ষনের জন্যই শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের হাত ধরে লোককারুশিল্প ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। ইতিমধ্যে সোনারগাঁ অঞ্চলকে বিশ্ব কারুশিল্প শহর হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, জয়নুল আবেদীনকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য ময়মনসিংহ জয়নুল সংগ্রহ শালায় ২৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক আহমেদ উল্লাহ সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন, স্থানীয় সাংসদ লিয়াত হোসেন খোকা, নেত্রকোনা-৩ আসনের সাংসদ ও আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসিম কুমার উকিল, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব আবু হেনা মোস্তফা কামাল, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন, পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুর রহমান খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম প্রমূখ।
এবারের মেলায়, বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চল থেকে ৬৪ জন কারুশিল্পী প্রদর্শনীতে অংশ নেবেন। কারুশিল্পীদের জন্য ৩২টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী কারুপন্য নওগাঁ ও মাগুরার শোলা শিল্প, রাজশাহীর শখের হাড়ি, চট্টগ্রামের তালপাখা ও নকশি পাখা, রংপুরের শতরঞ্জি, সোনারগাঁয়ের হাতি, ঘোড়া, পুতুল ও কাঠের কারুশিল্প, নকশিকাঁথা, বেত ও বাঁশের কারুশিল্প, নকশি হাতপাখা, সিলেট ও মুন্সিগঞ্জের শীতল পাটি, কুমিল্লার তামা-কাঁসা পিতলের কারুশিল্প, রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলার ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারু পণ্য, কিশোরগঞ্জের টেরা কোটা শিল্পসহ বিভিন্ন কারুপন্য প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এছাড়া প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত লোক মঞ্চে বাউলগান, পালাগান, কবিগান, ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ালী গান, জারি-সারি ও হাছন রাজার গান, লালন সংগীত, মাইজভান্ডারী গান, মুর্শিদী গান, গাঁয়ে হলুদের গান, বান্দরবান, বিরিশিরি, কমলগঞ্জের-মণিপুরী ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শরিয়তী-মারফতি গান, ছড়া পাঠের আসর, পুঁথি পাঠ, গ্রামীণ খেলা, লাঠি খেলা, দোকা খেলা, ঘুড়ি ওড়ানো, লোকজ জীবন প্রদর্শনী, লোকজ গল্প বলা, পিঠা প্রদর্শনী ইত্যাদি থাকবে। মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে।