আজ সোমবার, ২৬শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সোনারগাঁয়ে আলোর ঝলকানি

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

নতুন আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছেন সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তাদের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের কণ্ঠে উচ্চারিত হওয়ার পর থেকেই নতুন করে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন তাঁরা। স্থানীয় আওয়ামী একাধিক শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থী থাকায় এতে যোগ হচ্ছে বাড়তি রসদ। সবমিলিয়ে নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্রের কাছে নিজেদের দাবির কথা আটঘাট বেঁধেই জানাচ্ছেন তারা।
একাধিক সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ উপজেলা) আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয় সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত মোবারক হোসেন এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত আবুল হাসনাতের ছোট ভাই
মোশারফ হোসেনকে। কিন্তু পরবর্তীতে আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ওই মনোনয়ন তুলে দেওয়া হয় জাপা নেতা লিয়াকত হোসেন খোকাকে। সেই থেকেই খোকার বৃত্তে বন্দি সোনারগাঁ আওয়ামী লীগ। ১৮’ সালের নির্বাচনেও খোকাকে নানা নাটকীয়তা শেষে মহাজোটের মনোনয়ন তুলে দেওয়া হলে মনঃক্ষুণ্ণ হয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ।
এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সন্নিকটে। নৌকার দাবিতে সোনারগাঁয়ের নেতাকর্মীদের এবার আরো বেশি একাট্টা দেখা যাচ্ছে। এমনকি দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে অতি সম্প্রতি নৌকার দাবি উত্থাপন করেছেন সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এড. শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া। বিষয়টির সত্যতা দৈনিক সংবাদ চর্চাকে নিশ্চিত করেছেন শামসুল ইসলাম নিজেই। এর আগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর কাঁচপুরে এক সমাবেশে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক নারায়ণগঞ্জের জাপার দুই এমপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘এই অঞ্চলে জাপার এমপিরা আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছেন। এটা তো জাতীয় পার্টির সিট নয়। জাপার ভাইয়েরা বড় বড় কথা বলেন। অন্যভাবে নির্বাচন করে দেখেন কয়টা সিট পান।
‘নানকের সাথে কণ্ঠ মেলান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাইসহ বেশ ক’জন বক্তা, নতুন করে আশার সঞ্চার হয় নারায়ণগঞ্জ-৫ ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে। অন্যদিকে নানক ওই বক্তব্যে কারো নামোল্লেখ না করলেও তা ঠিকই গায়ে মেখেছেন জাপার দুই সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান ও লিয়াকত হোসেন খোকা। সেলিম ওসমানের দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ার বিষয়টি তার সাম্প্রতিক বক্তব্যগুলোতেই স্পষ্ট বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। এর আগে ‘একজন চাইলেও নির্বাচন করবো,’ বা ‘মান-সম্মান চলে গেলেও নির্বাচন থেকে পিছপা হবো না’- এমন বক্তব্য দিলেও নানকের ওই তীরের পরে যেন কিছুটা ভিমড়িই খেয়েছেন তিনি। জানাচ্ছেন, ‘জনগণ না চাইলে এবার আর নির্বাচন করবেন না তিনি। নানকের চোখ রাঙানির ব্যাপারে ব্যক্তিগত বা দলীয় কোনো প্রতিবাদ না জানিয়ে ওই দুই সংসদ সদস্য কার্যত নানকের বক্তব্যেরই সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন বলে বোদ্ধামহলের ধারণা।
সবমিলিয়ে অবস্থা এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, বেশ ক’জন প্রার্থীর মধ্যে কেন্দ্র আওয়ামী লীগ যাকেই বেছে নিবে, তার পক্ষেই কাজ করার কথা নেতারা সাফ জানিয়ে দিচ্ছেন বারবার। এতে করে বলা চলে, দুইবার ছাড় দিলেও এবার আর কোনোভাবেই আসনটি হাতছাড়া করতে রাজি নয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ। সেজন্য যতভাবে দাবি উত্থাপন করা যায়, তা করে এখন কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের দিকেই তাকিয়ে আছেন তাঁরা।