অনলাইন জুয়া ও ক্যাসিনো ব্যবসার মূলহোতা সেলিম প্রধানের রাজধানীর বনানীর আরেক বাসায় অভিযান করে নগদ ২৯ লাখ টাকা, ৮ কোটি টাকার চেক, ২৩ দেশের ৭৭ লাখ বৈদেশিক মুদ্রা এবং বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ জব্দ করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুরে বনানীর ২ নম্বর সড়কের ২২ নম্বর বাসায় র্যাবের এ অভিযান শুরু হয়।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক সারোয়ার বিন কাসেম বলেন, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ওই বাসায় অভিযানে যাওয়া হয়। এ ছাড়া রাজধানীর গুলশান-২ এলাকায় সেলিম প্রধানের অফিস কাম বাসায় অভিযান চালানো হয়।
সেলিম প্রধান কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিরাপত্তাকর্মী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার সহযোগী। বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করা লোকমান ১০ বছর দাপটের সঙ্গে মোহামেডানকে শেষ করে বাণিজ্য করেছেন রমরমা। লোকমানের ক্যাশিয়ার হলেন ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সহসভাপতি সেলিম প্রধান।
গতকাল সোমবার বিকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট থেকে সেলিম প্রধানকে র্যাব গ্রেফতার করে। তিনি ব্যাংককে পালিয়ে যেতে থাই এয়ারওয়েজের ঐ ফ্লাইটের যাত্রী ছিলেন।
সেলিম প্রধান ‘প্রধান গ্রুপ’ নামে একটি ব্যবসায়ী গ্রুপের চেয়ারম্যান। এই গ্রুপের অধীনে পি২৪ গেইমিং নামের একটি কোম্পানি আছে, যাদের ওয়েবসাইটেই ক্যাসিনো ও অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসার তথ্য রয়েছে। প্রধান গ্রুপের কোম্পানি জাপান বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড পেপার্সের নাম রয়েছে ঢাকা চেম্বারের সদস্যদের তালিকায়। সেলিম প্রধানের অফিসের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে গুলশানে। সেখানেই পি২৪ গেইমিংয়ের অফিস। আর ফেসবুক পেইজে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সেলিম থাকেন থাইল্যান্ডে।
গোয়েন্দারা খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, সেলিম প্রধান তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। তার মাধ্যমে তারেক রহমানের কাছে প্রতি মাসে কয়েক কোটি টাকা পাঠানো হয়। একসময় হাওয়া ভবনে যাতায়াতের মাধ্যমে তারেক রহমানের সঙ্গে সেলিম প্রধানের ঘনিষ্ঠতা হয়। (সুত্র ইত্তেফাক)
সেলিম প্রধানের ব্যাংককে নিজের বাড়ি, পাতায়ায় বিলাসবহুল হোটেল, ডিসকো বারসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তার বাড়ি রূপগঞ্জের মর্তুজাবাদ এলাকায় । সে হান্নান প্রধানের ছেলে। তার পরিবারের সবাই বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত।
এদিকে জিজ্ঞাসাবাদে লোকমান ক্যাসিনো ঘিরে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য ও বিদেশে অর্থ পাচারসহ জড়িত অনেকের নাম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে প্রকাশ করেছেন। তার দেওয়া তথ্য থেকেই বেরিয়ে আসে সেলিম প্রধানের নাম। ঢাকার ক্যাসিনোর টাকা থাইল্যান্ডের বিভিন্ন জায়গায় বিনিয়োগ করেছেন তিনি।
এছাড়া সেলিমকে গ্রেফতারের পর রাতে গুলশান ২ নম্বরে তার স্পা’য় অভিযান শুরু করে র্যাব-১। র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তারা জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে গুলশান ২ নম্বরের ৯৯ নম্বর সড়কে ১১/এ নম্বর ‘মমতাজ ভিশনে’ সেলিম প্রধানের একটি ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানে অভিযান শুরু করে। এখনো অভিযান চলছে।
এদিকে গণমাধ্যমে একাধিক বিদেশী তরুণীর সাথে ছবি ভাইরাল হয়েছে সেলিম প্রধানের। তাতে অনলাইন জগতে সমালোচনার ঝড় বইছে। প্রভাব পড়ে নারায়ণগঞ্জের বিএনপির রাজনীতিতে।